Advertisement
E-Paper

সঙ্গী শুভেন্দু-অখিল, গ্রাম সফরে মৈত্রী বার্তা

জেলা সফরের শুরুতেই এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও পৌঁছে গেলেন আমজনতার বাড়ির অন্দরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৯ ০২:২২
মিত্রশক্তি: মৈত্রাপুর গ্রামে গ্রামবাসীদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী। রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, অখিল গিরি।

মিত্রশক্তি: মৈত্রাপুর গ্রামে গ্রামবাসীদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী। রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, অখিল গিরি।

তাঁর নামে জনসংযোগের নতুন কর্মসূচি শুরু করেছে দল। ‘দিদিকে বলো’র প্রচারে গ্রামে ঘুরছেন তৃণমূলের নেতা মন্ত্রী বিধায়কেরা।

ওই কর্মসূচির পরে জেলা সফরের শুরুতেই এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও পৌঁছে গেলেন আমজনতার বাড়ির অন্দরে। জেনে নিলেন সুখ-দুঃখের কথা। আর দিঘায় সেই জনসংযোগের ফাঁকে ‘মিলিয়ে’ দিলেন জেলায় প্রতিপক্ষ দুই শিবিরের মাথাদের। গ্রামে ঢুকলেন জেলা রাজনীতিতে যুযুধান বলে পরিচিত শিশির অধিকারী, শুভেন্দু অধিকারী ও অখিল গিরিকে পাশে নিয়ে।

সোমবার বিকেল ৪টে। হেলিকপ্টারে দিঘা পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী। নিউ দিঘার হেলিপ্যাড ময়দান থেকে সোজা তিনি যান ওল্ড দিঘায় রাজ্য সরকারের নব নির্মিত অতিথিশালায়। এ দিনই এই অতিথিশালার উদ্বোধন করেন তিনি। নাম দিয়েছেন ‘দিঘি’। কয়েক মিনিটের মধ্যেই সেখানে থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় রওনা দেয় দিঘা লাগায়ো তফসিলি অধ্যুষিত গ্রাম মৈত্রাপুরের পথে। সঙ্গী দলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী, পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাস এবং রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, মৈত্রাপুরে পৌঁছে আরতি সিংহ নামে এক মহিলার বাড়ির সামনে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। আরতি তখন পড়শিদের সঙ্গে বাড়ির উঠোনে গল্প করছিলেন। চেয়ার টেনে মমতাও বসে পড়েন। এক পাশে শুভেন্দু এবং অন্য পাশে অখিলকে বসিয়ে গল্পে যোগ দেন। জানতে চান আরতির ছেলেমেয়েদের কথা। আরতী জানান, তাঁর দুই সন্তান কর্মসূত্রে বাইরে রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, তাঁরা বাইরে কেন কাজে গিয়েছেন? জবাবে আরতি জানান, প্রায় দেড় দশক ধরে ওঁরা বাইরে হোটেলে কাজ করছেন।

আরতির বাড়ি থেকে মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছন পাশেই নলিনী সিংহ এবং তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য শুভেন্দু সিংহের বাড়িতে। পরে আরতির বাড়িতে চা এবং ডাবের জল খেয়ে খান। গ্রামের কচিকাঁচারা তাঁকে ঘিরে ধরে। তাদের হাতে লজেন্স দেওয়ার ফাঁকে মমতা জেনে নেন, স্কুলে মিড ডে মিল ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে কি না।

মমতাকে এ দিন সেভাবে অভাব অভিযোগ শুনতে হয়নি। বরং গ্রামের মহিলারা হাত ধরে তাঁদে ঘরে নিয়ে গিয়েছেন পরম আদরে। মমতাও যেন তাঁদের ‘ঘরের লোক’।

তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই জনসংযোগকে কটাক্ষকে করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। বিজেপি’র জেলা সহ-সভাপতি (তমলুক) মানসকুমার রায় বলেন, ‘‘মন্ত্রী-পারিষদেরা বিজেপিকে যে ঠেকাতে পারবেন না, তা মুখ্যমন্ত্রী ভালভাবে বুঝে গিয়েছেন। তাই বিদায় বেলায় গ্রামে গ্রামে গিয়ে এখন মানুষের আস্থা অর্জনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’’

রাজনৈতিক মহলে একাংশেরও মতে, মমতার এই জন‌সংযোগে কোথায় যেন রয়েছে জেলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে প্রশমিত করার চেষ্টা। কারণ, এ দিন মমতার দুই সফর সঙ্গী শুভেন্দু-অখিল জেলার রাজনীতিতে যুযুধান বলেই পরিচিত। কিছুদিন আগেই তমলুকে তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠকে অখিল শুভেন্দুর বদলে জেলা সমবায় সেল সভাপতি গোপাল মাইতির নেতৃত্বে জনসংযোগ কর্মসূচি নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন।

যদিও অখিলের বক্তব্য, ‘‘মন্ত্রী এবং জনপ্রতিনিধি হিসাবে শিশিরবাবু ও শুভেন্দুবাবু সঙ্গে ছিলাম। আর আমি ছিলাম এলাকার বিধায়ক হিসাবে। এর মধ্যে রাজনীতি খোঁজার কোনও কারণ নেই।’’ আর জেলা সভাপতি শিশির বলছেন, ‘‘সারা জেলাতেই ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি চলছে। আমাদের জেলায় দলের কোনও বিভাজন নেই। যা কিছু বলা হয়, সবটাই সংবাদমাধ্যমের তৈরি করা।’’

যে যাই বলুন না কেন, এ দিন মৈত্রাপুরে কার্যত দু’পক্ষকে মধ্যে মৈত্রীর বাঁধনে বাঁধলেন ‘দিদি’!

Mamata Banerjee Suvendu Adhikari TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy