Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পশ্চিম মেদিনীপুরে শুরু ‘অপারেশন মুসকান’

পশ্চিম মেদিনীপুরেও ছবিটা আলাদা নয়। তাই ফের শিশু শ্রমিক উদ্ধারে অভিযান শুরু হল জেলায়। সোমবার থেকেই শুরু হয়েছে ‘অপারেশন মুসকান’ নামে এই অভিযান। এ দিন মেদিনীপুর শহরে অভিযান হয়। সকালে স্টেশন, বাসস্ট্যান্ডের মতো ব্যস্ত এলাকায় হানা দেয় পুলিশের দল।

পেটের-দায়ে: ইটভাটায় ব্যস্ত দুই খুদে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

পেটের-দায়ে: ইটভাটায় ব্যস্ত দুই খুদে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৭ ১০:৩০
Share: Save:

শিশুশ্রম বন্ধে আইন হয়েছে সেই ১৯৯৬ সালে। তবে তার তোয়াক্কা না করেই হোটেল, গ্যারাজ থেকে ইটভাটা— সর্বত্র দেখা মেলে শিশুশ্রমিকের। যে বয়সে স্কুলে যাওয়ার কথা, খোলা মাঠে দাপিয়ে বেড়ানোর কথা, সেই কাঁচা বয়সে দিনভর সইতে হয় হাড়ভাঙা খাটুনি।

পশ্চিম মেদিনীপুরেও ছবিটা আলাদা নয়। তাই ফের শিশু শ্রমিক উদ্ধারে অভিযান শুরু হল জেলায়। সোমবার থেকেই শুরু হয়েছে ‘অপারেশন মুসকান’ নামে এই অভিযান। এ দিন মেদিনীপুর শহরে অভিযান হয়। সকালে স্টেশন, বাসস্ট্যান্ডের মতো ব্যস্ত এলাকায় হানা দেয় পুলিশের দল। দলে মহিলা পুলিশ ছিলেন। চাইল্ড প্রোটেকশন ইউনিটও অভিযানে সামিল হয়। বিভিন্ন দোকানে দোকানে হানা দিয়ে তাঁরা দেখেন শিশু শ্রমিক রয়েছে কি না। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “সোমবার থেকে অভিযান শুরু হয়েছে। এদিন মেদিনীপুর সহ জেলার একাধিক এলাকায় অভিযান হয়েছে। ৩১ জুলাই পর্যন্ত এই অভিযান চলবে।” তাঁর কথায়, “শিশু শ্রমিকের খোঁজ পেলেই তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে ওই শিশুর পরিজনের সঙ্গে কথা বলে কোনও সমস্যা থাকলে তার সমাধানে পদক্ষেপও করা হবে।”

শিশু শ্রমিকদের উদ্ধার করে জীবনের মূলস্রোতে ফেরানোই এই অভিযানের উদ্দেশ্য। উদ্ধার করা শিশুদের স্কুলে ভর্তি করানো, জীবনের সাচ্ছন্দ্যের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও দেওয়ার কথা প্রশাসনের। গত বছরও পশ্চিম মেদিনীপুরে বেশ কয়েকজন শিশু শ্রমিককে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ‘অপারেশন মুসকান’ একটি কেন্দ্রীয় প্রকল্প। অনেক সময় দেখা যায় শিশু পাচার চক্র অনেকগুলো রাজ্যে ছড়িয়ে রয়েছে। ফলে, কোথাও অভিযান হলে তড়িঘড়ি বাচ্চাদের অন্য রাজ্যে পাচার করে দেয় দুষ্কৃতীরা। তাই সারা দেশে একসঙ্গে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে শিশু শ্রমিক আছে কি না, যারা আছে তাদের পরিচয়পত্র আছে কি না, কাউকে আটকে রাখা হয়েছে কি না, মূলত এ সবই খতিয়ে দেখা হয়।”

অভিযানের জন্য ব্লকস্তরে কমিটি গড়া হয়েছে। পুলিশ, চাইল্ড লাইন, চাইল্ড প্রোটেকশন ইউনিট সকলেই অভিযানে সামিল হচ্ছে। কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে শিশুশ্রমিক আছে কি না খোঁজ নেবেন। চলতি মাসের শেষে মেদিনীপুর ও খড়্গপুরের সব মহিলা থানা এলাকায় এই অভিযান হওয়ার কথা। প্রশাসনের মতে, এমন অভিযানে দোকান মালিক, কারখানা মালিকদের মধ্যে যেমন সচেতনতা তৈরি হবে, তেমনই হঠাৎ কোনও শিশু হারিয়ে গেলে যে প্রশাসনকে জানাতে হবে, সেই বোধও গড়ে উঠবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE