Advertisement
E-Paper

এশিয়া কাপের পর বিশ্বজয়ের লক্ষ্য মণিকার

ব্যাঙ্ককে আয়োজিত এশিয়া কাপের তিরন্দাজি বিভাগে ব্রোঞ্জ জিতল নয়াগ্রামের মণিকা। লক্ষ্য এ বার বিশ্ব জয়ের। আগামী ৭-৯ এপ্রিল দিল্লিতে ওয়ার্ড লেবেল ট্রায়াল কমপিটিশনে যোগ দেবেন তিনি। তাই এখন জোর কদমে চলছে প্রস্তুতি। গত ১৭-২১ মার্চ মাসে ব্যাঙ্ককে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে তিরন্দাজি বিভাগে ব্রোজ জেতে ভারত। ওই দলেরই সদস্য ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মণিকা, পঞ্জাবের মধু ভেদোয়ান ও আসামে হিমানি বোরো। ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রামের বড়খাগড়ি জন কল্যাণ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী মনিকা সরেন।

সৌমেশ্বর মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৫ ০০:৫২
পদক হাতে কোচের সঙ্গে মণিকা সরেন (ডান দিকে)।—নিজস্ব চিত্র।

পদক হাতে কোচের সঙ্গে মণিকা সরেন (ডান দিকে)।—নিজস্ব চিত্র।

ব্যাঙ্ককে আয়োজিত এশিয়া কাপের তিরন্দাজি বিভাগে ব্রোঞ্জ জিতল নয়াগ্রামের মণিকা। লক্ষ্য এ বার বিশ্ব জয়ের। আগামী ৭-৯ এপ্রিল দিল্লিতে ওয়ার্ড লেবেল ট্রায়াল কমপিটিশনে যোগ দেবেন তিনি। তাই এখন জোর কদমে চলছে প্রস্তুতি।

গত ১৭-২১ মার্চ মাসে ব্যাঙ্ককে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে তিরন্দাজি বিভাগে ব্রোজ জেতে ভারত। ওই দলেরই সদস্য ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মণিকা, পঞ্জাবের মধু ভেদোয়ান ও আসামে হিমানি বোরো। ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রামের বড়খাগড়ি জন কল্যাণ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী মনিকা সরেন। আর্থিক আনটনের মধ্যেও গত আড়াই বছর ধরে কলকাতায় সাই কমপ্লেক্সের প্রশিক্ষকের কাছে অনুশীলন করেছেন মণিকা। ব্যাঙ্কক যাওয়ার আগে দিল্লির ক্যাম্পে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।

বাড়ির দেড়বিঘে এক ফসলি জমির ধান বিক্রির টাকা নিয়ে ব্যাঙ্ককের প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিলেন মণিকা। দিল্লি থেকে টেলিফোনে মণিকা বলেন, “প্রথম ইন্টারন্যাশানাল প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে একটু ভয়ই করছিল। কোচ বলেছিলেন, নিজের খেলাটা খেলে দে, তাহলেই হবে। আর তাতেই সাফল্য আসে।” আরও বলেন, “ধান বিক্রির টাকা দিয়ে প্রতিযোগিতায় এসেছিলাম। বাড়ি ফিরে বাবার সামনে হাসি মুখে দাঁড়াতে পারব, এটাই শান্তি।” এ বার? ফোনের ওপারে শুধু উত্তর আসে ‘ওয়ার্ড লেবেল ট্রায়ালে পাশ করা’।

কিন্তু স্বপ্ন থাকলেই তো নানা দুঃস্বপ্নও ভিড় করে। আঠারো পেরনো মণিকা এখন দুঃস্বপ্ন অনুশীলন চালিয়ে যাওয়াটাই। বয়স ২০ পেরোলেই সাই থেকে আর অনুশীলন করা যাবে না। তখন তিনি কী করবেন? চিন্তার মেঘ জমে মণিকার গলায়। বললেন, “আমার নিজের উন্নত প্রযুক্তির ধনুক ও অইয়ারো নেই। সাই থেকে দেওয়া ধনুক নিয়ে প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিলাম। রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করব উন্নত মানের সরঞ্জাম সাহায্য করার জন্য।” তবে আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা।

পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) সুশান্ত চক্রবর্ত্তী মণিকার সাফল্য কামনা করে বলেন, “মণিকার অনুশীলনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ব্যাপারে উচ্চস্তরে জানাব।” তবে পশ্চিমবঙ্গ আরচারি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রূপেশ কর বলেন, “আমরা ২০০৭ সালের পর থেকে সরকারি সাহায্য পাইনি। টাকার অভাবে আমাদের ক্যাম্পগুলিতে ভাল সরঞ্জাম দিতে পারি না। একটি ঘরের জন্য আবেদন করেও সাড়া মেলে নি”

মণিকার কোচ শাশ্বতী গঙ্গাধর বলেন, “ব্যাঙ্ককে মণিকা খুব ভাল খেলেছে। আশা করি ওয়ার্ড লেবেল ট্রায়ালেও ভালো ফল করবে।” গ্রামের মেয়ের এ হেন সাফল্যে খুশি তাঁর বিদ্যালয়ের সকরলেই। ক্রীড়া শিক্ষক সৌমিত্র বিশ্বাস বলেন, “জঙ্গলমহলের মেয়েরা ভাল তীর-ধনুক চালায়। তাই বিশ্বাস ছিল, মণিকা ভাল ফল করবে। জেলাস্তর থেকে অনুশীলনের জন্য আরও ভাল তীর-ধনুক পেলে ফল আরও ভাল হবে।”

delhi Asia cup west bengal archery Bangkok punjab India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy