Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মার থেকে বাঁচতে সাংসদের বাড়িতে

গ্রামে গুজব ছড়িয়ে যায় যে সাংসদ অভিযুক্তকে আশ্রয় দিয়েছেন। তারপরই সারদাপল্লির লোকজন দলবেঁধে কন্যাডোবা গ্রামে এসে কুনারের বাড়ি ঘেরাও করে।

কুনারের বাড়ির সামনে বিশ্বজিৎকে গণধোলাই। নিজস্ব চিত্র

কুনারের বাড়ির সামনে বিশ্বজিৎকে গণধোলাই। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১৬
Share: Save:

জনরোষ থেকে বাঁচতে সাংসদ কুনার হেমব্রমের বাড়িতে ঢুকে পড়লেন এক যুবক। এরপরে ঝাড়গ্রাম শহর লাগোয়া কন্যাডোবা গ্রামে কুনারের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকাবাসী। তবে কুনার ওই সময় বাড়িতে ছিলেন না। ছিলেন কুনারের স্ত্রী ও দুই মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে ঝাড়গ্রাম শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সারদাপল্লি এলাকার বাসিন্দা দীনবন্ধু মিত্র নামে এক ব্যক্তিকে কাটারির কোপ মারার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ তিওয়ারি ও তার ভাই রাজেশ তিওয়ারির বিরুদ্ধে। রক্তাক্ত দীনবন্ধু রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। বছর আটচল্লিশের দীনবন্ধু পেশায় মাংস বিক্রেতা। বছর তেত্রিশের বিশ্বজিৎ ও তাঁর ভাই বছর তিরিশের রাজেশ পেশায় ট্রলি চালক। দীনন্ধুর সঙ্গে রাজেশের পুরনো বিবাদ ছিল। ঘটনার পরে স্থানীয়রা বিশ্বজিৎ ও রাজেশকে ধরে মারধর শুরু করেন। তখন কোনওভাবে চম্পট দেয় দুই ভাই। তাড়া খেয়ে ছুটে লাগোয়া কন্যাডোবা গ্রামে ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদের বাড়িতে ঢুকে পড়েন বিশ্বজিৎ। রাজেশ পালিয়ে যায়।

এরপর গ্রামে গুজব ছড়িয়ে যায় যে সাংসদ অভিযুক্তকে আশ্রয় দিয়েছেন। তারপরই সারদাপল্লির লোকজন দলবেঁধে কন্যাডোবা গ্রামে এসে কুনারের বাড়ি ঘেরাও করে। সাংসদের স্ত্রী মিনতি হেমব্রম বলেন, ‘‘বাড়িতে তখন আমি ও দুই মেয়ে ছিলাম। আচমকা এক যুবক উদভ্রান্তের মতো আমাদের বাড়িতে ঢুকে লুকোনোর চেষ্টা করতে থাকে। এ দিকে কয়েকশো লোকজন আমাদের বাড়ি ঘিরে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন।’’ আতঙ্কিত হয়ে স্বামীকে ফো‌ন করেন মিনতি। কুনার খবর দেন ঝাড়গ্রাম থানায়। পুলিশ এসে বিশ্বজিৎকে উদ্ধার করে। সেই সময়ে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা তার উপরে চড়াও হন। বিশ্বজিৎকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে পুলিশ। গুরুতর জখম দীনবন্ধুও সেখানে চিকিৎসাধীন।

কুনার বলেন, ‘‘আমি ঘটনার বিন্দুবিসর্গ জানি না। প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে বান্দোয়ানের বরাবাজারে গিয়েছিলাম। আচমকা ঝাড়গ্রাম শহরের ওই যুবক স্থানীয় লোকজনের তাড়া খেয়ে আমার বাড়িতে ঢুকে পড়েন। আমি ওই অভিযুক্তকে আশ্রয় দিয়েছি, এমন গুজব ছড়ানোয় আমার বাড়ি ঘিরে কিছু লোক বিক্ষোভ দেখায়। পুলিশের হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে।’’ এই ঘটনার পরে তাঁর বাড়িতে নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েনের জন্য জেলা পুলিশ-প্রশাসনিক মহলে চিঠি দেবেন বলে জানিয়েছেন কুমার। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Violence Kunar Hembram BJP MLA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE