তিন দিনের লড়াই শেষ। কলকাতার হাসপাতালে মৃত্যু হল মেদিনীপুরের সেই অগ্নিদগ্ধ লটারির টিকিট বিক্রেতার। গত শনিবার বাইকে করে এসে এক জন তাঁর গায়ে পেট্রল ঢেলে দেন। তার পর দেশলাই দিয়ে আগুন লাগিয়ে সঙ্গীর বাইকে চম্পট দিয়েছিলেন। নিজের দোকানে অগ্নিদগ্ধ হওয়া সুরজিৎ সাউকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন স্থানীয়েরা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত শনিবারই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে কলকাতার একটি সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল সুরজিৎকে। বুধবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। লটারির টিকিট ব্যবসায়ীর মৃত্যুসংবাদ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে তাঁর পরিবারে। অন্য দিকে, এই ঘটনায় ধৃত দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা।
গত শনিবার দুপুরে মেদিনীপুর শহর সংলগ্ন কেরানিচটি এলাকায় নিজের দোকানে ছিলেন সুরজিৎ। আচমকা তাঁর গায়ে তরল ঢেলে দেশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দৌড়ে পালান এক ব্যক্তি। দগ্ধ অবস্থায় রাস্তায় ছটফট করতে থাকেন সুরজিৎ। পরনে পোশাক খুলে নিজেকে বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করেন তিনি। পরে স্থানীয় কয়েক জন তাঁকে উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করান। তবে সেই দিন বিকেলে সুরজিৎকে পাঠানো হয় কলকাতার হাসপাতালে।
অন্য দিকে, এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। তদন্তে উঠে আসে অস্থায়ী দোকান বসানো নিয়ে সুরজিতের সঙ্গে অশান্তি হয় স্থানীয় এক ইডলি দোকানদারের। ওই দোকানদারই আরও দু’জনকে নিয়ে মোটরবাইকে করে গিয়ে আক্রমণ করেন লটারি ব্যবসায়ীকে। ওই ইডলি দোকানদার এবং তাংর এক সঙ্গী এখন পুলিশের হেফাজতে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার ময়নাতদন্তের পর সুরজিতের দেহ কেরানিচটিতে বিকেল নাগাদ পৌঁছবে। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এই ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। আজ (বুধবার) মৃত্যু হয়েছে সুরজিৎ সাউয়ের। যে পেট্রোল পাম্প থেকে বোতলে করে পেট্রল নিয়ে এসেছিলেন অভিযুক্তেরা, সেই পাম্পের মালিককে সতর্ক করে দিয়েছে পুলিশ। অন্য পেট্রোল পাম্পগুলিকেও পুলিশের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যানবাহন ছাড়া কোনও অবস্থাতেই যেন জ্বালানি তেল খোলা বিক্রি না করেন তাঁরা।