Advertisement
১৩ মে ২০২৪
Nandigram Dibas

বামপন্থী হিন্দু ভোটে আমি জিতেছি, নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে জয়-অঙ্কের ব্যাখ্যা দিলেন শুভেন্দু

দীর্ঘ সময় নন্দীগ্রামে শক্ত ঘাঁটি ছিল বামেদের। তবে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে মমতা বনাম শুভেন্দুর দ্বৈরথে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী করেছিল সিপিএমের নবীন মুখকে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে।

নন্দীগ্রামে শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর। আগেই সেখানে মাল্যদান করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

নন্দীগ্রামে শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর। আগেই সেখানে মাল্যদান করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:২৫
Share: Save:

ধর্মের তাসের সঙ্গে মেলালেন রাজনীতির রং। নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, তাঁকে ভোটে জিততে সাহায্য করেছেন ‘বামপন্থী হিন্দুরা।’ নন্দীগ্রামে শহিদ দিবসেও তরজায় জড়িয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপি। শাসক দলের তরফে কুণাল ঘোষ নাম না করে বিঁধেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ককে। প্রত্যুত্তরে বিজেপি বিধায়কের দাবি, ২০২১ সালের ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছেন ‘বামপন্থী হিন্দুদের’ ভোটের জন্য।

সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রাম আন্দোলনের উপর ভর করে তদানীন্তন বাম সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ২০১১ সালে রাজ্যের মসনদে বসে তৃণমূল। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে জয়ী তৃণমূলত্যাগী শুভেন্দু সেই নন্দীগ্রামের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান থেকে ‘স্বীকার’ করে নিলেন, তিনি জিতেছেন ‘বামপন্থী হিন্দুদের’ জন্য। শনিবার নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুর আক্রমণ, ‘‘উনি দিদি থেকে দিদিমা হয়ে যেতেন, যদি না নন্দীগ্রাম থাকত।’’ তাঁর পরে তাঁর সংযুক্তি, ‘‘এদের থেকে (পড়ুন তৃণমূল) অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল সিপিএম। অনেক বেশি ক্ষমতা ছিল বামফ্রন্ট সরকারের। বামপন্থীরা সবাই খারাপ নন। আমাদের সঙ্গে প্রচুর বামপন্থী এসেছেন। নন্দীগ্রামে একটা বড় অংশ যাঁরা হিন্দু, তাঁরা ভোট দিয়েছেন বলে আমি জিতেছি। আমি তা অকপটে স্বীকার করি।’’

উল্লেখ্য, দীর্ঘ সময় নন্দীগ্রামে শক্ত ঘাঁটি ছিল বামেদের। তবে সিপিএম নয়, এখানে টানা জয়ী হয়েছেন সিপিআই প্রার্থী। তবে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শুভেন্দু অধিকারীর দ্বৈরথে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী করেছিল সিপিএমের নবীন মুখ মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে। বাম-কংগ্রেস জোট ভোট পেয়েছিলেন সামান্যই। ২ হাজারের কম ভোটে মমতাকে পরাজিত করেন শুভেন্দু। যদিও ওই ভোটের গণনাপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতে যায় তৃণমূল। সেই মামলা এখনও চলছে। তবে অনেকে মনে করেন, এই অল্প ব্যবধানে শুভেন্দুকে জিততে অনেকাংশে সাহায্য করেছে ‘বাম-ভোট’। নন্দীগ্রামে ভোট প্রচারের সময়ও শুভেন্দু বামপন্থীদের আবেদন করেছেন বিজেপিকে ভোট দিতে। তাঁর ব্যাখ্যা ছিল, তৃণমূল জয়লাভ করলে কোনও বিরোধী শক্তিকেই মাথা তুলে দাঁড়াতে দেবে না। তাই গণতন্ত্রের স্বার্থে ‘শক্তিশালী’ বিজেপিকে ভোট দিন বামপন্থীরা। শনিবার শহিদ দিবস নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির দড়ি টানাটানিতে বামেদের ‘ধন্যবাদ’ জানালেন বিজেপি বিধায়ক। যা রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

৭ জানুয়ারির দিনটি ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ হিসাবে পালন হচ্ছে তৃণমূল জমানায়। এই উপলক্ষে শুক্রবার রাতেই নন্দীগ্রামে পৌঁছে যান তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। অন্য দিকে, শহিদ বেদিতে মালা দেওয়ার কর্মসূচি ছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর। সকালে তৃণমূলের অনুষ্ঠানের পর শুভেন্দু সভা করেন। তাঁর দাবি, শহিদ দিবস উপলক্ষে আগে কখনও রাজনৈতিক, ধর্মীয় সীমারেখা ছিল না। এবং থাকবে না, সেটাই সমীচীন। তবে শুভেন্দুর কথায়, ‘‘কিছু কিছু লোক যাঁদের সঙ্গে আন্দোলনের কোনও যোগ ছিল না, তাঁরা আন্দোলনের ক্ষীর এবং মধু খাচ্ছেন। ওঁরা নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব বজায় রাখতে এ সব করছেন। কিন্তু পারবেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE