রকমারি: ফলের পসরা। মেদিনীপুর এলআইসি মোড়ে। নিজস্ব চিত্র
করোনার কোপে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোও। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেশিরভাগ বনেদি বাড়িতেই এ বার শুধু প্রথা মানার লক্ষ্মীপুজো। আর সেই পুজোর ফর্দে এ বার যোগ হয়েছে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার, সাবান।
মেদিনীপুর শহরের চিড়িমারসাইয়ের দাস পরিবারের কোজাগরি লক্ষ্মীপুজো ৭০ বছরের পুরনো। অন্য বছর সেখানে ঢাক, ঢোল, খোল, কীর্তন, ব্যান্ড, সানাই সহযোগে পুজো হয়। এবার থাকবে শুধু একটি ঢাক। থাকছে না খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা। অধিকাংশ আত্মীয়ও আসছেন না। পরিবারের সদস্য মানস দাস বলেন, ‘‘এবার করোনার জন্য আয়োজন অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছি। অন্যবার ৩০ ফুটের মণ্ডপ হলেও এই বার ১০ ফুটের করছি। মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থাও থাকবে।’’
মেদিনীপুর শহরের আবাস এলাকার এক বনেদি পরিবারের কর্তা অশোক চক্রবর্তীর প্রার্থনা, ‘‘করোনা থেকে মুক্ত হোক সবাই। তারপর ঘটা করে পুজোর আয়োজন করব।’’ গড়বেতার রাধানগরের চন্দ্র পরিবারের কোজাগরি লক্ষ্মীপুজো এবার ১১০ বছরে পড়ল। এ বার সেই পরিবারের পুজোর ফর্দে যোগ হয়েছে মাস্ক, সাবান আর স্যানিটাইজ়ারের হিসেব। পরিবারের সদস্য তাপস চন্দ্র মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আমন্ত্রিতদের মাস্ক, হাত ধোয়ার সাবান, স্যানিটাইজ়ার দিতে হবে। তাই ফর্দে সেগুলো রাখা হচ্ছে।’’ চন্দ্র পরিবারের লক্ষ্মীপুজোয় প্রতি বছরই ঢাকের লড়াই, আড়বাঁশি প্রতিযোগিতা, বাউল, গুণিজন সংবর্ধনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো। করোনা কালে সেই সবও বন্ধ বলে জানান ওই পরিবারের আরেক সদস্য অশোক চন্দ্র।
ধাদিকার কালিকাশোলে মণ্ডল পরিবারের লক্ষ্মীপুজোর বয়স এ বার ৭৪ বছর। সেখানেও আয়োজনে কাটছাঁট। হবে না আত্মীয় সমাগম। ওই পরিবারের সদস্য দেবকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মেনেই সব কিছুর আয়োজন করা হচ্ছে। পুজো মণ্ডপে স্যানিটাইজ়ার-সহ বারবার হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকবে। বিনা মাস্কে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।’’
মেদিনীপুর শহরের খাপ্রেলবাজারের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের প্রবীণ সদস্য ৭৫ বছরের প্রণন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি নিজে বয়স্ক। নাতিপুতিরাও ছোট ছোট। তাই করোনাকালের পুজোয় বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়ও তেমন ডাকছি না।’’ শালবনির বীরকাঁড় গ্রামের সিংহ পরিবার তাদের লক্ষ্মী মন্দির থেকেই মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার বিলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পরিবারের কোজাগরি লক্ষ্মীপুজো একশো বছরেরও বেশি পুরনো। পরিবারের সদস্য আশিস সিংহ বলেন, ‘‘আমরা গ্রামের মানুষকে সচেতন করব। দূরত্ব বিধি মেনেই পুজোর প্রস্তুতি সারা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy