Advertisement
E-Paper

কেশিয়াড়ির আদিবাসী ক্ষোভ গড়াচ্ছে নির্দল কাঁটায়

বিধানসভা কেন্দ্রটি তফসিলি উপজাতি সংরক্ষিত। অথচ, তাদের উন্নয়নের গুরুত্ব দিল না কেউ। এর আগে অভিযোগের তির ছিল বাম সরকারের দিকে। ২০১১ সালে তাই পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন আদিবাসী মানুষেরা, সমর্থন করেছিলেন তৃণমূলকে। কিন্তু স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তাই এ বার তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল আদিবাসী সংগঠনগুলি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৬ ০১:২০

বিধানসভা কেন্দ্রটি তফসিলি উপজাতি সংরক্ষিত। অথচ, তাদের উন্নয়নের গুরুত্ব দিল না কেউ। এর আগে অভিযোগের তির ছিল বাম সরকারের দিকে। ২০১১ সালে তাই পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন আদিবাসী মানুষেরা, সমর্থন করেছিলেন তৃণমূলকে। কিন্তু স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তাই এ বার তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল আদিবাসী সংগঠনগুলি।

আজ, মঙ্গলবার কেশিয়াড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণার জন্য লোধা-শবর কল্যাণ সমিতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি সমিতি একটি সম্মেলনের ডাক দিয়েছে। ঠিক হয়েছে কেশিয়াড়ির রবীন্দ্র ভবনে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। যোগ দেবেন লোধা, শবর, মুণ্ডা, কুড়মি, সাঁওতাল, মাহালি সমাজের কয়েক হাজার মানুষ। সেখানেই লোধা-শবর কল্যাণ সমিতির জেলা সভাপতি বলাই নায়েককে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হবে।

কেশিয়াড়ি বিধানসভায় ৬৮ শতাংশ তফশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। নির্বাচনে আদিবাসীদের ভোট একটা বড় প্রভাব ফেলে। তাই সংগঠনের আশা এ বারের নির্বাচনে তাঁরা খানিকটা হলেও নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়াবেন।

২০১১ সালে কেশিয়াড়িতে জয়ী হয়েছিলেন সিপিএমের বিরাম মাণ্ডি। জয়ের ব্যবধান ছিল মাত্র ১০৩৭। সে বার কংগ্রেস-তৃণমূল জোটকে সমর্থন করেছিল আদিবাসী সংগঠনগুলি। তৃণমূল পেয়েছিল ৭৫,৯৩৯ ভোট। যা মোট ভোটের প্রায় ৪৫শতাংশ। গত লোকসভা নির্বাচনে কেশিয়াড়িতে তৃণমূলের ফল আরও ভাল হয়েছিল। প্রায় ৫১শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিল তারা। সেখানেও আদিবাসীদের একটা বড় অংশের সমর্থন ছিল।

কিন্তু এলাকার আদিবাসী সংগঠনগুলির দাবি, এই বিধানসভায় আদিবাসীদের উন্নয়নে কোনও কাজ হয়নি। ইন্দিরা আবাসের সুযোগ থেকে আজও বঞ্চিত অনেক আদিবাসী। লোধা-শবর কল্যাণ সমিতির জেলা সভাপতি বলাই নায়েক বলেন, “আমরা পরিবর্তন চেয়ে তৃণমূলকে সমর্থন করেছিলাম। কিন্তু অন্য বিধানসভায় আদিবাসীদের জন্য বিশেষ সেল খোলা হলেও কেশিয়াড়ি বিধানসভায় তা নেই। মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা আশাহত।”

এর সঙ্গে যোগ হয়েছে তৃণমূলের প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ। পরেশ মুর্মু খড়্গপুরের হরিয়াতাড়ার বাসিন্দা হওয়ায় এলাকায় নজর দেবেন না বলে আশঙ্কা করছেন আদিবাসীরা। তাই স্থানীয় কাউকে প্রার্থী করতে চেয়ে নির্দল প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁরা। আদিবাসী সংস্কৃতি সমিতির ব্লক সভাপতি বিষ্ণুপদ সরেন বলেন, “এলাকার বাসিন্দা বিরাম মাণ্ডিও বিধায়ক হয়ে এলাকার উন্নয়ন করেনি। তাই বহিরাগত কেউ উন্নয়ন করবে, বিশ্বাস করি না।’’ তাঁর দাবি, ৬৮ শতাংশ আদিবাসী ভোটের ৫০ শতাংশই তাঁদের পক্ষে আসবে।

এই সিদ্ধান্তে ভোটের সমীকরণ বদলের আশঙ্কা বাড়ছে তৃণমূলে। কারণ, বিগত বছরে তৃণমূলের জোটসঙ্গী কংগ্রেসের হাত এ বার বামেরা ধরেছে। ফলে কংগ্রেসের ভোটও এ বার বিরামবাবুর দিকে যাবে। তা উপর আদিবাসীদের ভোট যদি নির্দল প্রার্থীর দিকে ঘুরে যায় তবে তৃণমূলের ভোটই কমবে।

এ দিন কেশিয়াড়ির সিপিএম প্রার্থী বিরাম মাণ্ডি নিজেও বলেন, “আমাদের ভোট কমবে না। কারণ আমি এই পাঁচবছরে আদিবাসীদের উন্নয়নের অনেক লড়াই করেছি। আদিবাসীদের ভোট আমাদের পক্ষে কিছুটা আসবেই। তৃণমূলের ভোট কমে যাবে।” যদিও তৃণমূলের কেশিয়াড়ি ব্লক সভাপতি জগদীশ দাস বলেন, “আসলে লোধা-শবর কল্যাণ সমিতি নিজেদের আর্থিক লাভের আশায় এই কারবার করে।” অবশ্য উদ্বেগ যে বাড়ছে তা স্পষ্ট হয়েছে তৃণমূল প্রার্থী পরেশ মুর্মুর কথায়। তিনি দাবি করেছেন, “আমাকে বলাই নায়েক কয়েকদিন আগে ফোন করে আলোচনায় বসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বসা হয়নি। দেখি আমি এই বিষয়ে বলাইবাবুর সঙ্গে কথা বলব।’’

Keshiari distraction tribals
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy