Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Nandigram Dibas

শুভেন্দু ‘অমাবস্যার চাঁদ’, ‘লোডশেডিং বিধায়ক’! বিজেপি নেতার ‘গ্যারেজ’ মন্তব্যের পাল্টা চন্দ্রিমাদের

শুভেন্দুর সভার পর সেখান থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে ভাঙাবেড়া ব্রিজের কাছে তৃণমূল আয়োজিত কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সৌমেন মহাপাত্র, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়রা।

TMC leader Chandrima Bhattacharya bashes BJP leader Suvendu Adhikari.

শুভেন্দু অধিকারীকে ‘অমাবস্যার চাঁদ’ বলে কটাক্ষ চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের। ফাইল চিত্র ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৩ ১৬:২৭
Share: Save:

ভারতের রাজনীতিতে বিজেপিকে ‘শহিদ’ করতে হবে। সেই দল যাতে ভারতীয় রাজনীতি থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় সেই ব্যবস্থাও করতে হবে। মঙ্গলবার নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ায় ভাঙাবেড়া ব্রিজের কাছে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে হুংকার রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের। ওই কর্মসূচিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ‘অমাবস্যার চাঁদ’ বলেও কটাক্ষ করেন চন্দ্রিমা।

২০০৭ সালের ১৪ মার্চ এই ভাঙাবেড়া ব্রিজের কাছেই পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ১৪ জন সদস্যের। সেই দিনটি বরাবরই ‘শহিদ দিবস’ হিসাবে পালন করে আসছেন শুভেন্দু। তিনি বিজেপিতে যাওয়ার পর নন্দীগ্রামে একই দিনে পৃথক কর্মসূচি পালন করে তৃণমূলও। ওই ব্রিজের কাছে একটি শহিদ বেদি রয়েছে। শুভেন্দুর তৈরি শহিদ বেদি রয়েছে গোকুলনগরে। মঙ্গলবার সকালে সেখানে কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘একেবারে গ্যারেজ’ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দু। হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় তৃণমূলের অন্য নেতাদেরও। শুভেন্দুর সভার পর সেখান থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে ভাঙাবেড়া ব্রিজের কাছে তৃণমূল আয়োজিত কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন চন্দ্রিমা, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌমেন মহাপাত্র, অখিল গিরি-সহ তৃণমূলের অন্য নেতৃত্বরা।

সেই কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘আমরা রক্তাক্ত খেলা খেলব না। কিন্তু ওই রাজনৈতিক দলকে ভারতের রাজনীতিতে শহিদ করতে হবে। এখানে এক জন ছিলেন। সেই ছেলেটির নাম যেন কি? শুভ ইন্দু (চাঁদ) নয়, উনি আসলে অমাবস্যার চাঁদ। ওঁর নামে অন্ধকার ছাড়া কিছুই দেখা যায় না। এক জন ভুঁইফোড় বিজেপি নেতা। যাঁদের হাত শহিদদের রক্তে রাঙা, তাঁদের হাত ধরেই গোকুলনগরে শহিদ দিবস করতে গিয়েছেন।’’

দলনেত্রী মমতা এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেককে ‘গ্যারেজ’ করার মন্তব্য নিয়েও শুভেন্দুকে তোপ দাগেন চন্দ্রিমা। তিনি বলেন, ‘‘উনি আবার সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেছেন, ১৪ মার্চ ২০২৪ এর আগে পিসি-ভাইপোকে গ্যারেজ করে দেবেন। উনি কি জ্যোতিষী নাকি রে বাবু? গ্যারেজ করে দেবে, না কি নিজেই গ্যারেজ হবে! ওঁকেই গ্যারেজ করে দিতে হবে, এটাই ওঁর কপালে লেখা রয়েছে। এত অহংকার ভাল নয়, এই অহংকার বাংলার মানুষ চূর্ণ করে দেবে। নন্দীগ্রামের মানুষ চূর্ণ করে দেবে।’’

‘শহিদ দিবস’ হিসাবে শুভেন্দুর শ্রদ্ধা, তর্পণও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মন্তব্য করেছেন চন্দ্রিমা।

গোকুলনগরে ‘শহিদ দিবস’ পালনের পর শহিদ পরিবারের সদস্যদের পা জল দিয়ে ধুইয়ে দিতে দেখা যায় বিরোধী দলনেতাকে। তা নিয়েও শুভেন্দুকে কটাক্ষ করেন চন্দ্রিমা। কর্মসূচির পর সাংবাদিক সম্মেলন করে চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘উনি সব জানেন। কার ফোনে কী তথ্য রয়েছে তার সবটাই জানেন শুভেন্দু। শহিদ পরিবার নাকি শুভেন্দুর সঙ্গে আছে। এ সব নাটক করে কোনও লাভ নেই। এত বছর ধরে শহিদ দিবস হয়েছে, কিন্তু এ বার নাটক করে শহিদ পরিবারের সদস্যদের পা ধোয়াচ্ছেন। দেখতে হবে তাঁদের জোর করে ভয় দেখিয়ে, না কি পা ধরে টানতে টানতে ধোয়ার জন্য নিয়ে গিয়েছেন। উনি নাটক করতে ভালোবাসেন। আমরা বিধানসভাতেও দেখি উনি ওয়াকআউট করেন, হাঁটতে হাঁটতে বেরিয়ে যান। তালি বাজান। এ সব নাটক আমরা প্রায়ই দেখি।’’

অন্য দিকে, শুভেন্দুকে মিরজ়াফর বলে আক্রমণ করেন অভিনেত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী সায়ন্তিকা। তিনি বলেন, “অনেক মিরজ়াফরের মুখোশ খুলে গিয়েছে। তৃণমূল এখন দুধ দিয়ে কালসাপ পোষা বন্ধ করে দিয়েছে। মুসলিম পরিবারে কেউ জন্মালে যেমন তার নাম মিরজ়াফর রাখা হয় না, তেমনই হিন্দু পরিবারে পুত্রসন্তান জন্মালে শুভেন্দু রাখা হয় না। নন্দীগ্রামের মানুষ জানেন উনি লোডশেডিং বিধায়ক। এত পাপ করেছেন, সেই পাপ ধোয়া যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE