Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
বক্সী-বার্তার পরেও রেলশহরে বেআব্রু কোন্দল

মানসের সামনেই হাতাহাতি

এ বার মেদিনীপুর কেন্দ্রে জেতার জন্য তৃণমূলের লক্ষ্য, খড়্গপুর সদর(শহর) বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ‘লিড’ আদায় করা। কারণ এই কেন্দ্রের বিধায়ক বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ বার এই কেন্দ্রের প্রার্থী।

মিছিলে মানসের বাঁ দিকে দেবু গঙ্গোপাধ্যায় (সবুজ পাঞ্জাবি), ডান দিকে অমিত পাণ্ডে (নীল শার্ট)। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

মিছিলে মানসের বাঁ দিকে দেবু গঙ্গোপাধ্যায় (সবুজ পাঞ্জাবি), ডান দিকে অমিত পাণ্ডে (নীল শার্ট)। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:৫১
Share: Save:

পায়ে হেঁটে প্রচার চলাকালীন দলের দুই গোষ্ঠীর ওয়ার্ড নেতার হাতাহাতি দেখতে হল তৃণমূল প্রার্থী মানস ভুঁইয়াকে!

শনিবার খড়্গপুর শহরে দ্বিতীয় দিনের ওয়ার্ড ভিত্তিক প্রচারে বেরিয়েছিলেন তৃনমূল প্রার্থী মানস ভুঁইয়া। এ বার মেদিনীপুর কেন্দ্রে জেতার জন্য তৃণমূলের লক্ষ্য, খড়্গপুর সদর(শহর) বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ‘লিড’ আদায় করা। কারণ এই কেন্দ্রের বিধায়ক বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ বার এই কেন্দ্রের প্রার্থী। গত বিধানসভায় খড়্গপুর সদরে বিজেপির জয়ের জন্য নিজেদের গোষ্ঠীকোন্দলকেই দায়ী করেছিল তৃণমূল। সেই কাঁটা যে এ বারও ভোগাতে পারে সেই ইঙ্গিতই মিলল শনিবার। এ দিন খড়্গপুর পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচার চলাকালীন অশান্তি হয়। ওই ওয়ার্ডটি কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। সেখানকার কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গেও দেখা করেন মানস। তাল কাটে মাঝপথে। প্রার্থীর সামনেই ওই ওয়ার্ডের দুই বিবদমান নেতা অমিত পাণ্ডে ও দেবু গঙ্গোপাধ্যায় হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। প্রকাশ্যে এই ঘটনা দেখে হতবাক হয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। মানস ভুঁইয়া বলেন, “এসব একদম বরদাস্ত করব না। এমনটা হলে মিছিলে থাকা যাবে না। আমি চলে যাব।” কয়েক মিনিট প্রচারে তাল কাটে। পরে অবশ্য মানসবাবুর ধমকে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

কী নিয়ে গোলমাল? তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবু চেয়েছিলেন খড়্গেশ্বর মন্দির থেকে বেরিয়ে সরাসরি বাজারের দিকে যেতে। অমিত চান, ইন্দা ডাকঘর হয়ে গলিপথ ধরে বাজারে যেতে। সেই নিয়েই কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি। পরে অবশ্য মানসবাবুর দু’টি পথেই প্রচার চালান। ঘটনাটি নিয়ে অমিত পাণ্ডের দাবি, “নির্দিষ্ট রুটেই প্রচার হয়েছে। সামান্য ভুল বোঝাবুঝি থেকে সমস্যা হয়েছিল।” তবে দেবু গঙ্গোপাধ্যায়েরও দাবি, “তেমন কিছুই হয়নি। যা বলার উর্ধ্বতন নেতৃত্ব ছিলেন ওঁরাই বলবেন।” মানস ভুঁইয়া অবশ্য বলেন, “কোনও গোষ্ঠীকোন্দল নয়। এক জন চেয়েছিল এক রাস্তা দিয়ে নিয়ে যেতে। আর এক জন চেয়েছিল অন্য রাস্তা দিয়ে নিয়ে যেতে। আসলে সকলেই চাইছে বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে আমাকে নিয়ে যেতে।”

স্থানীয় তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, অমিত আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে খড়্গপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডের ঘনিষ্ঠ। দেবু খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের অনুগামী বলে পরিচিত। তবে রবিশঙ্কর ও প্রদীপ দু’জনের কেউই প্রকাশ্যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাননি।

খড়্গপুর সদরে গোষ্ঠীকোন্দল তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বেরও মাথাব্যাথার কারণ। শহরে এসে খোদ তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী দলের বিবদমান নেতাদের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিয়ে গিয়েছিলেন। তার পরে নির্বাচনী কমিটি গড়ে ওয়ার্ডের গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে তৎপরতাও শুরু হয়েছে। তার পরেও প্রার্থীর উপস্থিতিতে দুই নেতার মারামারিতে দলের অস্বস্তি বেড়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি অবশ্য বলেন, ‘‘কী হয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখব। যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তবে ব্যবস্থা নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 TMC Manas Bhunia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE