Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
নজর নেই, বেলাগাম ছুটছে গাড়ি

দুর্ঘটনার বলি পাঁচ, ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রাস্তায় হাম্প তৈরির দাবি

বুধবার সকালে চন্দ্রকোনা শহরের জয়ন্তীপুর সংলগ্ন খেজুরডাঙায় ট্রাকের সঙ্গে বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বাস-লরির চালক ও এক মহিলার। পরে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পরপর তিনটি মোটরবাইককে ধাক্কা মারার পর ট্রাকের গতি আরও বাড়িয়ে দেন চালক।

চন্দ্রকোনার খেজুরডাঙায় সরানো হচ্ছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটি। বুধবার। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

চন্দ্রকোনার খেজুরডাঙায় সরানো হচ্ছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটি। বুধবার। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:১০
Share: Save:

মাস কয়েক আগেই চওড়া হয়েছে ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রাস্তা। দু’লেনের নতুন রাস্তায় লাফিয়ে বেড়েছে গাড়ির গতিও। গত ১৭ ডিসেম্বর চন্দ্রকোনা শহরের জয়ন্তীপুরেই খড়্গপুরগামী বাসের সঙ্গে লরির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। জখম হন ২০ জন যাত্রী। তারপরেও রাস্তার সর্বত্র যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ফের বুধবার সেই জয়ন্তীপুরেই বাস দুর্ঘটনায় পাঁচ যাত্রীর মৃত্যুতে ফুঁসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

বুধবার সকালে চন্দ্রকোনা শহরের জয়ন্তীপুর সংলগ্ন খেজুরডাঙায় ট্রাকের সঙ্গে বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বাস-লরির চালক ও এক মহিলার। পরে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পরপর তিনটি মোটরবাইককে ধাক্কা মারার পর ট্রাকের গতি আরও বাড়িয়ে দেন চালক। খেজুর়ডাঙায় আচমকা সামনে বাস চলে এলে আর গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় দুর্ঘটনা ঘটে।

পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ১৫ হাজার গাড়ি চলাচল করে। এমনিতেই ওই রাস্তা দিয়ে আরামবাগগামী বাস-ট্রাকও চলাচল করে। তার জেরে দিন দিন রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বেড়েই চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, যাত্রী তোলা নিয়ে বাসে বাসে রেষারেষি তো আছেই। হেলমেটহীন বাইক আরোহীদের সংখ্যাও কম নয়। বাড়ছে পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যাও। তাই মাঝে মধ্যেই ওই রাস্তায় ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তায় হাতে গোনা কয়েকটি হাম্প রয়েছে। বুধবার চন্দ্রকোনা শহরের খেজুরডাঙায় দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা একাধিক হাম্প তৈরি করে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের দাবি তুলেছেন। বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ, পূর্ত দফতরও। এ দিন দুর্ঘটনার পরই ওই রাস্তায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ থাকে। এ দিন ঘটনাস্থলে হাজির হন চন্দ্রকোনা-২’এর বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ী, পুরসভার চেয়ারম্যান অরূপ ধাড়া-সহ অন্যরা। স্থানীয়রা জনপ্রতিনিধিদের কাছেও এ দিন রাস্তায় হাম্প বাড়ানোর দাবি জানান।

পূর্ত দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার প্রদীপ বন্দ্যেপাধ্যায় বলছেন, “ওই সড়কে প্রয়োজনীয় সংখ্যায় হাম্প রয়েছে। হাম্প বসানোর নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। ফের হাম্প বসানোর দাবি উঠায় তা বিবেচনা করে দেখা হবে।” চন্দ্রকোনা-২’এর বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ী বলেন, “এলাকার মানুষ হাম্পের দাবি তুলেছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরের জানাবো।”

গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত নজরদারি চলে বলে দাবি পুলিশের। রাতের গাড়ির চালকদের নামিয়ে চা-জল খওয়ানো থেকে চালক মদ্যপ কিনা জানতে ‘ব্রিদ অ্যানালাইজার’ যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। বাইক আরোহীদের হেলমেট পরানোর প্রবণতা বাড়াতে জরিমানা, লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা-সহ একাধিক পদক্ষেপও করা হয়েছে। গাড়ির গতি নির্দিষ্ট রাখতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান গুলিতে ‘স্পিড লেজার গান’-ও বসিয়েছে পুলিশ।

জনবহুল রাস্তার মোড়গুলিতে যান নিয়নন্ত্রণের জন্য ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও বেপরোয়া গাড়ি চালানোয় দাঁড়ি পড়ছে না।

এ নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়কে হাম্প বসানোর দাবি উঠেছে। হাম্প বসানো হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্থান গুলিতে গার্ড রেলও দেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Accident Bus Reckless driving
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE