বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প রূপায়ণে এখন ব্যাঙ্কের ভূমিকা খুব জরুরি। তাই সেই সব প্রকল্প নিয়ে আলোচনার জন্য ডাকা সরকারি বৈঠকে ব্যাঙ্ক কর্তাদের হাজিরাও গুরুত্বপূর্ণ। অথচ পশ্চিম মেদিনীপুরের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বৈঠকে ব্যাঙ্ক কর্তারা গরহাজির থাকছেন। ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রশাসন।
সমস্যা সমাধানেবৈঠকে ব্যাঙ্ক কর্তাদের হাজিরার অনুরোধ জানিয়ে এ বার সরাসরি জেলার লিড ডিস্ট্রিক্ট ব্যাঙ্ক ম্যানেজার (এলডিএম) শক্তিপদ পড়িয়াকে চিঠি দিলেন ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক নকুলচন্দ্র মাহাতো। গত এক বছরে ঝাড়গ্রাম মহকুমায় কতগুলো বৈঠক হয়েছে, সেখানে কতগুলো ব্যাঙ্কের কর্তারা হাজির ছিলেন, চিঠিতে তাও জানিয়েছেন নকুলচন্দ্রবাবু। দেখা যাচ্ছে, কোনও বৈঠকে একটি, কোনও বৈঠকে দু’টি ব্যাঙ্কের কর্তারা এসেছেন। একটি বৈঠকে আবার কোনও ব্যাঙ্কের কর্তাই আসেননি! ফলে, বৈঠকটি করতে হয় দায়সারা ভাবে। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক চিঠির প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অরিন্দম নিয়োগীর দফতরেও। চিঠি প্রাপ্তির কথা মানছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের এলডিএম শক্তিপদবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসকের চিঠি পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই দেখছি। ব্যাঙ্কগুলোর সঙ্গে কথা বলছি।’’
সরকারি প্রকল্পে ব্যাঙ্কের ঋণদানে গড়িমসির অভিযোগ নতুন নয়। একাংশ ব্যাঙ্ক অকারণ হয়রান করে। বেকার যুবক-যুবতীরা বারবার আবেদন করেও ঋণ পান না বলে অভিযোগ ওঠে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোর ঋণদানের টাকা তো ব্যাঙ্কেই পড়ে থাকে। এ নিয়ে সম্প্রতি ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি)। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের দাবি, সরকারি বৈঠকেও ঋণদানের প্রসঙ্গ সামনে আসে। যুক্তিসঙ্গত জবাব থাকে না ব্যাঙ্ক কর্তাদের কাছে। তাই একাংশ ব্যাঙ্ক কর্তা বেশিরভাগ বৈঠক এড়িয়ে চলেন। বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে জেলার ব্যাঙ্কগুলোর পিছিয়ে থাকার অভিযোগও নতুন নয়। সাধারণত, জেলার ক্রেডিট রেসিও (সিডি রেসিও) ৪০ শতাংশের উপরে থাকার কথা। অর্থাৎ, ব্যাঙ্কে যদি ১০০ টাকা জমা থাকে, তাহলে অন্তত ৪০ টাকা ঋণ দিতে হবে। তবে জেলায় সব সময় তা থাকে না।
এ সবের জেরে ধাক্কা খায় সরকারি প্রকল্পের রূপায়ণ। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের মতে, “জেলায় যত বেশি ব্যাঙ্ক ঋণ দেবে, তত উন্নতির সুযোগ তৈরি হবে। ক্ষুদ্রশিল্পের প্রসার ঘটবে, কৃষিক্ষেত্রে সাফল্য আসবে।” তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘উপভোক্তারা ব্যাঙ্কের কাছ থেকে আরও সহনশীল ব্যবহার আশা করেন।’’
এ ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলির যুক্তি হল, বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ দেওয়া হয়। তবে দেখা গিয়েছে, পরবর্তীকালে ঋণ শোধের হার আশানুরূপ নয়। তাই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু কেন সরকারি বৈঠকগুলো এ ভাবে এড়াচ্ছেন ব্যাঙ্ক কর্তারা? জেলার এলডিএম শক্তিপদবাবুর আশ্বাস, “বিষয়টি দেখছি।”
হাজিরার খতিয়ান
বৈঠকের দিন কত ব্যাঙ্ক হাজির
৯ এপ্রিল, ’১৫ ২
১০ জুলাই, ’১৫ ৩
৭ অক্টোবর, ’১৫ ৩
৫ ফেব্রুয়ারি, ’১৬ ০
২৭ জুন, ’১৬ ১
১৭ অগস্ট, ’১৬ ৪
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy