Advertisement
E-Paper

কনভয়ে ইট, সটান তৃণমূল অফিসে ভারতী

ওসি-র উদ্দেশেও ভারতী বলেন, ‘‘এ সব কী হচ্ছে?’’ ওসি জবাব দেখেন, ‘‘দেখছি’’। ভারতীর পাল্টা, ‘‘শুধু দেখছি বললে হবে না। আমি কিন্তু থানার সামনে গিয়ে বসে পড়ব।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০৫
কেশপুরের ওসির সামনে চড়া মেজাজে ভারতী ঘোষ। রবিবার দুপুরে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

কেশপুরের ওসির সামনে চড়া মেজাজে ভারতী ঘোষ। রবিবার দুপুরে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

যখন যে শাসক, কেশপুর তার সঙ্গী। প্রতি ভোটে শাসকদলের প্রার্থীকে লক্ষাধিকের ‘লিড’ দেওয়া সেই তল্লাটে রবিবার লোকসভা ভোটের প্রথম প্রচারেই সুর চড়ালেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। প্রার্থী ভারতী ঘোষকে পাশে নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন, ‘‘বিজেপির কোনও কার্যকর্তার গায়ে যদি কেউ হাত দেয়, তাহলে তার ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দেব আমি। কেশপুরকে তৃণমূলের শেষপুর করে ছাড়ব।’’ সুর চড়ল ভারতীরও, ‘‘আজকে যে আমরা এসেছি, ধরে নেবেন এটা মুক্তিযুদ্ধের প্রথম দিন। নরকের এই পরিবেশ থেকে মুক্তি পেতে হবে। এটাও একটা মুক্তিযুদ্ধ।’’

এই সব গরম গরম কথার পরে আধ ঘণ্টাও কাটল না। তৃণমূলের কার্যালয় থেকে ইট ছোড়ার অভিযোগ উঠল ভারতীর কনভয়ে। ভারতীও গাড়ি থেকে নেমে সোজা চলে গেলেন তৃণমূল কার্যালের সামনে। গলা তুললেন, ‘‘কে ইট ছুঁড়েছেন? বেরিয়ে আসুন।’’ তৃণমূলের কার্যালয় থেকে অবশ্য কেউ রা কাড়লেন না।

এ দিন দুপুরে গোলাড়ে পথসভা সেরে কেশপুর আসার পথে এই কাণ্ড ঘটেছে মুণ্ডলিকার অমৃতপুরে। একটু আগে বেরিয়ে গিয়েছিল দিলীপ ঘোষের গাড়ি। আর ভারতীর গাড়ির সামনে-পিছনে বিজেপি কর্মীদের বেশ কয়েকটি গাড়ি ছিল। অমৃতপুরের তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে সেই কনভয় আসতেই তৃণমূল কর্মীরা ইট ছোড়ে বলে অভিযোগ। ভারতীর সঙ্গে তখন ছিলেন বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্য। ভারতী যখন তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে পৌঁছন, তখন সেখানে হাজির কেশপুর থানার ওসি হীরক বিশ্বাস। ওসি-র উদ্দেশেও ভারতী বলেন, ‘‘এ সব কী হচ্ছে?’’ ওসি জবাব দেখেন, ‘‘দেখছি’’। ভারতীর পাল্টা, ‘‘শুধু দেখছি বললে হবে না। আমি কিন্তু থানার সামনে গিয়ে বসে পড়ব।’’

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এরপর তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির উপক্রম হয়। চলতে থাকে কুকথার বন্যা। মিনিট পনেরো পরে তৃণমূলের এক কর্মীই দলের বাকিদের কার্যালয়ে ঢুকিয়ে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দেন। ফলে, বড় গোলমাল এড়ানো গিয়েছে। তবে ঘটনাস্থল ছাড়ার আগে ভারতী বলে যান, ‘‘তৃণমূলের লোকেরা আমাদের গাড়ি লক্ষ করে ইট ছুড়েছে। আমি নির্বাচন কমিশনে সব জানাচ্ছি।’’

তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘ভারতী ঘোষ, দিলীপ ঘোষরা বাইরে থেকে লোকজন নিয়ে এসেছিলেন। ওই লোকেরাই আমাদের দলের কার্যালয়ে হামলা করেছে।’’ তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতির খোঁচা, ‘‘তৃণমূল ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ করে না!’’ ঘটনার পরে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ঠিক কী হয়েছে দেখছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

বাম আমল থেকে তৃণমূলের জমানা, কেশপুরের রাজনৈতিক সমীকরণ কিন্তু বদলায়নি। লোকসভা হোক বা বিধানসভা, কিম্বা গত পঞ্চায়েত— প্রতিটি ভোটে এখন এখানে ঘাসফুলের দাপট। অধিকাংশ আসনে প্রার্থীটুকুই দিতে পারে না বিরোধীরা, তোলে সন্ত্রাসের অভিযোগ। এ দিন গোলাড়ের সভায় দিলীপও বলেন, ‘‘তৃণমূল ঠিক করেছে, কেশপুরে তৃণমূল ছাড়া আর কোনও দল থাকবে না। এটা কেমন গণতন্ত্র, যেখানে মানুষ ভোটটা দিতে পারে না।’’ আর ভারতীর আশ্বাস, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। আপনারা নির্ভয়ে ভোটটা দেবেন।’’

Lok Sabha Election 2019 Bharati Ghosh BJP Keshpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy