ঘরে-ফেরা: সাগরে আটকে থাকার পর যাত্রীদের নিয়ে হলদিয়ায় ফিরছে লঞ্চ। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
শীতের কামড় কমেছে। কিন্তু এখনও মাঝেমধ্যে সকাল ঢাকছে কুয়াশার চাদরে। ওই কুয়াশাতেই শুক্রবার পথ হারাল লঞ্চ।
এ দিন হলদিয়া–নন্দীগ্রাম রুটের একটি ফেরি ঘন কুয়াশায় দিকভ্রষ্ট হয়ে প্রায় ১০ কিমি দূরে সাগরের দিকে চলে যায়। লঞ্চটি নন্দীগ্রামের কেন্দেমারি থেকে হলদিয়া আসার জন্য ছেড়েছিল। কিন্তু মাঝ নদীতে আসার পরে কুয়াশার কারণে চালক আর কিছু দেখতে পাননি। ওই চ্যানেলে হলদিয়া বন্দরের মোহনার কাছে একাধিক জাহাজ চলাচল করে। তাছাড়া, ওই পথেই তটরক্ষী বাহিনীর হোভারক্রাফট, টহলদারি জাহাজও যাতায়াত করে। তাই চালক মাঝ নদীতে যাত্রী-সহ লঞ্চ না দাঁড় করিয়ে একটি কিনারার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এতেই বিপত্তি। যে নদী মার হতে মেরেকেটে ১৫-২০ মিনিট সময় লাগে, সেখানে এ দিন যাত্রীরা দেখেন, তাঁরা ঘণ্টা দুই পরেও পাড়ে পৌঁছননি। এর পরেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা।
ওই লঞ্চে হলদিয়ার ভবানীপুর থানার সিভিক-সহ কারাখানার কর্মী ও আনাজ-মাছ ব্যবসায়ীরা ছিলেন। এরকম পরিস্থিতিতে যাত্রীদের অনেকই কান্নাকাটি করতে শুরু করেন। কেই কেউ ফোনে যোগাযোগ করেন হলদিয়া মহকুমা পুলিশের সঙ্গে। পরে বন্দর কর্মীদের পরামর্শে সাগরের কাছে একটি ‘বয়ায়’ লঞ্চটিকে বেঁধে রাখা হয়। কুয়াশা কেটে সূর্যের আলো ফুটলে হলদিয়া প্রান্তে নিয়ে আসা হয় লঞ্চটিকে।
ওই লঞ্চের যাত্রী কানাই দাস বলেন, ‘‘খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। বড় জাহাজ ধাক্কা মারলে কী হত!’’ ফেরি চলাচলকারী সংস্থার পক্ষে অজয় মাইতি বলেন, ‘‘ঘন কুয়াশার কারণে এমন হয়েছে। কোনও দুর্ঘটনা হয়নি এটাই যা রক্ষা।’’ লঞ্চের চালকদের পক্ষে জানানো হয়, তাঁরা কিছুই দেখতে পাচ্ছিলেন না। জিপিএসে-ও দিক বোঝা যাচ্ছিল না। তাই তাঁরা প্রায় ১০ কিমি দূরে লঞ্চ নোঙর করেন।
অন্যদিকে, এ দিন আরও একটি লঞ্চ একই ভাবে নন্দীগ্রাম প্রান্ত থেকে প্রায় ৩০০ যাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময় মাঝ নদীতে আটকে যায়। দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকার পর জল বাড়লে লঞ্চটি হলদিয়ায় আসে। কুকড়াহাটিতেও কুয়াশায় বিপত্তি ঘটে ফেরি চলাচলে। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কোনও ফেরি চলেনি।
শুধু তাই নয়, এ দিন চড়ার কারণেও একটি ভেসেল রায়চক থেকে কুঁকড়াহাটি প্রান্তে নদীর পাড়ে আটকে পড়ে। সেই ভেসেলেও যাত্রী ছিল। অন্য একটি লঞ্চ দিয়ে সেটিকে পাড়ে আনা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy