বেআইনি খাদান নিয়ে ফের সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার গ্রামীণ রাস্তায় চার চাকার থেকে বড় লরি চলাচল নিষিদ্ধ করলেন তিনি।
খাদান থেকে বালি, মোরাম বোঝাই বড়় লরিতে নষ্ট হচ্ছে গ্রামের রাস্তা। এ নিয়ে জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধছিল। মঙ্গলবার মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন গ্রামীণ রাস্তায় এখন থেকে আর চার চাকার থেকে বড় লরি চলাচল করবে না। শুধু জেলা নয়। সারা বাংলা জুড়েই যে এই নিয়ম কার্যকর হবে তা জানাতেও ভোলেননি তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘চারচাকার লরি ছাড়া আর কোনও লরি গ্রামীণ রাস্তায় ঢুকবে না। স্পেশ্যাল পারমিট ছাড়া। সারা বাংলা জুড়ে একই নিয়ম হবে।’’
এ দিন বৈঠকে ছিলেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, পরিবহণ দফতর এ নিয়ে নির্দেশিকা বার করবে। নির্দেশিকা সব জেলার ডিএম, এসপি- র কাছে পাঠাবে। বড় লরি ঢোকার ফলে গ্রামীণ রাস্তাগুলো ভেঙে যাচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন সাংসদ মানস ভুঁইয়া। বৈঠকে মমতাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘গতকাল মানস ভুঁইয়া আমায় এই সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। এই সমস্যা সব জেলায় রয়েছে। পরিবহণ দফতরকে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’
বৈঠকে মানস বলেন, ‘‘ওঁর (মুখ্যমন্ত্রী) প্রচেষ্টায়, কেন্দ্রের বঞ্চনা সত্ত্বেও, গ্রামীণ রাস্তা, প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার রাস্তা, জেলা পরিষদের রাস্তাগুলো সুন্দর হচ্ছে। টোলট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার জন্য ১৪ টাকা, ১৬ চাকা, ২০ চাকার লরি সব ঢুকে যাচ্ছে গ্রামীণ রাস্তায়। ফলে রাস্তাগুলো ধসে যাচ্ছে, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’’ মানসকে ‘ভুল’ ধরিয়ে দেন মমতা। মমতাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ওটা বাংলা সড়ক যোজনা।’’ পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘টোলট্যাক্স দেবে না। সেই জন্য আমরা যে গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করছি সেখানে বড় বড় লরি ঢুকিয়ে দিচ্ছে। গ্রামীণ রাস্তাগুলো ভেঙে যাচ্ছে। একদিকে তৈরি করছি। দু’দিন পরে ভেঙে যাচ্ছে। এত টাকা আসবে কোথা থেকে।’’
গ্রামীণ রাস্তায় যাতে বড় লরি ঢুকতে না পারে সে জন্য পুলিশকে নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। পুলিশের পাশাপাশি সেই দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছেন পঞ্চায়েতের তিন স্তরকে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘একটা রাস্তা তৈরি করতে কত কষ্ট হয়। ভেঙে যেতে এক সেকেন্ড লাগে। সব গ্রামীণ রাস্তায় ব্যারিকেড করতে হবে। পুলিশকে এই দিকটা দেখতে হবে। গ্রাম সংসদ, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদকেও দেখতে হবে।’’ কীভাবে সমস্যার সমাধান করতে হবে তার উপায়ও বাতলে দিয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘দরকার হলে এমন জরিমানা নিতে হবে যাতে জীবনে আর গ্রামীণ রাস্তায় বড় লরি না ঢোকায়। শুধু জরিমানা করলে হবে না। লরি আটকে রেখে দিতে হবে। দশদিন আটকে রাখলে আর যাবে না। দায়িত্ব নিয়ে সকলকে দেখতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy