Advertisement
০২ মে ২০২৪
Fishing Trawlers

উঠছে না মাছ, বসে যাচ্ছে ট্রলার

মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দিঘা এবং সংলগ্ন এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ট্রলার রয়েছে। যার মধ্যে হাজার দুয়েক ট্রলার শুধুমাত্র ইলিশের উপরে নির্ভর করে।

সমুদ্রে মাছ ধরতে যাচ্ছে না বহু ট্রলার।

সমুদ্রে মাছ ধরতে যাচ্ছে না বহু ট্রলার। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দিঘা শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:০১
Share: Save:

বছর ভর সে রকম ভাবে দেখা মেলেনি ইলিশের। শীতের শুরুতে অন্য সামুদ্রিক মাছের আমদানি হলেও মিলছে না বাজার মূল্য। আর্থিক লোকসান ঠেকাতে দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাচ্ছে না বহু ট্রলার। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে গঙ্গোৎসবের আবহে মন খারাপ মৎস্যজীবীদের। গত বছর নভেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে বসে গিয়েছে কয়েকশো মাছ ধরা ট্রলার। ৪০ শতাংশ ট্রলার মৎস্যবন্দর গুলিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি।

দিন দুয়েক আগে ফিরে এসেছে বেশ কিছু ট্রলার। তবে, তারও আগে থেকে দিঘা মোহনা, শঙ্করপুর কিংবা কাঁথি র শৌলা এবং পেটুয়াঘাট মৎস্য বন্দরে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে কয়েকশো ট্রলার। ট্রলার মালিকদের কথায়,‘‘সামুদ্রিক মাছের রফতানি মূল্য কমছে তরতর করে। তার সঙ্গে রয়েছে ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি।’’ কার্যত আর্থিক লোকসানের কথা ভেবে মালিকেরা বহু ট্রলার বন্ধ রেখেছেন।

মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দিঘা এবং সংলগ্ন এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ট্রলার রয়েছে। যার মধ্যে হাজার দুয়েক ট্রলার শুধুমাত্র ইলিশের উপরে নির্ভর করে। গত বছর দেড় হাজারের বেশি ট্রলার মরসুমের শুরু থেকেই ইলিশের সন্ধানে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিল। কিন্তু মাছ সে ভাবে পায়নি। দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, ‘‘প্রকৃতি এ বার বিমুখ। সমুদ্রে ইলিশের দেখা মেলেনি। অন্য সামুদ্রিক মাছও পাওয়া যাচ্ছে না। পমফ্রেট এবং চিংড়ির মতো মাছ পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলিরও দাম একেবারে নেই বললেই চলে। চিন, জাপান সহ বিদেশে ওইসব মাছ রফতানি আটকে গিয়েছে। তার উপর যোগ হয়েছে পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ভাল নয়।’’

নভেম্বরের শুরুতে শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে নানা রকম সামুদ্রিক মাছের আমদানি বৃদ্ধি পায়। এ বার পরিস্থিতি অন্য। দিঘা ফিশারমেন এন্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রণব কর বলছেন," সারা দেশে মাছ খাওয়ার ক্ষেত্রে বাঙালীদের স্থান চতুর্থ। তার মধ্যে আবার সামুদ্রিক মাছ খান এ রকম লোকের সংখ্যা অত্যন্ত কম। তাই অধিকাংশ মাছ রফতানি করা হয়। কিন্তু সে ক্ষেত্রে মাছের দাম এতটাই কমছে যে, কারবার চলছে না। গত বছর নভেম্বরের শেষ থেকে ধাপে ধাপে ৪০ শতাংশ ট্রলার সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছে।’’

মৎস্যজীবী শম্ভু লায়া, কার্তিক গায়েনের কথায়,"নদীর দেবী হিসেবে গঙ্গা পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এক মাস ধরে ট্রলার বন্ধ। পুজোয় অংশ নেবো না কি পরিবারের লোকেদের মুখে অন্ন তুলে দেবো!" রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী এ ব্যাপারে বলেন,"মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৎস্যজীবীদের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন। উৎসবের দিনগুলোতে মৎস্যজীবীদের পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে দফতর এবং সংগঠনগুলি উদ্যোগী হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fishermen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE