দাসপুরে দেওয়াল লিখছে কন্যাশ্রীরা। নিজস্ব চিত্র
সযত্নে আঁকা ঘাসফুল। পাশে ভোটের ছড়াও। তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে দেওয়াল রাঙিয়ে তুলছেন কন্যাশ্রীরা। সোমবার সকালে দাসপুরের বেলেঘাটায় পৌঁছে এমনই এক দেওয়ালের দেখা মিলল। প্রচার লিখন শেষে এক কোণে লেখা রয়েছে— সৌজন্যে কন্যাশ্রী।
ভোট প্রচারের অন্যতম মাধ্যম দেওয়াল লিখন। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা নেমে পড়েন দেওয়াল দখলে। তারপর প্রার্থীর নাম, দলীয় প্রতীক আর ভোট দেওয়ার আহ্বানে রঙিন হয়ে ওঠে দেওয়াল। ভোট মরসুমের দেওয়ালে রকমারি ছড়া, কার্টুনের দেখাও মেলে। সব দলই কোনও না কোনও চমক দেওয়ার চেষ্টা করে। সেই লক্ষ্যেই দাসপুর-১ ব্লক তৃণমূলের উদ্যোগে দেওয়াল লিখছেন কন্যাশ্রীরা। যাঁরা এ কাজ করছেন তাঁরা কন্যাশ্রী প্রকল্পে উপকৃত, বর্তমানে কলেজ ছাত্রী।
রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্প বিশ্বের দরবারে সমাদৃত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বিভিন্ন সভায় এই প্রকল্পের মেয়েদের প্রশংসা করেছেন। অষ্টম শ্রেণি থেকে এই প্রকল্পে বছরে এক হাজার টাকা করে পায় ছাত্রীরা। ১৮ বছর পূর্ণ হলে এককালীন ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় উপভোক্তাদের। উচ্চশিক্ষাতেও এই প্রকল্পে সুবিধা মেলে।
নাবালিকা বিয়ে রোখা থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রচার অভিযানের জন্য গড়ে উঠেছে কন্যাশ্রী ক্লাবও। সেই কন্যাশ্রীরা ভোটের দেওয়াল লিখনে কেন?
তৃণমূলের ব্যাখ্যা, প্রচারে বৈচিত্র আনতেই এই ভাবনা। তা ছাড়া, ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরা এই কাজে এগিয়ে এলে অন্যরকম বার্তাও দেওয়া যায়। তৃণমূলের স্থানীয় নেতা বাদল মণ্ডল, তপন মণ্ডলদের কথায়, “সবাই এখন প্রচারে চমক আনছে। আমরাও কন্যাশ্রী মেয়েদের দিয়ে দেওয়াল লিখিয়ে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করছি।” ভোটের দেওয়াল লিখতে ব্যস্ত ঘাটাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী অর্পিতা বারিক, সুমনা মান্নারা বলছেন, “এ ভাবে দেওয়াল রাঙানোর অভিজ্ঞতা এই প্রথম। অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে।” আরেক ছাত্রী মৌ মণ্ডলের কথায়, “ঘর থেকে বেরিয়ে ভোটের কাজ করছি। এটা তো একটা বড় প্রাপ্তি।”
ক’দিন ধরে সকাল হলেই হাতে রং-তুলি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন এই কন্যাশ্রীরা। ইতিমধ্যেই বেলেঘাটা বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া একটা দেওয়াল লেখা সম্পূর্ণ করে ফেলেছেন তাঁরা। এ রকম আরও চার-পাঁচটি দেওয়াল লেখার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তাঁদের।
বিরোধীরা অবশ্য বিঁধতে ছাড়ছে না। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক প্রসনজিৎ মুদি-র কথায়, “প্রকল্পের উপভোক্তাদেরও ভোটের কাজে লাগানো হচ্ছে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে তৃণমূলের হাল কতটা খারাপ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy