Advertisement
০৪ মে ২০২৪

দেড় বছর পরে হদিশ মিলল নিখোঁজের

দেড় বছর আগে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন মূক ও বধির মানুষটি। লেখাপড়া জানেন না, নিজের কথা বোঝাতেও পারেন না। তাই ঠাঁই হয়েছিল হাওড়ার হোমে।

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৩৬
Share: Save:

দেড় বছর আগে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন মূক ও বধির মানুষটি। লেখাপড়া জানেন না, নিজের কথা বোঝাতেও পারেন না। তাই ঠাঁই হয়েছিল হাওড়ার হোমে। সহ-আবাসিকদের সঙ্গে দিঘায় বেড়াতে গিয়ে হঠাৎ রাস্তায় দেখা নিজের প্রতিবেশীর সঙ্গে। নতুন করে আশায় বুক বাঁধছেন পরিবারের লোকজন।

২০১৫ সালের ঘটনা। ২৮ এপ্রিল কোলাঘাটের বড়িশা গ্রামের বাসিন্দা বছর আটচল্লিশের রামপদ দাস কাজে বেরিয়েছিলেন। জন্ম থেকেই মূক-বধির রামপদবাবু ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করতেন। কিন্তু সে দিন আর বাড়ি ফেরেননি। পরে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে পরিবার। প্রায় দেড় বছর তাঁর কোনও খোঁজ ছিল না। চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি কোলাঘাটের একটি ধাবায় খেতে আসে পর্যটক বোঝাই একটি বাস। দিঘা বেড়াতে গিয়েছিলেন হাওড়ার জগদ্বল্লভপুরের একটি হোমের বাসিন্দারা। ফেরার পথে তাঁদের নামানো হয়েছিল ওই ধাবায়। তাঁদেরই একজন হঠাৎ দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন ধাবার কর্মী প্রদীপ মাজিকে। চিনতে অসুবিধা হয়নি, মানুষটি রামপদ, প্রদীপবাবুর দীর্ঘদিনের প্রতিবেশী।

হোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রদীপবাবু জানতে পারেন ২০১৫ সালে থেকেই জগদ্বল্লভপুরের ওই হোমে থাকছিলেন রামপদবাবু। কিন্তু কী ভাবে হাওড়া পৌঁছে গেলেন? এত বছর ধরে ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করছেন যে মানুষটি তিনি কী ভাবে হঠাৎ একদিন নিখোঁজ হয়ে গেলেন? সে সব প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।

রামপদবাবুর ভাই নিমাই দাস বলেন, ‘‘কী ভাবে কোলাঘাট পেরিয়ে হাও়ড়ায় চলে গেলেন জানি না। তবে দাদা তো লেখাপড়া জানে না, বলতে বা শুনতে পায় না। তাই কাউকে হয়তো বুঝিয়ে বলতে পারেননি পরিচয়।’’ নিমাইবাবু জানান, ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিলই জগদ্বল্লভপুর থানার পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। আদালতের নির্দেশে ১ মে থেকে রামপদবাবু থাকতে শুরু করেন ওই হোমে। গত দেড় বছরে রামপদবাবুর এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। স্ত্রী লক্ষ্মী দাসকে পরিবারের কাছে শুনতে হয়েছে অনেক গঞ্জনা। অনেকেই সে সময় ধরে নিয়েছিলেন কোনও কারণে খুন হয়ে গিয়েছেন রামপদবাবু। কিন্তু সে সব কিছুকে মিথ্যা প্রমাণ করে ফিরে এসেছেন রামপদবাবু। এ বার অপেক্ষা তাঁর ঘরে ফেরার।

নিমাইবাবু বলেন, ‘‘হাওড়া আদালতে গিয়েছিলাম। পুলিশি রিপোর্ট পেলেই দাদাকে ছেড়ে দেবে। আমরা পুলিশের সঙ্গে দেখা করে সব ব্যবস্থা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Missing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE