Advertisement
E-Paper

করোনা-মুক্ত ধরে নিয়েই শিকেয় বিধি

প্রশাসনের প্রচার গাড়ি থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়িতে থাকতে বলা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২০ ০৩:৫২
গত শুক্রবার নয়াগ্রামের বালিগেড়িয়া হাটে এমনই ভিড় ছিল। নিজস্ব চিত্র

গত শুক্রবার নয়াগ্রামের বালিগেড়িয়া হাটে এমনই ভিড় ছিল। নিজস্ব চিত্র

মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলে গিয়েছেন, জেলা করোনা-মুক্ত। তারপর রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে তিন জন নয়া আক্রান্তের উল্লেখ থাকলেও জেলা প্রশাসন ও জেলার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তাই ঝাড়গ্রামবাসীও খোশমেজাজে রয়েছেন। করোনা বিধি পালনে তেমন গা করছেন না।

প্রশাসনের প্রচার গাড়ি থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়িতে থাকতে বলা হচ্ছে। হাটবাজারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ করা হচ্ছে। সে সবে গুরুত্ব না দিয়েই গ্রামীণ এলাকার সিংহভাগ মানুষ হাটে-বাজারে ভিড় করছেন। মাস্ক ছাড়াই বেচাকেনাও চলছে। নয়াগ্রাম ব্লকের বালিগেড়িয়া, কেশররেখা, জামরুঘুটু ও খাঁড়কিতে সপ্তাহের প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই অনিয়ন্ত্রিত ভাবে সাপ্তাহিক হাট বসছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত সমিতির অনুমতি ছাড়াই ওই সব এলাকার হাটে আনাজ ও অন্য জিনিস নিয়ে বসছেন ব্যবসায়ী ও ছোট বিক্রেতারা। ক্রেতাদের ভিড়ও হচ্ছে।

লকডাউনের প্রথম পর্যায়ে অবশ্য ব্লকের সব সাপ্তাহিক হাট বন্ধ ছিল। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, জেলা সবুজ ঘোষিত হওয়ায় মাস খানেক ধরে নয়াগ্রাম ব্লকের সাপ্তাহিক হাটগুলি চালু হয়েছে। শুক্রবার নয়াগ্রামের ব্লক-সদর বালিগেড়িয়ায় সাপ্তাহিক হাটবার ছিল। লকডাউনের আগে নয়াগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির নিয়ন্ত্রণে হাট বসত বালিগেড়িয়ার পাথরবাঁধ মৌজায়। তবে তিন সপ্তাহ ধরে নির্দিষ্ট জায়গার পরিবর্তে খড়িকা-ধুমসাই পিচ রাস্তার দু’ধারে অনিয়ন্ত্রিত হাট বসছে। হাটে হাজার খানেক লোকের ভিড়ে উদ্বিগ্ন হন বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, শয়েশয়ে লোক গায়ে গা লাগিয়ে ঘুরে বেড়ালে তা মারাত্মক হতে পারে। সমস্যা মেনে নয়াগ্রাম হাট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক মানিক সাহা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির অনুমতি ছাড়াই ক্রেতাদের দাবিতে কিছু ব্যবসায়ী ও বিক্রেতা আনাজ, ঝুড়ি, কুলো, মাটির হাড়ি, কলসি, লোহার কড়াই, হাতা, খুন্তি, বঁটি, গামছা, মশারি, মাদুরের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে সাপ্তাহিক হাটের দিনে বসছেন। হাট বসাতে আমরা সংগঠনের তরফে কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। বিষয়টি পঞ্চায়েত সমিতি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’ মানিক মানছেন, অনিয়ন্ত্রিত হাটগুলিতে গড়ে পাঁচশো থেকে হাজার লোকের জমায়েত হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা শিকেয় উঠেছে। নয়াগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী সঞ্চিতা ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারি ভাবে হাট বসানো হয়নি। এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখন সাপ্তাহিক হাটের দিনে রাস্তার ধারে কিছু বিক্রেতা বসছেন। ভিড় হওয়ার খবর জানা নেই। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সবস্তর থেকেই প্রচার চালানো হচ্ছে।’’

গ্রাম ও শহরেও সামাজিক দূরত্ব মানছেন না অনেকে। ঝাড়গ্রাম শহরের পোশাক ব্যবসায়ী শঙ্কর মান্না বলেন, ‘‘অপরিসর দোকানে একজনের বেশি ক্রেতাকে ঢুকতে দিচ্ছি না। কিন্তু ক্রেতারা সবুজ জেলার যুক্তি দেখিয়ে ঢুকতে চাইছেন।’’ অরণ্যশহরের কিছু ব্যবসায়ী দোকানে ক্রেতাদের ঢোকা বন্ধ করতে জিনিসপত্র বাইরে এনে বেচছেন।

‘চুপ’ প্রশাসনেই বিপদ বাড়ছে বলে বিরোধীদের মত। সিপিএমের ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক তথা ঝাড়গ্রামের প্রাক্তন সাংসদ পুলিনবিহারী বাস্কে বলছেন, ‘‘এখন পরিযায়ীরা ফিরেছেন। ফলে হাটবাজারে এ ধরনের ভিড় উদ্বেগ ও আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।’’ ঝাড়গ্রামের বর্তমান বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রমের অভিযোগ, ‘‘জেলায় আইনের শাসনটাই নেই।’’ জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ উজ্জ্বল দত্ত পাল্টা বলেন, ‘‘লকডাউনে প্রশাসনের তরফে যা-যা করণীয় তাই করা হচ্ছে। মানুষকে সচেতন করার কাজও নিয়মিত চলছে।’’

Coronavirus Social Distancing Jhargram
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy