Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বিধির গেরোয় ‘কৃষক বন্ধু’র চেক বিলি

জেলার ২৫টি ব্লকের কয়েক হাজার চাষির হাতে প্রকল্পের চেক ইতিমধ্যে তুলেও দেওয়া  হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক ও কোলাঘাট শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯ ০৩:৫১
Share: Save:

চাষের কাজে চাষিদের আর্থিক সাহায্য দিতে রাজ্য সরকারের তরফে চলতি বছরেই চালু হয়েছে কৃষক বন্ধু প্রকল্প। বছরের রবি ও খারিফ মরসুমে দু’দফায় মিলিয়ে এই আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। এক থেকে ৮০ ডেসিমাল পর্যন্ত জমির জন্য বছরে ২ হাজার টাকা ও ৪১ ডেসিমাল থেকে ৯৯ ডেসিমাল পর্যন্ত ডেসিমাল পিছু পঞ্চাশ টাকা, আর এক একরের বেশি জমির জন্য সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। গত পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে ওই প্রকল্পে জমির মালিকদের চেক বিলিও শুরু হয়েছিল রাজ্যে।

জেলার ২৫টি ব্লকের কয়েক হাজার চাষির হাতে প্রকল্পের চেক ইতিমধ্যে তুলেও দেওয়া হয়েছে। আরও কয়েক হাজার চেক এসে পড়ে রয়েছে জেলার বিভিন্ন ব্লকে। কিন্তু এই চেক আদৌ বিলি করা যাবে কি না তা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ নিবার্চনী আচরণ বিধি। গত ১০ মার্চ লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণার পরেই চালু হয়ে গিয়েছে নিবার্চনী আচরণ বিধি। গত মঙ্গলবার থেকে কোলাঘাট ব্লকে এই প্রকল্পে আবেদনের জন্য দেড়িয়াচক পঞ্চায়েত অফিসে ফর্ম পূরণের কাজ শুরু হয়েছে। আর এতেই নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি।

স্থানীয় সূত্রে খবর, দেড়িয়াচক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কৃষকদের কৃষক বন্ধু প্রকল্পে ফর্ম পূরণের জন্য রবিবার ও সোমবার এলাকায় মাইক দিয়ে প্রচার চালানো হয় পঞ্চায়েতের তরফে। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার ও বুধবার এলাকার কৃষকরা পঞ্চায়েত অফিসে ভিড় করেন ফর্ম পূরণ ও জমা দেওয়ার জন্য। বিজেপির তরফে অভিযোগ পেয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক কোলাঘাটের বিডিওকে ফর্ম বিলির কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। কোলাঘাটের বিডিওর নির্দেশে কোলাঘাট ব্লক কৃষি দফতরের অধিকারিকগণ পুলিশ নিয়ে দেড়িয়াচক গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে পৌঁছলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বাধ্য হয়ে তাঁরা ফিরে আসেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এর ফলে জেলার বিভিন্ন ব্লক এলাকায় রাজ্যের শাসকদলের নেতারা কিছুটা অস্বস্তিতে। ময়নার পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুব্রত মালাকার বলেন, ‘‘ব্লকের তিলখোজা, শ্রীকন্ঠা এবং ময়না-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় আট হাজার কৃষকের জন্য এই প্রকল্পে চেক চলে এলেও নির্বাচন বিধির কারণে তা বিলি করা যায়নি। চেক কবে বিলি করা হবে তা বুঝতে পারছি না।’’ তা ছাড়া একটি চেকের মেয়াদ থাকে ইস্যুর তারিখ থেকে তিন মাস। রাজ্যে সাত দফায় নিবার্চনের কারণেই নিবার্চনী বিধির গেরোয় ইতিমধ্যেই ইস্যু হওয়া চেক বিলি আটকে গেলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করলে অনেক চেকেরই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাবে। ফলে সেগুলি আর জমা দেওয়া যাবে না। ফের নতুন চেক ইস্যু করতে হবে।

নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীননাথ দাস বলেন, ‘‘নির্বাচন বিধি চালু হওয়ার আগে পর্যন্ত ব্লকের কৃষকদের একাংশের হাতে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের চেক বিতরণ করা হয়েছিল। নির্বাচন বিধি চালুর পর থেকে চেক বিলি বন্ধ। ব্লকের প্রায় আট হাজার চেক এলেও তা বিলি করা যাচ্ছে না। জেলা প্রশাসনের কাছে কী করণীয় জানতে চেয়ে আমরা চিঠি দিয়েছি।’’

জেলা কৃষি দফতরের সহ-অধিকর্তা মৃণালকান্তি বেরা বলেন,‘’ভোট ঘোষণার সঙ্গে নির্বাচন বিধি কার্যকর হওয়ায় শিবির করে চেক বিতরণ বন্ধ হয়েছে।বিভিন্ন ব্লকে পাঠানো বেশকিছু চেক এখনও বিলি হয়নি এটা ঠিক।তবে কমিশনের নির্দেশিকা মেনে তা বিলি করা যায় কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে‘’।

জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Tamluk Kolaghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE