তিরিশ সদস্যের দলটি টোটো বা কোনও গাড়িতে করে প্রথমে জনবহুল এলাকায় গিয়ে শুরু করছেন গানবাজনা। গানের কথায় উঠে আসছে সরকার গঠনে একজন ভোটারের ভোটদানের গুরুত্বের কথা। নতুন ধরনের গান টেনে আনছে অনেককেই। আর তখনই ওই কর্মীরা হাতে তৈরি নকল ইভিএম, ভিভিপ্যাট দিয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দানের পদ্ধতি হাতেকলমে বুঝিয়ে দিচ্ছেন জনতাকে। তারপর উপস্থিত ভোটারদের জন্য থাকছে ক্যুইজ প্রতিযোগিতা। সফল প্রতিযোগীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে পুরস্কার।
স্বাধীনতার পর থেকে জেলা, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরে কতগুলি ভোট হয়েছে। কারাই বা বিভিন্ন মন্ত্রক সামলে ছিলেন এমন হাজারো তথ্য সংবলিত পুস্তিকা ছাপানো হয়েছে সংস্থার তরফে। ক্যুইজের পর উপস্থিত জনতার মধ্যে সেই পুস্তিকা বিলি করছেন সংস্থার কর্মীরা। গত সাতদিন ধরে কোলাঘাটের বিভিন্ন জায়গায় চলছে এমন অরাজনৈতিক ভোট-প্রচার। ১২ মে জেলায় নির্বাচন। তার আগে ৯ মে পর্যন্ত এই কর্মকাণ্ড চলবে। কোলাঘাটের বাসিন্দা তাপস বৈদ্য বলেন, ‘‘এই ধরনের প্রচার অভিনব। এতে ভোটাররা ভোটদান সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন হবেন।’’ গত সাত দিনে কোলাঘাটের বিভিন্ন এলাকায় সংস্থার উদ্যোগে ৪২টি প্রচার কর্মসূচি হয়েছে। লক্ষ্য কোলাঘাট ব্লকের প্রতিটি গ্রামে এই কর্মসূচি করা। কর্মসূচি রূপায়ণে ইতিমধ্যেই খরচ হয়েছে প্রায় তিরিশ হাজার টাকা। টাকার সংস্থানের প্রশ্নে সংস্থার সদস্য শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা নিজেরা টাকা দিয়ে তহবিল গড়ে এই খরচ চালাচ্ছি। তবে টাকার অভাবে কোলাঘাটের বাইরে প্রোগ্রাম করতে যেতে পারি না।’’
শুধু ভোট প্রচার নয়, সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ প্রোগ্রামের প্রচার চালিয়ে এই সংস্থা পরিবহণ দফতরের তরফে জেলায় বিশেষ পুরস্কারও পেয়েছে। প্লাস্টিক বর্জন কর্মসূচি নিয়েও এঁরা কাজ করে চলেছেন। সংস্থার এক সদস্য সৃজা সরকারের কথায়, ‘‘ভোট দিতে গিয়ে অনেকেই রাগ করে নোটায় ভোট দেন। কিন্তু আমরা চাই সরকার গঠনে মতামত থাকুক সকলের। তাই মানুষকে ভোটদান নিয়ে সচেতন করতেই এই কর্মযজ্ঞ।’’
সংস্থার কাজে খুশি জেলা শাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ওঁদের এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানাই। আমার বিশ্বাস এর ফলে ভোটদান বিষয়ে মানুষ যথেষ্ট সচেতন হবেন।’’