মাওবাদীদের নামে পোস্টার। নিজস্ব চিত্র।
ছত্রধর মাহাতোদের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণার দু’দিনের মধ্যেই মাওবাদী নামাঙ্কিত বেশ কিছু পোস্টার উদ্ধার হল শালবনি থানার বাগমারির জঙ্গলে। শুক্রবার সকালে যৌথ বাহিনী গিয়ে ওই পোস্টারগুলি উদ্ধার করে আনে। সাদা কাগজের উপর লাল কালিতে লেখা ওই পোস্টারগুলির একটিতে লেখা, ‘ছত্রধর মাহাতোদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হল কেন বাংলার দিদি জবাব দাও’, আবার আর একটিতে লেখা, ‘কিষেনজিকে কেন আলোচনার নাম করে মারা হল, বাংলার দিদি জবাব দাও’। ‘লালগড় বিদ্রোহের পথে সব মানুষকে এক হওয়া’র আহ্বানও জানানো হয়েছে কয়েকটি পোস্টারে।
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গত মঙ্গলবার যাবজ্জীবন সাজা শোনানো হয়েছে জনগণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতো-সহ ছ’জনকে। তারপরই এমন বয়ানে পোস্টার মেলায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ অবশ্য বলেন, “কিছু পোস্টার মিলেছ। তবে এগুলো মাওবাদীদের নয়। স্থানীয় কয়েকজন এ কাজ করে থাকতে পারে। তদন্ত হচ্ছে।”
এ দিন উদ্ধার হওয়া একটি পোস্টারে লেখা, ‘জিন্দলদের কারখানা বন্ধ হল কেন জবাব দাও’। অথচ গোড়া থেকেই মাওবাদীরা প্রস্তাবিত এই ইস্পাত প্রকল্পের বিরোধী। জিন্দল-প্রকল্পের শিলান্যাসের দিন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয়ে মাইন বিস্ফোরণও হয়। ফলে, এ দিনের পোস্টার মাওবাদীরা দেয়নি বলেই মনে করছে পুলিশ। তৃণমূলের শালবনি ব্লক সভাপতি নেপাল সিংহেরও বক্তব্য, “কিছু লোক সব সময় বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ খোঁজে। এটা তেমনই স্থানীয় কয়েকজনের কাজ।” পুলিশের একাংশ মনে করছে, তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ কর্মীদের কেউ এ কাজ করে থাকতে পারে। পুলিশের একাংশ অবশ্য বিষয়টিকে খুব হালকা ভাবে দেখতে নারাজ। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “ছত্রধরদের সাজা হল। তার পরপরই এই পোস্টার। বিষয়টিকে খুব হালকা ভাবে নিলে ভুল হবে।” তাই জঙ্গলমহলের প্রতিটি থানাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
গত মঙ্গলবারই এক মামলায় ছত্রধর মাহাতো-সহ জনগণের কমিটির ৬ জন নেতাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে মেদিনীপুর আদালত। সাজা শুনে ছত্রধরের মন্তব্য ছিল, ‘জঙ্গলমহলের মানুষ এর জবাব দেবে।’ এ দিন উদ্ধার হওয়া পোস্টারগুলিতেও সেই এক সুর। প্রায় প্রতিটি পোস্টারে তৃণমূলকে নিশানা করা হয়েছে। কোনওটিতে লেখা, ‘বাংলায় দেওয়া প্রতিশ্রুতি কোথায় গেল বাংলার দিদি জবাব দাও’, কোনও পোস্টারে লেখা, ‘সিআরপি তোলা হচ্ছে না কেন বাংলার দিদি জবাব দাও’। আবার কোনও পোস্টারে লেখা, ‘কিষেনজির বদলা আমরা নেবোই’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy