Advertisement
E-Paper

দলীয় প্রধানে অনাস্থা তৃণমূলেরই আট সদস্যের

ঝাড়গ্রাম ব্লকের সাপধরা পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগে অনাস্থা আনলেন দলের ৮ জন পঞ্চায়েত সদস্য। শুক্রবার লিখিতভাবে ঝাড়গ্রামের ভারপ্রাপ্ত বিডিও’র কাছে অনাস্থার চিঠি জমাও দিয়েছেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৪৯

ঝাড়গ্রাম ব্লকের সাপধরা পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগে অনাস্থা আনলেন দলের ৮ জন পঞ্চায়েত সদস্য। শুক্রবার লিখিতভাবে ঝাড়গ্রামের ভারপ্রাপ্ত বিডিও’র কাছে অনাস্থার চিঠি জমাও দিয়েছেন তাঁরা।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাপধরা পঞ্চায়েতের ৯ টি আসনের সব ক’টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থীরা। প্রধান পদে নির্বাচিত হন ইলাবতী মাহাতো। কিন্তু সাড়ে তিন বছরের মধ্যে ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে প্রধান ইলাবতীদেবীর সঙ্গে বাকি ৮ সদস্যের বিরোধ শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েত সদস্যদের অভিযোগ, ইলাবতীদেবী উন্নয়নের ক্ষেত্রে নিজের মর্জিমাফিক কাজ করছেন। বাকি সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করছেন না। সাপধরা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বসন্ত মাহাতো, পঞ্চায়েত সদস্য সুবোধ টুডু, তারক মাহাতো, জানকী মাহাতোদের অভিযোগ, “প্রধান ইলাবতীদেবী স্বজনপোষণ করছেন। পঞ্চায়েত সদস্যরা নিজেদের গ্রাম সংসদ এলাকায় উন্নয়ন সংক্রান্ত যে সমস্ত প্রস্তাব পেশ করছেন, সেগুলি প্রধান কোনও কারণ ছাড়াই খারিজ করে দিচ্ছেন।”

ঘটনা হল, ইন্দিরা আবাস যোজনা ও গীতাঞ্জলি প্রকল্পে বাড়ি দেওয়া নিয়ে প্রধানের সঙ্গে বাকি সদস্যদর বিরোধ চরমে পৌঁছেছে। প্রত্যেক সদস্য নিজেদের এলাকা থেকে প্রাপকদের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু উপভোক্তা তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরে দেখা যায়, সদস্যদের প্রস্তাবিত লোকজনের নাম নেই। সদস্যদের অভিযোগ, প্রধান কেবলমাত্র তাঁর নিজের পছন্দের লোকজনকে বাড়ি পাইয়ে দিয়েছেন। এর ফলে আসলে যাঁদের বাড়ি প্রয়োজন সেইসব গরিব বাসিন্দাকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে সদস্যরা দলের অঞ্চল কমিটির কাছে নালিশ জানান। বিষয়টি খতিয়ে দেখার পরে দলের পক্ষ থেকে ইলাবতীদেবীকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। কিন্তু তিনি পদত্যাগ করতে রাজি হননি। এরপর প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চান সদস্যরা। কিন্তু দলের পক্ষ থেকে অনাস্থা আনতে নিষেধ করা হয়। তখন ৮ সদস্য একযোগে ইস্তফার হুমকি দেন। এরপর কার্যত চাপে পড়ে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার জন্য দলীয় সদস্যদের সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়।

তৃণমূলের সাপধরা অঞ্চল সভাপতি শ্যাম সরেন বলেন, “প্রধানকে বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও তিনি নিজের মর্জিমতো কাজ করছেন। ইস্তফাও দিতে রাজি হচ্ছেন না। তাই ব্লক নেতৃত্বের অনুমতি নিয়ে প্রধানের বিরুদ্ধে দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যরা অনাস্থা এনেছেন।” তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম ব্লক সভাপতি অনিল মণ্ডল বলেন, “প্রধানের বিরুদ্ধে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সতর্ক করা সত্ত্বেও উনি সংযত হননি। ইস্তফাও দেননি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা প্রধানের অপসারণের পক্ষে মত দিয়েছি।”

প্রধান ইলাবতী মাহাতো বলেন, “আমি স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করছি। কোনও দুর্নীতি ও স্বজনপোষণকে প্রশ্রয় দিইনি। কয়েক জন সদস্যের স্বার্থসিদ্ধি না হওয়ায় তাঁরা আমাকে সরাতে চাইছেন। আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগ থাকলে প্রশাসনিক তদন্ত করা হোক।” ইলাবতীদেবীর দাবি, তিনি অন্যায়কে প্রশ্রয় না দেওয়ার জন্য তাঁকে মিথ্যা অভিযুক্ত করা হচ্ছে। বিষয়টি তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে লিখিত ভাবে জানাবেন। ঝাড়গ্রামের জয়েন্ট বিডিও চঞ্চলকুমার মণ্ডল বলেন, “৮ জন সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন। পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী তলবি সভা ডেকে এ ব্যাপারে ভোটাভুটি করা হবে।”

TMC No-confidence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy