এক সপ্তাহ হল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোতে স্নাতকের ফলপ্রকাশ হয়েছে। এখনও মার্কশিট ও শংসাপত্র হাতে পাননি পড়ুয়ারা। অথচ, স্নাতকোত্তরে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে, ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীরা।
সাধারণত ফলপ্রকাশের পরেই মার্কশিট ও শংসাপত্র দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এ বার এক সপ্তাহ পরেও কেন তা দেওয়া গেল না? সদুত্তর এড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক অসীমকুমার সরকার বলেন, ‘‘শীঘ্রই ছাত্রছাত্রীরা মার্কশিট ও শংসাপত্র পেয়ে যাবে।’’ তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এ বার নতুন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই এ ক্ষেত্রে একটু দেরি হচ্ছে।
গত ৯ জুন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএসসি, বিএ, বিকম পার্ট- থ্রি’র ফলপ্রকাশ হয়। ফলপ্রকাশে গড়িমসির অভিযোগ নতুন নয়। বেশি দেরিতে ফলপ্রকাশ হলে ছাত্রছাত্রীরা সমস্যায় পড়েন। এ বার তাই পরীক্ষা শেষের ৫০ দিনের মাথায় পার্ট- থ্রি’র ফলপ্রকাশে উদ্যোগী হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই মতো কাজ এগোয়। পরীক্ষা শেষের ৪৯ দিনের মাথায় ফলপ্রকাশ হয়।
একাধিক ছাত্র সংগঠনের ব্যাখ্যা, তড়িঘড়ি ফলপ্রকাশ করতে গিয়ে এ বার মার্কশিট-শংসাপত্র তৈরি করতে পারেননি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার ফলেই এই পরিস্থিতি। এসএফআই নেতা সৌমিত্র ঘোড়ই বলেন, “সাধারণত, যে দিন ফল বেরোয় সে দিনই কলেজ থেকে ছাত্রছাত্রীরা মার্কশিট-সার্টিফিকেট পেয়ে যান। এ বার তা না হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা সমস্যায় পড়ছে।’’ একই দাবি ছাত্র পরিষদ নেতা মহম্মদ সইফুলের। ডিএসও নেতা দীপক পাত্র বলেন, “স্নাতকোত্তরে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। অথচ, স্নাতক উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীরা এখনও মার্কশিট-সার্টিফিকেট হাতে পেলেন না। অবাক ব্যাপার!” তাঁর কথায়, “কলেজগুলোয় মার্কশিট-সার্টিফিকেট না পৌঁছলে কী ভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়, বুঝতে পারছি না।”
অস্বস্তিতে রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদও। টিএমসিপি নেতা তথা বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক স্বদেশ সরকারের দাবি, “আগে মার্কশিট- সার্টিফিকেটে সামান্য ভুল- ত্রুটি থাকত। এ বার তা থাকবে না! বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ত্রুটিমুক্ত ফলপ্রকাশে উদ্যোগী হয়েছেন। তাই এ ক্ষেত্রে একটু দেরি হচ্ছে। এ নিয়ে এত হইচই করার কিছু নেই!” নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিকও মানছেন, ‘‘৫০ দিনের মধ্যে ফলপ্রকাশের কাজটা কঠিন ছিল। সেই কঠিন কাজটা করা সম্ভব হয়েছে। তবে এই সময়ের মধ্যে মার্কশিট- সার্টিফিকেট প্রস্তুত করা সম্ভব হয়নি। পরের বছর ফলপ্রকাশের দিনই মার্কশিট- সার্টিফিকেট দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।”
তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, এই দেরির জন্য স্নাতকোত্তরে ভর্তির আবেদন করার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ, ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে অনলাইনে। ওয়েবসাইটেও ফল দেওয়া রয়েছে। নম্বর জেনে স্নাতকোত্তরে ভর্তির জন্য আবেদন করা যেতে পারে।
ছাত্রের আবেদন। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে না পেরে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অমরকুমার শীলের দফতরে আবেদন করল দুই ছাত্র। ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া হাইস্কুলের সুরজিৎ রায় এবং বৃহস্পতি সহিস কিসমত বালিজুড়ির বাসিন্দা। বৃহস্পতি মাধ্যমিকে ২৯ শতাংশ ও সুরজিৎ ২৮ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। তাদের ছাত্রের কথায়, “আমরা জঙ্গলমহলের ছাত্র। ভর্তির সুযোগ না পেলে উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy