Advertisement
E-Paper

ঐতিহ্যের চার রথ রেলশহরে

সুভাষপল্লির রথযাত্রা উৎসবে ৯দিন ধরে চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কলকাতার শিল্পীরাও থাকছেন। প্রায় ৭০বছরের পুরনো এই রথযাত্রায় এ দিন বৈষ্ণব রীতি মেনে যাবতীয় আচার পালন করা হয়। কথিত আছে, স্থানীয় রমেশচন্দ্র সাহা নিজের উদ্যোগে এই রথযাত্রার সূচনা করেছিলেন।

দেবমাল্য বাগচী

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৭ ০২:১০

উৎকলীয় রীতি মেনে পথে নামল ঐতিহ্যের রথ। চার-চারটি রথযাত্রা ঘিরে রবিবার উৎসবে মাতল রেলশহর।

খড়্গপুরের সুভাষপল্লি, নিউ সেটলমেন্ট, তালবাগিচা ও মালঞ্চয় রথ বেরোয় এ দিন। ছুটির দিনে রথ ঘিরে সকাল থেকেই ছিল উৎসবের মেজাজ। তুলনায় এ বার নিউ সেটেলমেন্টে জগন্নাথ জিউ-র মন্দিরের রথে বাড়তি ভিড় নজরে পড়েছে। বহু বছর বন্ধ থাকার পরে ২০১৫ থেকে চালু হওয়া ঐতিহ্যবাহী সুভাষপল্লির যাত্রা ময়দানের রথ ও মেলার জৌলুস ছিল চোখে পড়ার মতো। তালবাগিচার রথতলা মাঠের পুরনো রথযাত্রা আর মালঞ্চর চণ্ডীপুরে এক দশক পরে চালু হওয়া রথ ঘিরেও আবেগে ভেসেছেন শহরবাসী।

শহরের সবচেয়ে প্রাচীন রথ এই মালঞ্চ চণ্ডীপুরে গিড্ডু জমিদারের রথ। দীর্ঘ দশ বছর বন্ধ থাকার পড়ে এ বার এলাকার মহিলাদের উদ্যোগে গড়ে ওঠা জমিদার ‘হরিসাধন রায় স্মৃতিরক্ষা কমিটি’ পরিচালনায় নতুন করে রথযাত্রা শুরু হল। জমিদারবাড়ির রাসমঞ্চ থেকে মদনমোহন জিউকে রথে তুলে এলাকা ঘোরানো হয়। পরে প্রিয়নাথ স্কুল সংলগ্ন রথ ময়দানে শেষ হয় শোভাযাত্রা। সেখানেই হচ্ছে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সুভাষপল্লির রথযাত্রা উৎসবে ৯দিন ধরে চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কলকাতার শিল্পীরাও থাকছেন। প্রায় ৭০বছরের পুরনো এই রথযাত্রায় এ দিন বৈষ্ণব রীতি মেনে যাবতীয় আচার পালন করা হয়। কথিত আছে, স্থানীয় রমেশচন্দ্র সাহা নিজের উদ্যোগে এই রথযাত্রার সূচনা করেছিলেন। তখন পাঁচেরপল্লি থেকে রথ বেরিয়ে যাত্রা ময়দানে আসত। পরে পাঁচের পল্লির গৌড়ীয় মঠ রথযাত্রার দায়িত্ব নেয়। তবে কয়েকবছর ধরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল মেলা। এই দু’টি রথ উৎসব কমিটির সভাপতি তথা পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “আমি চাই শহরের ঐতিহ্য বেঁচে থাকুক। আর প্রতিটি রথ ও মেলার মধ্যে প্রতিযোগিতা হোক। তাই নিজে উদ্যোগী হয়ে এই রথগুলিকে নবরূপ দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছি।”

ঐতিহ্যের রথ তালবাগিচাতেও। ১৯৫১ সালে স্থানীয় রমণিমোহন পালের স্ত্রী রথতলা ময়দানে এই রথযাত্রা চালু করেছিলেন। তখন এর নাম ছিল ‘পালবুড়ির রথ’। গত ৩৮ বছর ধরে স্থানীয় রবীন সঙ্ঘ ক্লাব ও রথমেলা কমিটির উদ্যোগে রথযাত্রা ও মেলা হচ্ছে। এ বারও ব্যতিক্রম হয়নি। তবে বরাবরের মতো ভিড় টেনেছে জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রা। ২০০২ সাল থেকে একেবারে পুরীর ধাঁচে ওডিয়া রীতিতে রথ হচ্ছে এখানে। পোহান্তি করে জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে এনে রথে বসানো হয়। সুভদ্রার রথের রশিতে টান দেন শুধু মহিলারা। এ বার আইআইটির প্রাক্তন ডিরেক্টর দামোদর আচার্য ঝাঁট দিয়ে রথযাত্রার সূচনা করেছেন। রথ গিয়েছে মথুরাকাটি হনুমান মন্দির পর্যন্ত। রথযাত্রা উৎসব কমিটির আহ্বায়ক দ্বারকেশপ্রসাদ পট্টনায়েক বলেন, “একেবারে ওডিশার রীতিতে আমাদের রথযাত্রা উৎসব হয়। ৯দিন ধরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও চলবে।’’ ২৯ জুন ওডিশা সরকারের সংস্কৃতি বিভাগের দল অনুষ্ঠানে যোগ দেবে। বসেছে বিশাল মেলাও।

রথের উৎসবে সামিল হয়েছিলেন আদতে ওডিশার বাসিন্দা খড়্গপুরের এডিআরএম মনোরঞ্জন প্রধান। তিনি বলেন, “মিশ্র সংস্কৃতির এই শহরে এই রথযাত্রাও মিলনের উৎসব হয়ে গিয়েছে।’’

Ratha Yatra Tradition রথ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy