রাতারাতি ভোল বদল।
২৪ ঘণ্টা আগেও নাড়াজোল রাজ কলেজের টিচার ইনচার্জ বলেছিলেন, ‘‘আমাদের প্রত্যন্ত এলাকা। এত নিয়ম মানা সম্ভব নয়।’’ শুক্রবার খবর প্রকাশের পরই সেই কলেজেই বন্ধ হয়ে গেল অফলাইনে ভর্তি। সব পড়ুয়াকে অনলাইনে ভর্তি হতে হবে জানিয়ে কলেজের নিজস্ব ওয়েবসাইটের আধুনিকীরণের কথা জানালেন কর্তৃপক্ষ। এর ফলে শুক্রবার থেকে এই কলেজে ভর্তি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। টিচার-ইনচার্জ রণজিৎ খালুয়া এ দিন বলেন, “ওয়েবসাইটে কিছু তথ্য আপলোড করা হচ্ছে। তাই শুক্রবার থেকে ভর্তি বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী সোমবার থেকে ফের ভর্তি প্রক্রিয়া যাতে শুরু হয় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।” অনিয়ম ও বহিরাগতের আনাগোনা ঠেকাতে শুরু হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারিও।
কলেজে ভর্তিতে দুর্নীতির ঘুঘুর বাসা ভাঙতে এ বার অনলাইনে টাকা জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। নতুন নিয়মে কাউন্সেলিংয়ের জন্যও পড়ুয়াদের কলেজে যেতে হবে না। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরে গত মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে শিক্ষা দফতর। তারপরেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দিব্যি অফলাইনে ভর্তি চলেছে নাড়াজোল রাজ কলেজে। সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ফর্ম পূরণ না করেও সরাসরি ভর্তি হওয়ার অভিযোগও উঠেছে। আর সেই অনিয়মে নাম জড়িয়েছে দাসপুরের তৃণমূল বিধায়ক মমতা ভুঁইয়ার ছেলে কুমারেশ ভুঁইয়ার। বৃহস্পতিবার কলেজে গিয়ে টিচার ইনচার্জের পাশের চেয়ারে বসে থাকতেও দেখা গিয়েছে কুমারেশকে। তিনি স্বীকার করেছেন, ‘‘মাঝেমধ্যে আসি। আর এখন তো ভর্তি চলছে।’’
শিক্ষা দফতরের কড়াকড়ির পরেও নাড়াজোল কলেজে অনিয়মের খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই নড়ে বসেন কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার থেকে জেনারেল কোর্সে ভর্তিতেও অনলাইন পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। টিচার ইনচার্জের দাবি, “আমাদের সাইট এতটা উন্নত নয়। নেট ব্যাঙ্কিং-সহ বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। সেই সব তথ্য আপলোড করার কাজ শুরু হয়েছে। এ বার থেকে ওই পদ্ধতিতেই ভর্তি নেওয়া হবে।”
নাড়াজোল কলেজের ঘটনা সামনে আসায় সরকারি নির্দেশকে মান্যতা দিতে তৎপর হয়েছে ঘাটাল মহকুমার বাকি কলেজগুলিও। শুক্রবার ঘাটাল, চাঁইপাট এবং চন্দ্রকোনা বিদ্যাসাগর কলেজে বহিরাগতদের আনাগোনা অনেকটাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে অফলাইনেই ভর্তিও।