Advertisement
১৯ মে ২০২৪

সেই পুরনো পুলিশি মেজাজে দেখা গেল ভারতীকে

কখনও গ্রামের মানুষকে অভয় দিয়ে বলছেন, ‘‘এই জেলা আমার হাতের তালুর মতো চেনা। কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। আপনারা নির্ভয়ে ভোটটা দেবেন।’’

ভারতী ঘোষ। ফাইল চিত্র।

ভারতী ঘোষ। ফাইল চিত্র।

বরুণ দে
কেশপুর শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০৪
Share: Save:

গলাটা একটু ধরে গিয়েছে। তবে ‘দাপট’ যেন সেই একই!

কখনও গ্রামের মানুষকে অভয় দিয়ে বলছেন, ‘‘এই জেলা আমার হাতের তালুর মতো চেনা। কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। আপনারা নির্ভয়ে ভোটটা দেবেন।’’ আবার কনভয় লক্ষ করে ঢিল ছোড়ার পরে ওসি-র দিকে হাত উঁচিয়ে বলছেন, ‘‘পুলিশের অনেক আধিকারিককে দেখতে পাচ্ছি। আমি পুলিশকেও বলব, মানুষকে এমন জায়গায় নিয়ে যাবেন না যে মানুষ আপনাদের মোকাবিলা করতে বাধ্য হন।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েও পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে আমরা কিন্তু থানায় গিয়ে বসে থাকব। আধিকারিকদের থানা থেকে বেরোতে দেবো না!’’

রাজ্য রাজনীতিতে বরাবরের বিতর্কিত তালুক কেশপুরে এমন চেহারাতেই ধরা দিলেন ভারতী ঘোষ। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার থাকাকালীন বেশ কয়েকবার কেশপুরে এসেছেন ভারতী। আর রবিবার এলেন বিজেপি প্রার্থী হিসেবে ভোট চাইতে। এ দিন কেশপুরের অমৃতপুরে ভারতীর কনভয়ে তৃণমূলের কার্যালয় থেকে ইট ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। তখন সেখানে হাজির কেশপুর থানার ওসি হীরক বিশ্বাস। ভারতী যখন জেলার পুলিশ সুপার, এই হীরক ছিলেন গড়বেতা থানার ওসি। এ দিন ভারতী তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘এ সব কী হচ্ছে?’’ জবাব আসে, ‘‘দেখছি ম্যাডাম’’। ভারতী পুলিশ সুপার থাকাকালীন বাকি আধিকারিকেরা তাঁকে ‘স্যর’ সম্বোধন করতেন। এ দিন সেই সম্বোধন পাল্টে গেলেও ভারতীর পুরনো দাপটই দেখা গিয়েছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, পুলিশ সুপার থাকাকালীন কংসাবতীর ঘাটে কার্যত বাঘে আর গরুকে একসঙ্গে জল খাইয়ে ছেড়েছিলেন ভারতী। সবাইকে ছাপিয়ে শাসক দলের ক্ষমতার কেন্দ্রে উঠে এসেছিলেন তিনি। পুলিশ সুপার ভারতী ‘মা’ বলে সম্বোধন করতেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অনেকে তখন বলতেন, তিনি ‘মা’ চিনেছেন। তাই তাঁর এত দাপট!

এখন সব অঙ্ক বদলে গিয়েছে। তৃণমূলের গলাতেও অন্য সুর। দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতির মন্তব্য, ‘‘দেড় বছর লুকিয়ে ছিলেন। ওই মহিলা এখন পায়ের তলায় শুধু মাটি খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তথ্যলোপাট করার জন্য উনি ঘাটালে প্রার্থী হয়েছেন। ওঁর উদ্দেশ্য ভোটে জেতা নয়।’’

তবে রাজনৈতিক চাপানউতোরের ছাপিয়েও ধরা দিচ্ছে প্রাক্তন আইপিএসের পুরনো দাপট। এ দিন ভারতীর বক্তব্য শুনতে এসেছিলেন ষাটোর্ধ্ব সাধন সাধন দোলুই। তিনি বলছিলেন, ‘‘ভারতীদির দম রয়েছে। এখানে টক্কর হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Bharati Ghosh BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE