Advertisement
E-Paper

খেতে দেয় না ছেলে-বৌমা, প্রশাসনের কাছে বৃদ্ধা

বৃদ্ধার কান্না শুনে দফতরের কর্মী ও অফিসে কাজে আসা মানুষজন জড়ো হয়ে যান। বৃদ্ধার সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই বিবাহিত মেয়ে পারুল বেগম ও সোহিমা বিবি। ছিলেন প্রতিবেশী শেখ রিয়াজুল উদ্দিন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৮ ০১:১৬
অসহায়: মহকুমাশাসকের দফতরে আরফুনাহার বেগম। নিজস্ব চিত্র

অসহায়: মহকুমাশাসকের দফতরে আরফুনাহার বেগম। নিজস্ব চিত্র

অসুস্থ স্বামী শয্যাশায়ী। ছেলে ও বৌমা খেতে পরতে দেয় না। নির্যাতন করে। এমনকী শেষ সম্বল বাড়ি ও বাস্তুজমি বিক্রি করে বাইরে চলে যাওয়ার চক্রান্ত করছে ছেলে। এই অবস্থায় অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে তিনি অসহায়। কী করবেন বুঝতে পারছেন না।

নিজের ছেলের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ নিয়ে বৃহস্পতিবার কাঁথির মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হলেন কিশোরনগরের বৃদ্ধা আরফুনাহার বেগম। এ দিন মহকুমাশাসকের দফতরে এসে বৃদ্ধা তাঁর দুরবস্থার কথা জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বৃদ্ধার কান্না শুনে দফতরের কর্মী ও অফিসে কাজে আসা মানুষজন জড়ো হয়ে যান। বৃদ্ধার সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই বিবাহিত মেয়ে পারুল বেগম ও সোহিমা বিবি। ছিলেন প্রতিবেশী শেখ রিয়াজুল উদ্দিন।

মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধা আরফুনাহার বেগম জানান তাঁর স্বামী সেখ আবুল দপ্তরী দীর্ঘদিন ধরে নার্ভের অসুখে শয্যাশায়ী। জায়গা-জমি বিক্রি করে একমাত্র ছেলে সফিউলকে কাঁথি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে ওষুধের দোকান করে দেন তিনি। বছর খানেক আগে ছেলের বিয়ে দেন। তারপর থেকেই সমস্যার শুরু। আরফুনাহার বেগমের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই ছেলে ও বৌমা তাঁর উপর অত্যাচার শুরু করে। তাঁকে ঠিকমতে খেতে দিত না ছেলে-বৌমা। দিনের পর দিন অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তিনি বাধ্য হয়ে প্রতিবেশী শেখ রিয়াজুল উদ্দিনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এ দিন মহকুমা শাসককে তিনি বলেন, ‘‘ছেলে শেষ সম্বল বাড়ি ও বাস্তুজমি ভুল বুঝিয়ে লিখিয়ে নিয়েছে। এখন সেই বাড়ি ও জমি বিক্রি করে দিতে চাইছে। বাড়ি বিক্রি করে দিলে আমি অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে কোথায় যাব?’’

দুই মেয়ে পারুল ও সোহিমার অভিযোগ, ‘‘দাদা মাকে দেখে না। অত্যাচার করে। এই নিয়ে আমরা কিছু বললে মায়ের উপরে নির্যাতন আরও বাড়ে। তাই আর বাপের বাড়িতে যাই না।’’

আরও পড়ুন: চার বিচারকের বিবৃতিকেই অস্ত্র

প্রতিবেশী শেখ রিয়াজুল উদ্দিন বলেন, “সফিউলকে অনেকবার বুঝিয়েছি। কিন্তু সে শোনেনি। নিরুপায় হয়েই ওই বৃদ্ধা কাঁদতে কাঁদতে আমার কাছে এসে আশ্রয় চান।’’

সফিউল অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাঁর দাবি, ‘‘সব মিথ্যা কথা। আমার ছোট বোন ও জামাই চক্রান্ত করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ছোট জামাইকে মোটা টাকা ধার দিয়েছিলাম। সেই টাকা চাইতে যেতেই বিপত্তি বাধে।’’ তাঁর বিরুদ্ধে বাড়ি নিজের নামে লিখিয়ে নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে সফিউলের দাবি, ‘‘বাড়িটা মা আমাকে দানপত্র করেছেন। ব্যাঙ্কে ঋণ নেওয়া আছে। তাই বাড়ি বিক্রির প্রশ্নই নেই। মাকে কিছু লোক ভুল বোঝাচ্ছে। বাবার চিকিৎসাও করাচ্ছি। আসলে আমার স্ত্রীকে ওদের পছন্দ নয়। তাই এ সব চক্রান্ত করছে।’’

মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই বৃদ্ধাকে ভরণপোষণের মামলা ও লিখিত অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Woman Police SDO
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy