Advertisement
২২ মার্চ ২০২৩

বন দফতরে স্থানীয়দের চান মমতা

জঙ্গলমহলের মানুষ যাতে নির্ভয়ে ঘুমোতে যেতে পারেন সে জন্য বন দফতরকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামবনি শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৩৪
Share: Save:

জঙ্গলমহলের মানুষ যাতে নির্ভয়ে ঘুমোতে যেতে পারেন সে জন্য বন দফতরকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জঙ্গলমহলে বন দফতরের চতুর্থ শ্রেণির শূন্য পদগুলিতে স্থানীয় যুবক-যুবতীদের নিয়োগ করার নির্দেশও দেন তিনি। বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জামবনির প্রশাসনিক সভা-মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমার বন কর্মীরা অনেক কাজ করেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছু হাতি ঝাড়খণ্ড থেকে এখানে চলে আসছে। নদী যেমন মাঝে মধ্যে গতিপথ পরিবর্তন করে, হাতিরাও তেমনই গতিপথ পরিবর্তন করছে। সেটা নজর রাখুন, পরিকল্পনা তৈরি করুন। মানুষকে যেন ভয়ে ভয়ে ঘুমোতে না হয়।” গত জুনে ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে হাতির হানায় ফসলের ক্ষতি ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান জেনে বেজায় চটেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বন দফতরের কর্তাদের ধমক দিয়ে দফতরটি রাখার যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন। তারপর হাতির সমস্যা নিয়ে একাধিক পরিকল্পনা হয়েছে। বন দফতর সূত্রের খবর, বুধবার ঝাড়গ্রাম সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী জানতে পারেন, দলমার হাতির পালকে বাঁকুড়ার দিকে যেতে না দিয়েও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আগের তুলনায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান অনেক কমেছে। বৃহস্পতিবার মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী বন দফতরের প্রশংসা করেছেন।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, “স্থানীয় যুবক-যুবতীদের শূন্যপদে নিয়োগ করতে হবে। এলাকার ছেলে মেয়েরা জঙ্গলের সমস্যা সবচেয়ে ভাল ভাবে বোঝেন। তাই তাঁদের কর্মী-পদে নিয়োগ করা হলে সব দিক থেকেই সুবিধা হবে।” বন দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, জেলায় ১০০টি দলমার হাতি ও আরও গোটা ষাটেক রেসিডেন্ট হাতি থাকা সত্ত্বেও জুন থেকে অক্টোবর এই চার মাসে হাতির হামলায় মাত্র ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত চার মাসে জেলায় আড়াইশো হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। জেলার এক বনকর্তার দাবি, “চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে ক্ষতির পরিমাণ ও মৃত্যুর পরিসংখ্যানের তুলনায় পরবর্তী চারমাসে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কমে গিয়েছে।”

কী ভাবে এটা সম্ভব হল, ব্যাখ্যা দিচ্ছেন বন-কর্মীরা।—পরীক্ষামূলক ভাবে ‘বাল্‌ক এসএমএস’ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। প্রতিদিন এলাকার বিশিষ্টজন, পঞ্চায়েতের সদস্য, বিধায়ক, সাংসদ, পুলিশ ও প্রশাসন আধিকারিদের কাছে হাতির দলের অবস্থা ও গতিবিধি সংক্রান্ত মেসেজ পৌঁছে যাচ্ছে। জেলার চারটি বন বিভাগে চার জন এডিএফও-এর নেতৃত্বে চারটি এলিফ্যান্ট মুভমেন্ট মনিটরিং কো-অর্ডিনেশন কমিটি (ইএমএমসিসি) প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। নানা হাতির গতিবিধি নজরদারি চালানোর জন্য এবং হাতিদের লোকালয় থেকে জঙ্গলে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বিশেষ যান ‘ঐরাবত’ নিয়ে আসা হয়েছে জেলায়। এ ছাড়া আকাশপথে ড্রোনের মাধ্যমে হাতির গতিবিধিতে নজর রাখা হচ্ছে। জঙ্গল লাগোয়া লোকালয়গুলিতে তৈরি করা হয়েছে নজরমিনার। হাতি এলাকায় ঢুকলে ওয়ার্নিং সিস্টেমের মাধ্যমে কয়েকটি এলাকায় মানুষকে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.