Advertisement
১৩ অক্টোবর ২০২৪
R G Kar Hospital Incident

গানে-স্লোগানে ফের রাত দখল

স্বাধীনতা দিবসের আগের রাতে যেভাবে রাত দখল হয়েছিল, বুধবার যেন তারই পুনরাবৃত্তি হল। মেদিনীপুরের কলেজ মোড়, বটতলাচক-সহ মেদিনীপুরের একাধিক এলাকায় কর্মসূচি হয়।

বুধবার রাতে ঝাড়গ্রাম শহরে।

বুধবার রাতে ঝাড়গ্রাম শহরে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০০
Share: Save:

‘বিচার পেতে আলোর পথে’র ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা। বুধবার রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা ঘরের আলো নিভিয়ে প্রদীপ বা মোমবাতি নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসতে বলেছিলেন তাঁরা। নিজেদের এলাকাতেই মানববন্ধন গড়ার আহ্বানও জানিয়েছিলেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে নানা কর্মসূচি হল পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামেও।

স্বাধীনতা দিবসের আগের রাতে যেভাবে রাত দখল হয়েছিল, বুধবার যেন তারই পুনরাবৃত্তি হল। মেদিনীপুরের কলেজ মোড়, বটতলাচক-সহ মেদিনীপুরের একাধিক এলাকায় কর্মসূচি হয়। মোমবাতি হাতে নিয়ে এসেছিলেন অনেকেই। ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়ে। পরিবেশিত হয়েছে আর জি করের ঘটনার আবহে তৈরি হওয়া পথনাটক ‘ফিনিক্স’। আহ্বানে সাড়া দিয়ে দোকানের আলো নিভিয়ে দিয়েছিলেন স্বপন বেরারা। মোমবাতি জ্বেলেছিলেন। স্বপন বলেন, ‘‘আলো নিভিয়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছি। ন্যায়বিচারের দাবিতে।’’ রাত দখলে শামিল এক গৃহবধূ বলছিলেন, ‘‘আমাদেরও প্রশ্ন, আর কবে? কবে বিচার মিলবে?’’ রাতে বের হওয়া প্রতিবাদী মিছিল শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করেছে। ছিল পুলিশি নজরদারি।

সোমবার সন্ধ্যা থেকে রাস্তায় আলপনা শুরু হয়েছিল। মেদিনীপুরের কলেজ মোড়ে কৃষ্ণগোপাল চক্রবর্তীরা স্লোগান তুলছিলেন, ‘আমার বোনের রক্ত, হবে না কো ব্যর্থ।’ সোমা চৌধুরী চট্টরাজরা গান ধরছিলেন, ‘কারার ওই লৌহ কপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট, রক্ত জমাট শিকল পূজার পাষাণ বেদী...।’ রাস্তায় লেখা হয়, ‘বিচার চাই’, ‘আর কবে?’ রাতে মানববন্ধন হয়েছে। আগে-পরে স্লোগান উঠেছে, ‘আমরা কারা? প্রতিবাদী’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘উই ডিমান্ড জাস্টিস’। শিক্ষক কৃষ্ণগোপাল বলছিলেন, ‘‘এখানে কেউ ছাত্র নয়, শিক্ষক নয়, ডাক্তার নয়, ইঞ্জিনিয়ার নয়, সবাই জনগণ, সবাই প্রতিবাদী।’’ শিক্ষিকা সোমা বলছিলেন, ‘‘সবার প্রতিবাদের একটাই স্বর, জাস্টিস ফর আর জি কর।’’

বুধবার রাত ৯টা নাগাদ ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) ঝাড়গ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে রাত দখলের প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয় আইএমএ ভবন থেকে। চিকিৎসকদের পাশাপাশি অনেক সাধারণ মানুষ মিছিলে পা মেলান। তাঁদের হাতে ছিল মোমবাতি ও পোস্টার। ততক্ষণে পাঁচ মাথার মোড়ের দোকানগুলি আলো নিবিয়ে দিয়েছে। সেখানেও আগে থেকে জমায়েত ছিলেন বহু মানুষজন। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল নজরকাড়া। তাঁরা মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করে দেন। আইএমএ-এর মিছিলটি পাঁচ মাথা মোড়ে পৌঁছনোর পর মানব বন্ধন করা হয়। বক্তৃতা করেন ঝাড়গ্রাম শাখার সম্পাদক প্রণবরঞ্জন মজুমদার, সুদেষ্ণা ঘোষ, প্রদীপ সাউ, সুইটি পি কে প্রধান, মৌসুমি মুর্মু প্রমুখ। সমবেত মিছিলটি শিবমন্দির মোড় হয়ে এগিয়ে যায় উড়ালপুলের দিকে। উড়ালপুল জুড়ে দুই দিকে তৈরি হয় বিশাল মানব বন্ধন। সেখানেও সকলের হাতে ছিল মোমবাতি। কর্মসূচি শেষ হয় রাত ১২টায়।

বুধবার রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত ঘাটাল শহরে মানব বন্ধন পালন করে নাগরিক সমাজ। ছবি এঁকেও প্রতিবাদ করা হয়। এখানেও প্রতিবাদী নানা গান করা হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

midnapore Jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE