Advertisement
০৯ মে ২০২৪
মিলল লুঠের সোনা

জয়পুরে খুন, দাসপুরে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত

তদন্তে সূত্র বিশেষ কিছু ছিল না। সম্বল বলতে ছিল মাত্র দু’টি মোবাইল নম্বর। আর এটুকু জানা ছিল যে, রাজস্থানের জয়পুরের এক গয়না ব্যবসায়ীকে খুন করে কয়েক কোটি টাকার গয়না হাতিয়ে পশ্চিমবঙ্গে গা-ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত।

শুভাশিস ঘটক
শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৩২
Share: Save:

তদন্তে সূত্র বিশেষ কিছু ছিল না। সম্বল বলতে ছিল মাত্র দু’টি মোবাইল নম্বর। আর এটুকু জানা ছিল যে, রাজস্থানের জয়পুরের এক গয়না ব্যবসায়ীকে খুন করে কয়েক কোটি টাকার গয়না হাতিয়ে পশ্চিমবঙ্গে গা-ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত। ওই নম্বর দু’টিকে হাতিয়ার করেই পশ্চিম মেদিনীপুরের এক গ্রাম থেকে লুঠের সোনা উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে শম্ভুনাথ শাসমল নামে এক গয়না-কারিগরকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। ধরা পড়েছে আরও চার জন।

সিআইডির আইজি সঞ্জয় সিংহ জানান, সপ্তাহখানেক আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের কোলাঘাটের দাসপুর থেকে মূল অভিযুক্ত শম্ভুনাথ-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত অন্য চার জন হলেন শম্ভুনাথের বাবা, মা, স্ত্রী এবং এক বান্ধবী। ধৃতদের ইতিমধ্যে রাজস্থানের জয়পুর পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

জয়পুর পুলিশের ডিএসপি অশোককুমার গুপ্ত বলেন, ‘‘মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুন ও ডাকাতির মামলা দায়ের করা হয়েছে।’’

সিআইডি সূত্রের খবর, গত ১৩ সেপ্টেম্বর মূলচাঁদ সোনি নামে জয়পুরের গয়না ব্যবসায়ী খুন হন। ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোগ্রাম সোনা লোপাট হয়ে যায়। প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে জয়পুর পুলিশের তদন্তকারীদের যাবতীয় সন্দেহ গিয়ে পড়ে শম্ভুনাথ নামে মূলচাঁদের এক কর্মচারীর উপরে। তার পরে এ রাজ্যের সিআইডির সঙ্গে যোগাযোগ করে রাজস্থান পুলিশ। তদন্তকারীরা শম্ভুনাথের স্ত্রী আর এক বান্ধবীর ফোন নম্বর পেয়ে যান। দাসপুরের বাসিন্দা শম্ভুনাথের তিনটি বিয়ে। বাবা-মা থাকেন হাওড়ার জগাছা থানা এলাকায়। শম্ভুর এক স্ত্রী এবং বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

মূল অভিযুক্তের ওই বান্ধবীর বাড়ির গোয়ালঘরে ঝোলানো একটি ব্যাগে আড়াই কেজি সোনার গয়না পাওয়া যায় বলেন জানান এক তদন্তকারী। জগাছায় শম্ভুনাথের বাবা-মায়ের বাড়িতে মেলে প্রায় ৭০০ গ্রাম সোনা। তার পরেই দাসপুরের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে শম্ভুনাথকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে নগদ প্রায় দু’লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা।

সিআইডির একটি সূত্র জানাচ্ছে, শম্ভুনাথকে জেরা করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, দোকানের মালিককে খুন করে সে পশ্চিম মেদিনীপুরের গ্রামে ফিরে আসে। তার পরে লুঠ করা সোনা লুকিয়ে ফেলে বাবা-মা এবং এক বান্ধবীর বাড়িতে। বছর দেড়েক আগে প্রথম জয়পুরে স্বর্ণকারের কাজ করতে গিয়েছিল শম্ভুনাথ। কিন্তু কিছু দিন পরে নিজের গ্রামে ফিরে আসে। ফের মূলচাঁদের দোকানে কাজ করতে চলে যায়। এবং দ্বিতীয় দফায় সেখানে গিয়েই ছক কষে মূলচাঁদের বাড়ি থেকে সোনা লুঠ করে। কিন্তু লুঠের সময় তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেছিলেন মূলচাঁদ। তাই প্রমাণ লোপাট করতে সে মাথায় লোহার রড মেরে মালিককে খুন করে বলে জেরায় স্বীকার করেছে শম্ভুনাথ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Gold Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE