শহরের রেশন জট কাটাতে এ বার দফতরের জেলা নিয়ামক ও খড়্গপুরের পুরপ্রধানকে কলকাতায় ডেকে পাঠাল খাদ্য ও সরবরাহ দফতর। আগামী সোমবার খড়্গপুরের রেশন জট নিয়ে কলকাতায় আলোচনায় বসবেন দফতরের আধিকারিকেরা। সেখানেই ডাকা হয়েছে জেলা নিয়ামক সুকমল পণ্ডিত ও পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারকে।
প্রায় এক মাস ধরে খড়্গপুর শহরে দাবি মতো রেশন সামগ্রী বরাদ্দ না হওয়ার প্রতিবাদে দোকান খুলছেন না রেশন ডিলারেরা। সমস্যা সমাধানের আশ্বাসের পরেও বরাদ্দ না দেওয়ায় ডিলাররা নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তোড়জোড় করছেন তাঁরা। এমন পরিস্থিতিতে খাদ্য-সরবরাহ দফতরের জেলা নিয়ামক বৈঠক ডাকলেও ডিলারদের প্রতিনিধিরা যাননি। এখন কলকাতার বৈঠকে জট কাটে কি না, সে দিকেই তাকিয়ে খড়্গপুরবাসী।
ডিজিট্যাল কার্ড নিয়েই খড়্গপুরে রেশন সমস্যা দেখা দিয়েছে। শহরের সব রেশন গ্রাহক ডিজিট্যাল কার্ড না পৌঁছনোর কারনে সমস্যা চরমে পৌঁছেছে। কারণ, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে রেলশহর খড়্গপুরে ডিজিট্যাল রেশন কার্ডধারীদের রেশন বিলি হবে বলে জানিয়েছিল
খাদ্য দফতর।
এখনও পর্যন্ত সাড়ে তিন লক্ষ জনসংখ্যার এই শহরে মাত্র ১ লক্ষ ১০ হাজার মানুষ ডিজিট্যাল রেশন কার্ড হাতে পেয়েছেন। এ ছাড়াও আরও ৭৬ হাজার নতুন রেশন কার্ড এলেও বিলি করা যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র ডিজিট্যাল কার্ডে সামগ্রী বিলি হলে চটে যাবে ডিজিট্যাল কার্ড হাতে না পাওয়া গ্রাহকেরা। সেই সঙ্গে ডিজিট্যাল কার্ডের নিরিখে সামগ্রী বরাদ্দ হলে মুনাফার বদলে লোকসানের মুখে পড়ার আশঙ্কা করছে ডিলারেরা। তাই সেপ্টেম্বরে ঘটনাটি নিয়ে সরব হলে নতুন-পুরনো সমস্ত রেশন গ্রাহক সামগ্রী পাবে বলে জানিয়েছিল খাদ্য দফতর। তবে অক্টোবরে ফের ডিজিট্যাল কার্ড ছাড়া সামগ্রী বিলি হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেয় খাদ্য দফতর। এই নিয়ে পুরপ্রধানের কাজে ডিলারেরা গেলে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করে সমস্ত রেশন গ্রাহক সামগ্রী পাবে বলে আশ্বাস দেন পুরপ্রধান। কিন্তু মাস শেষ হতে চললেও সেই পরিমাণ বরাদ্দ না পাওয়ায় দোকান খোলেনি ডিলারেরা। বিঘ্নিত হয়েছে রেশন বন্টন ব্যবস্থা।
এতে চাপের মুখে পড়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক ডেকেছিলেন খাদ্য সরবরাহ দফতরের জেলা নিয়ামক। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পুরপ্রধান। কিন্তু ডাক পেলেও বৈঠকে হাজির হননি ডিলারেরা। তাঁদের দাবি, বৈঠক শুরুর কয়েক ঘন্টা আগে ডাকায় তাঁরা যেতে পারেননি। যদিও সমস্যা বুঝে খাদ্য দফতরে চিঠি পাঠিয়েছেন জেলা নিয়ামক। এর পরেই আগামী সোমবার জেলা নিয়ামক ও পুরপ্রধানকে খাদ্য দফতরের বিশেষ সচিব শুভ্র চক্রবর্তী ডেকে পাঠিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পুরপ্রধান প্রদীপবাবু এ দিন বলেন, “এখন অধিকাংশ মানুষ ডিজিট্যাল কার্ড পেয়ে গিয়েছেন। ডিজিট্যাল কার্ডের নিরিখে যে সামগ্রী বরাদ্দ হবে তাতে ডিলারেরা দোকান খুলতেই পারেন। ডিলাররা অকারণে সমস্যা তৈরি করছেন।’’
আর খাদ্য দফতরের জেলা নিয়ামক সুকমলবাবুর বক্তব্য, “খড়্গপুরের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে আমাদের দফতরের বিশেষ সচিব সোমবার আমাকে ডেকেছেন।”
যদিও এখনও ওই আলোচনায় ডাক পাননি বলে দাবি করেছেন ডিলারেরা। খড়্গপুর রেশন ডিলার অ্যাসোশিয়েশনের সম্পাদক শিশির রায় বলেন, “আমাদের এখনও কলকাতায় ডাকা হয়নি। পুরপ্রধান কি আমাদের সমস্যার কথা বলতে পারবেন? আমাদের ছাড়া আলোচনা করে লাভ কী!’’ সোমবারই তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানান শিশিরবাবু।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy