সরকারি নিয়মভঙ্গের অভিযোগে তমলুক শহরের দু’টি নার্সিংহোম ও চারটি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি বন্ধের নির্দেশ দিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর। বৃহস্পতিবারই স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে নার্সিংহোম ও ল্যাবরেটরিগুলিতে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রয়োজনীয় নথিপত্র না থাকায় তমলুক শহরের ওই সংস্থাগুলি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
রাজ্য সরকারের ‘ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট’ অনুযায়ী, বেসরকারি উদ্যোগে হাসপাতাল চালুর জন্য স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ম মেনে চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হয়। চিকিৎসক, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করা প্রয়োজন। তা ছাড়া, সরকারি বিভিন্ন দফতরের ছাড়পত্রও প্রয়োজন। এ বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সবকিছু খতিয়ে দেখার পর নার্সিংহোম চালানোর চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়।
নার্সিংহোমগুলিতে অস্বাভাবিক টাকা আদায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার নতুন করে ‘ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট’ চালু করেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নার্সিংহোম ও প্যাথজিক্যাল সেন্টার মালিকদের নিয়ে বৈঠক করে বিস্তারিত জানানোও হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, বেশ কিছু নার্সিংহোম ও প্যাথলজিক্যাল সেন্টার নিয়ম মানে না। অনেক ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই। মেলে না প্রয়োজনীয় নথিপত্রও।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে প্রাথমিক ভাবে এই সব নার্সিংহোম ও প্যাথলজি সেন্টারগুলিকে সতর্ক করে শো-কজ করে। তাতে কাজ না হওয়ায় তমলুক শহরের শঙ্করআড়ার সারদাময়ী সেবাসদন ও নার্সিং হোম এবং নিমতৌড়ির সিস্টার নিবেদিতা নার্সিংহোম বন্ধের নির্দেশ দেওয়া। হাসপাতাল মোড়, শঙ্করআড়া ও বাদামতলা এলাকার চারটি প্যাথলজিক্যাল সেন্টারও বন্ধের নির্দেশ এসেছে।
যদিও শুক্রবার সকালেও শঙ্করআড়ার নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন দু’জন রোগীর দেখা মিলেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ পাওয়ার পরেও নার্সিংহোম বন্ধ করা হয়নি কেন?
নার্সিংহোমের এক কর্তা তপন গুছাইত বলেন, ‘‘নতুন করে রোগী ভর্তি বন্ধ করে দিয়েছি। আমার দু’জন আত্মীয় চিকিৎসা করার জন্য আগেই ভর্তি হয়েছিলেন, তাঁরাই রয়েছেন।’’
হাসপাতাল মোড়ের একটি প্যাথলজিক্যাল সেন্টারের মালিক সলিল মাইতি বলেন, ‘‘লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের আবেদন জানানো হয়েছিল। কিছু খামতি দেখিয়ে সেন্টার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে দফতর। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তমলুক শহরের এই দুই নার্সিংহোম ছাড়াও জেলায় সম্প্রতি আরও কিছু নার্সিংহোম বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।