বিধানসভা ভোটের পরে এই প্রথম পশ্চিম মেদিনীপুরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, মঙ্গলবার বিকেলে মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠক রয়েছে তাঁর। কাল, বুধবার দুপুরে করবেন দলীয় সভা। মুখ্যমন্ত্রীর এই জেলা সফর ঘিরে তটস্থ পুলিশ-প্রশাসন, জেলা তৃণমূলও। মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খাওয়ার ভয়ে কাঁটা হয়ে রয়েছেন পুলিশ, প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ। জেলা তৃণমূল নেতাদের একাংশও। মনে করা হচ্ছে, ‘ইমিডিয়েট অ্যাকশন নিন’- একাধিক প্রসঙ্গে এমন বার্তা দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
সংশ্লিষ্ট মহলের অনুমান, প্রশাসনিক বৈঠকে গাছ পাচারের প্রসঙ্গ উঠতে পারে। সম্প্রতি নবান্নে এক বৈঠকে গড়বেতার গাছ পাচার কাণ্ড নিয়ে পুলিশের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা ছিল, ‘‘আমি পরিষ্কার বলছি, এই সব কেসে রং দেখার দরকার নেই। যদি ইনফরমেশন কারেক্ট হয়, ইউ টেক স্ট্রং অ্যাকশন। আমাদের পক্ষ থেকে কেউ আপনাকে বাধা দেবে না।’’ তার পর গড়বেতার ওই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি, গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান। শুরুতে তদন্ত যথাযথ না হওয়ায় তদন্তকারী অফিসার বদল করতে হয়েছে। গড়বেতা ৩ ব্লকের কড়সায় ২৭০টি গাছ কাটার অনুমতি নিয়ে ৩ হাজারেরও বেশি গাছ কাটার পিছনে প্রায় কোটি টাকার দুর্নীতি রয়েছে বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি শালবনির পিরাকাটায় মাওবাদীদের নাম করে দেওয়া হাতে লেখা পোস্টার উদ্ধারের তদন্তেরও বিশেষ অগ্রগতি হয়নি। ওই পোস্টারে নিশানা করা হয়েছিল তৃণমূল নেতাদেরই। তবে তার কিনারা কেন করতে পারছে না পুলিশ, প্রশ্ন উঠছে। গড়বেতার গনগনিতেও এমন পোস্টার উদ্ধার হয়েছিল। সেই ঘটনায় অবশ্য আটজন দুষ্কৃতীকে ধরেছে পুলিশ। মনে করা হচ্ছে, পোস্টারের প্রসঙ্গও প্রশাসনিক বৈঠকে উঠতে পারে। তা ছাড়া, মেদিনীপুর, খড়্গপুরের মতো শহরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে অভিযোগ। চুরি- ছিনতাই হচ্ছে। মেদিনীপুরে পিটিয়ে খুনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। ক’মাস আগে শহরে গুলি চালনার ঘটনাও ঘটেছে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে অস্ত্রশস্ত্র, মাদক। মেদিনীপুর গ্রামীণের ছেড়ুয়ায় বাজি বিস্ফোরণে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে দু’বছরের এক শিশুর, তার মায়ের। নানা ঘটনায় স্বভাবতই প্রশ্নের মুখে পড়েছে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা।