Advertisement
২৪ মার্চ ২০২৩
Snake Man

খালি হাতেই সাপ ধরেন হলদিয়ার ‘স্নেক ম্যান’

সুতাহাটা ব্লকের ... গ্রামের বাসিন্দা নকুলকে এলাকাবাসী ‘স্নেক ম্যান’ নামে চেনেন। বছর আটচল্লিশের নকুলের নেশা হল বিষধর সাপ ধরা এবং পরে তা বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া।

এভাবেই হাতে সাপ ধরেন নকুল ঘাঁটি।

এভাবেই হাতে সাপ ধরেন নকুল ঘাঁটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২০ ০৭:২৯
Share: Save:

পুলকার চালিয়ে সংসার চালান। লকডাউনে সেই পেশায় পড়েছে টান। কার্যত ঘরবন্দি হয়েই রয়েছেন সুতাহাটার নকুল ঘাঁটি। কিন্তু নেশার টানে মাঝেমধ্যেই ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছেন। ধরছেন বিষধর সাপ!

Advertisement

সুতাহাটা ব্লকের ... গ্রামের বাসিন্দা নকুলকে এলাকাবাসী ‘স্নেক ম্যান’ নামে চেনেন। বছর আটচল্লিশের নকুলের নেশা হল বিষধর সাপ ধরা এবং পরে তা বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া। এলাকায় কোথায় সাপ বেরিয়ে খবর পেলেই তাঁর জাক পড়ে। কখনও কখনও নিজেই ছুটে যান। লকডাউনে পর্বে গত জুনেই হলদিয়া এলাকায় খালি হাতে ১৮টি বিষধর সাপ ধরছেন। উচ্চমাধ্যমিক পাশ নকুল জানাচ্ছেন, এক সময় তিনি রাজ্য খো খো দলে খেলেছিলেন। কাজ করতেন কলকাতায় বিমানবন্দরের চেক পোস্টে। চাকরি ছেড়ে দিয়ে ১৯৯৭ সালে হলদিয়ায় ফিরে আসেন। যুক্ত হন হলদিয়া বিজ্ঞান পরিষদের সঙ্গে। পরিষদের কর্মীদের সঙ্গে সাপের ভয় কাটাতে গ্রামে গ্রামে প্রচার অভিযানে যেতেন। সেই থেকেই সাপ ধরার তাঁর হাতেখড়ি।

বর্তমানে নকুল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কাউন্সিলের সদস্য, যুক্তিবাদী প্রশিক্ষকও বটে। পাশাপাশি, পুলকার চালিয়ে সংসার চালান। তবে লকডাউনে সেই পেশায় তাঁর ধাক্কা লেগেছে। কিন্তু সাপ ধরা নকুল বন্ধ করেননি। নকুল বলেছেন, ‘‘এক সময় আমার ঘরেই প্রায় আড়াইশো সাপ রেখেছিলাম। ২০১১ সালে খাঁচা ভেঙে সেই সাপের মধ্যে থেকে একটি ৯ ফুট লম্বা ময়াল বেরিয়ে পড়ে। থানায় অভিযোগও জমা হয়। দুই মাস পরে আশাদতলিয়া গ্রাম থেকে সাপটি ফের উদ্ধার করা হয়েছিল।’’ তারপর থেকেই বাড়িতে সাপ রাখা বন্ধ করেন নকুল। সুন্দরবনের কাছে মৌসুনি দ্বীপে শতাধিক কেউটে সাপ ছেড়ে এসেছিলেন।

সাপ ধরে ভয় লাগে না? সাপ নিয়ে সচেতনতা অনুষ্ঠান করতে গিয়ে নিজেও ছোবল খেয়েছেন বলে জানাচ্ছেন নকুল। তবে তিনি বলছেন, ‘সাপ ধরার জন্য তিনটি জিনিস লাগে— সাহস, কৌশল আর চোখের দৃষ্টি। তিনি বলেন, ‘‘আমি শুধু লাঠি দিয়েই সাপ ধরি। লোকের মনে সাপের সম্পর্কে যে ভীতি রয়েছে, তা কাটাতেই ঝুঁকিপূর্ণ এই কাজ করেন।’’

Advertisement

স্ত্রী নন্দিতা সাপ ধরতে গেলে বাধা দেন না?

নকুলের সহাস্য জবাব, ‘‘এক-আধবার জানতে চেয়েছি ওঁকে— কী গো, ভয় পাও নাকি? স্ত্রীর উত্তর এসেছে, সমাজের জন্য কিছু করছ এটাই তো বড় কথা।’’ তবে নকুলের একটা আফশোস থেকে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ময়াল সাপটা বড় প্রিয় ছিল। ওর জন্য ইঁদুর, পাখি, ল্যাঠা আনতে হত। খাঁচা ভেঙে বেরিয়ে যেতেই সব পাল্টে গেল। ওকে বন দফতরের হাতে তূলে দেওয়া হয়েছিল। কেমন যেন মায়া পড়ে গিয়েছিল ওর উপর!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.