Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Cyclone

কটালের সতকর্তায় মাইকে প্রচার

ঘূর্ণিঝড়ের কোনও সতর্কতা দেয়নি আবহাওয়া দফতর। যদিও অমাবস্যার ভরা কটালে জলোচ্ছাসের সম্ভবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক ও হলদিয়া শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২১ ০৫:৪০
Share: Save:

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার ভরা কটালের জলোচ্ছাসের পর দু’সপ্তাহ কেটেছে। ফের বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের জেরে বৃহস্পতিবার থেকে উপকূলবর্তী পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বজ্রপাত সহ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বৃহস্পতিবার থেকেই অমাবস্যার ভরা কটালের জোয়ার শুরু হয়েছে। ফের জলোচ্ছাসে ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন জেলার সমুদ্র উপকূল এবং নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। এ দিন সকাল থেকে জেলার সমুদ্রবাঁধ ও নদীবাঁধ সংলগ্ন এলাকায় বাসিন্দাদের সতর্ক করতে প্রশাসনের তরফে মাইক প্রচার করা হয়ে‌ছে। প্রয়োজনে ঘর ছেড়ে ত্রাণশিবিরে চলে যেতে বলা হয়েছে।

তবে ঘূর্ণিঝড়ের কোনও সতর্কতা দেয়নি আবহাওয়া দফতর। যদিও অমাবস্যার ভরা কটালে জলোচ্ছাসের সম্ভবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তাই ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত সমুদ্রবাঁধ ও রূপনারায়ণ, হুগলি, হলদি নদীর বাঁধ মেরামতির পাশাপাশি বৃহস্পতিবার থেকে ওই সব বাঁধে নজরদারি শুরু করেছে সেচ দফতর। কৃষি দফতরের তরফে উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে, ইয়াসের জেরে নোনাজল ঢুকে যাওয়া যে সব জমি থেকে নোনাজল বের করা হয়েছে, সেখানে ফের যাতে নোনাজল না ঢোকে তা নজর রাখতে।

এ দিন দেখা গেল নন্দীগ্রামের ভেকুটিয়া পঞ্চমখন্ড জলপাই, সোনচুড়ায় জোরকদমে নদীবাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। নিজেই এলাকায় ঘুরছেন নন্দীগ্রাম-১ এর বিডিও সুমিতা সেনগুপ্ত। ইয়াসের জলোচ্ছ্বাসে নন্দীগ্রামের ভেকুটিয়া, সোনাচূড়া, কালিচরণপুর, ও কেন্দেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। এবারও প্রশাসনের তরফে ওই চার গ্রাম পঞ্চায়েতে ত্রাণশিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিডিও বলেন, ‘‘ ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে হলদি নদীর ওপর যেখানে যেখানে বাঁধে ক্ষতি হয়েছে। সেইসব জায়গায় মেরামতের কাজ করা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, ব্লক প্রশাসনের তরফে বুধবার রাত থেকেই নদী তীরের গ্রামবাসীদের ত্রাণশিবির চলে যাওয়ার জন্য মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছে। মহিষাদল ব্লক প্রশাসনের তরফে মায়াচরের বাসিন্দাদের সতর্ক করে মাইক প্রচার করে মায়াচর হাইস্কুলের ত্রাণ শিবিরে উঠে যেতে বলা হয়েছে। তমলুক পুরসভার তরফে মাইক প্রচার করে নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের জোয়ারের সময় নদীবাঁধের দিকে যাতায়াতে নিষেধ করা হয়েছে। সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

জেলা সেচ ও কৃষি দফতর সূত্রের খবর, ইয়াসে উপকূলবর্তী সমুদ্রবাঁধ ও রূপনারায়ণ তীরবর্তী মায়াচর, অমৃতবেড়িয়া, তমলুক শহরের উত্তর ও দক্ষিণচড়া শঙ্করআড়ায়, আবাসবাড়ি চর, শহিদ মাতঙ্গিনী সোয়াদিঘি, আচাইপুর, জামিত্যা এবং কোলাঘাট শহর লাগোয়া খড়িচক এলাকা জলোচ্ছাসে নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল। একইভাবে হলদি নদীর বাঁধ ভেঙে ও উপচে নন্দীগ্রামের কেন্দেমারি, বাসুলিচক, মহিষাদলের তেরপেখ্যা, চণ্ডীপুর ব্লকের নরঘাট ও নন্দকুমারের সাতেরচক, পূর্ব গুমাই সহ বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। হলদিয়ার এড়িয়াখালিতে হুগলি নদীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই সব এলাকায় নদীবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু করেছিল সেচ দফতর। সেচ দফতরের পূর্ব মেদিনীপুর বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকার অনির্বাণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মায়াচর সহ বিভিন্ন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত নদীবাঁধের বেশিরভাগ অংশ জরুরিকালীন মেরামতির কাজ হয়েছে। অমাবস্যার ভরা কটালে পরিস্থিতি সামাল দিতে নদীবাঁধে নজরদারি চালানো হচ্ছে। কিছু জায়গায় এখনও বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। ২৬ জুন পূর্ণিমার ভরা কটালের আগে তা হয়ে যাবে।’’

অমৃতবেড়িয়ার বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব শিবপ্রসাদ বেরা হতাশ গলায় বলেন, ‘‘কবে যে দুর্যোগের হাত থেকে রেহাই পাব!ইয়াসের দিন নদীর জোয়ারের জল যে ভাবে বাঁধের উপরে চলে এসেছিল তার তুলনায় এ দিন অমাবস্যার কটালে জোয়ারের জল বাঁধের উপর থেকে ফুট চারেক নীচে ছিল। তবে অমাবস্যায় একদিন পরে কটালের জোয়ার বেশী হয়। শুক্রবার কী হবে তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Awareness campaign Cyclone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE