Advertisement
E-Paper

উন্নয়ন হয়েছে, তবে...

পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন জমায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রচারে নেমেছে বিরোধীরা।

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৪৪
পঞ্চায়েত ভোটের এই ছবি যেন না ফেরে, চান ভোটাররা। ফাইল চিত্র

পঞ্চায়েত ভোটের এই ছবি যেন না ফেরে, চান ভোটাররা। ফাইল চিত্র

জেলা সদর তমলুক শহরের প্রধান সড়কের দখলদার উচ্ছেদ করে রাস্তার সম্প্রসারণ ও সৌন্দর্যায়ন হয়েছে। হয়েছে জেলা হাসপাতালের চত্বরে মেডিক্যাল কলেজের শিলান্যাস। গ্রামীণ এলাকায় একাধিক পাকা রাস্তা ও বাজারে আধুনিক পথবাতি বসেছে। লোকসভা ভোটে এ সব উন্নয়নের কাজকে হাতিয়ার করে প্রচারে নেমেছে শাসকদল তৃণমূল।

তৃণমূল উন্নয়নকে হাতিয়ার করলে, গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দলের সন্ত্রাসকে ভোটের প্রচারে তুলে এনেছে বিজেপি, বাম ও কংগ্রেস। পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন জমায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রচারে নেমেছে বিরোধীরা। চাষের জমিতে মাছের ভেড়ি তৈরিতে তৃণমূল নেতাদের মদতের অভিযোগ তুলেছেন তমলুক বিধানসভা এলাকার বিরোধী দলের নেতারা। তমলুক লোকসভার অধীনে থাকা তমলুক বিধানসভা এলাকায় রয়েছে তমলুক পুরসভা, শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতি এলাকা ও তমলুক পঞ্চায়েত সমিতির ৪টি পঞ্চায়েত এলাকা। শহর ও গ্রামীণ এলাকা মিলিয়ে এই বিধানসভায় ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী প্রায় ৩০ হাজার ভোটে এগিয়েছিলেন বামপ্রার্থীর চেয়ে। কিন্তু দু’বছর পরে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী নির্বেদ রায় প্রায় ৫০০ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। হারের জন্য শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছিলেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলে উঠে ওই বছর নভেম্বরে তমলুক লোকসভার উপ-নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারী প্রায় ৪৯ হাজার ভোটের ‘লিড’ পান।

এত বিপুল ভোটে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও নিশ্চিন্ত হতে পারেনি শাসকদল। গত বছর পঞ্চায়েত ভোটে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে বিডিও অফিসে বামফ্রন্ট সহ বিরোধীদলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে তৃণমূল কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। যদিও সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের নেতা-প্রার্থীরা রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কথা বলছেন। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূল আহ্বায়ক শরৎ মেটার দাবি, ‘‘হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের অর্থে মেচেদা- রামতারকহাট, কাঁকটিয়া-হুড়িনান ও বুড়াড়ি থেকে খারুই রাস্তা পাকা হয়েছে ও হচ্ছে। পানীয় জলের প্রকল্প ও রাস্তায় পথবাতি বসানো হয়েছে। সাংসদ তহবিল, পঞ্চায়েতের উদ্যোগে প্রচুর গ্রামীণ রাস্তা পাকা হয়েছে। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের সুফল মানুষের কাছে পৌঁছেছে, এটা এখানকার মানুষ জানেন।’’

তমলুকের বাম বিধায়ক তথা সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক অশোক দিন্দার অভিযোগ, ‘‘উন্নয়ন নিয়ে বিজেপি, তৃণমূল উভয়েই মানুষকে মিথ্যা বলছে। পাঁচ বছরে জেলায় কোনও শিল্প হয়নি। বেকারদের কর্মসংস্থান হয়নি।’’ অশোকবাবুর আরও অভিযোগ, ‘‘গত বছর পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের লোকজন শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক অফিসের সামনেই আমাদের প্রার্থীদের উপর লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ চালিয়ে মনোনয়নে বাধা দিয়েছে। এরপর ভোটগ্রহণ ও ভোটগণনা কেন্দ্রে সন্ত্রাস চালিয়েছিল। তৃণমূলের সেই চেহারা মানুষ দেখেছে। শাসক দলের অগণতান্ত্রিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রচার চালানো হচ্ছে।’’

বিজেপির তমলুক জেলা সভাপতি প্রদীপ দাসের অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েতে বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়নে বাধা দিয়ে, মানুষকে ভয় দেখিয়ে ভোট দিতে বাধা দিয়েছিল তৃণমূল। আর তমলুকে গ্রামীণ এলাকায় চাষের জমিতে স্থানীয় তৃণমূলের নেতাদের মদতে জোর করে মাছের ভেড়ি তৈরি হচ্ছে। তৃণমূলের এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য মানুষকে সাহস জোগাচ্ছি আমরা।’’

বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে শরৎ মেটার দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে ব্লকের কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি আসন বাদে সব আসনে বিরোধীরা প্রার্থী দিয়ে লড়াই করেছিল। সন্ত্রাসের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আর চাষের জমিতে মাছের ভেড়ি তৈরির সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।’’

Lok Sabha Election 2019 Violence Panchayat Election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy