সঙ্কীর্ণ ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে যানজট নিত্যদিনের ঘটনা। -নিজস্ব চিত্র।
গেরো সেই জমি। আর তাতেই আটকে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় জমির কিছুটা অধিগ্রহণ করে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিলেও পুরো জমি এখনও মেলেনি। ফলে, খড়্গপুরের চৌরঙ্গি থেকে চিচিড়া পর্যন্ত ৪৯ কিলোমিটার রাস্তা এখনও এক লেনেরই রয়ে গিয়েছে। অথচ, এই রাস্তা চার লেনের করার জন্য অনুমোদন মিলেছে বহু আগে। কেন কাজ শুরু করা যায়নি? ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের প্রজেক্ট ডিরেক্টর তপনকুমার বৈদ্যের জবাব, ‘‘আমরা ভেবেছিলাম পুজোর পরেই কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। কিন্তু প্রয়োজনীয় জমি এখনও হাতে পাইনি। ওই অংশে বন দফতরেরও জমি রয়েছে। সে ছাড়পত্রও মেলেনি। পেলেই কাজ শুরু করে দেব।’’
খানাখন্দে ভরা ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে যানজটে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থাকা একটা সময় ছিল দস্তুর। সমস্যা মেটাতে সোনালি চতুর্ভুজ সড়ক যোজনায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের পরিকল্পনা হয়নি। কিন্তু কলকাতা থেকে খড়্গপুরের চৌরঙ্গি পর্যন্ত কাজ হওয়ার পরে তা থমকে যায়। চৌরঙ্গি থেকে চিচিড়া (রাজ্যের সীমান্ত) পর্যন্ত ৪৯ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শুরুই হয়নি। ২০০৯-’১০ সালে ওই রাস্তা চার লেন করার জন্য সমীক্ষা শুরু হলেও জমি অধিগ্রহণ বা সরকারি জমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া ধাক্কা খাওয়ায় কাজ কবে শুরু হবে তা নিয়ে সংশয় কাটেনি। এই রাস্তার কাজে ৫৩ একর জমি প্রয়োজন। এর মধ্যে মাত্র ২১.২৭৪৫ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ সবে শেষ করেছে প্রশাসন। গত শুক্রবার সেই জমি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশ প্রসাদ মিনা।
বাকি জমির কী হবে?
প্রশাসন সূত্রে খবর, এ ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা রয়েছে। জাতীয় সড়ক বিভাগ যে সময় সমীক্ষা করেছিল, তখন জমির রেকর্ড ছিল ‘রিভিসনাল সেটেলমেন্ট’ (আরএস)-এ। তা ল্যান্ড রিফর্মস (এলআর)-এ পরিবর্তন করা হয়নি। ষাটের দশকের আরএস রেকর্ড ধরে সমীক্ষা হওয়ায় অনেক ভুল-ত্রুটি থেকে গিয়েছে। জেলা জমি অধিগ্রহণ বিভাগ কাজ করতে নেমে এ সব অসঙ্গতি দূর করতে বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়। অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) সুশান্ত চক্রবর্তী বলেন, “এত সমস্যা সত্ত্বেও আমরা দ্রুত কাজ করার চেষ্টা করেছি। বেশিরভাগ জমি অধিগ্রহণের কাজই শেষ। যে সামান্য অংশ বাকি রয়েছে, তাও দ্রুত করার চেষ্টা করছি।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অংশে রায়তি জমির পরিমাণ প্রায় ৩০ একর। যার বেশিরভাগটাই অধিগ্রহন হয়ে গিয়েছে। বাকি ২০ একরের কিছু বেশি জমি বন দফতরের ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের। সেগুলির জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের ছাড়পত্র ও প্রক্রিয়া মেনে হস্তান্তর প্রয়োজন। বন দফতরের খড়্গপুর ডিভিশনের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “প্রাথমিকভাবে কাজের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। জাতীয় সড়ক বিভাগকে জমির জন্য আরও কিছু টাকা জমা দিতে হবে। তারপরেই চূড়ান্ত ছাড়পত্রের অনুমোদন চেয়ে চিঠি পাঠাব। তবে বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী, জাতীয় সড়ক বিভাগের কাজ শুরু করতে সমস্যা নেই।” জাতীয় সড়ক বিভাগ অবশ্য জানিয়েছেন, কাজ শুরুর পরে জমি জটে মাঝপথে কাজ আটকে গেলে ঝক্কি বাড়বে। তাই জমি জট কাটার অপেক্ষায় রয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy