Advertisement
E-Paper

জবরদখলের ফাঁসে পদে পদে হোঁচট

স্টেশন থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নামতে না নামতেই হোঁচট খেলেন শেখ ফারুক। একেবারে স্টেশনের সিঁড়িতে উঠে এসেছে ফলের দোকান। কমলালেবু-আঙুর-শশায় পা পড়তে পড়তে সামলে নিলেন।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ০১:২৯
জবরদখল: পাঁশকুড়া স্টেশনের বাইরে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

জবরদখল: পাঁশকুড়া স্টেশনের বাইরে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

স্টেশন থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নামতে না নামতেই হোঁচট খেলেন শেখ ফারুক। একেবারে স্টেশনের সিঁড়িতে উঠে এসেছে ফলের দোকান। কমলালেবু-আঙুর-শশায় পা পড়তে পড়তে সামলে নিলেন। পাঁশকুড়ার রাধাবল্লভপুরের বাসিন্দা ফারুক বিরক্ত হয়ে বললেন, “পথ আটকে একের পর এক দোকান। এখানে চলাফেরা করাই তো দায়।”

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন পাঁশকুড়া। পূর্ব মেদিনীপুরের এই স্টেশন দিয়ে রোজ প্রায় ৩০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। স্টেশনের সামনে প্রায় ছ’হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে রেলের জমি জবদরদখল করে মাথা তুলেছে চা, তেলেভাজা, ফল, সব্জি, বিস্কুট-ঠান্ডা পানীয়ের প্রায় ১২০টি দোকান। দিন দিন জবরদখলের এলাকা বাড়ায় রাস্তা সঙ্কীর্ণ হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে (হাওড়া-জকপুর) প্যাসেঞ্জার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি অরূপরতন সাহা বলছিলেন, “স্টেশনের সামনেটা একেবারে ঘিঞ্জি হয়ে গিয়েছে। একফালি রাস্তা দিয়ে চলা যায় না।”

জবরদখলের এই অসুখ বেশ পুরনো। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকেই এই জটে ফেঁসে রয়েছে পাঁশকুড়ার স্টেশন সংলগ্ন এলাকা। রেলের অভিযানে লাভ হয়নি। উল্টে দোকান বেড়েছে। স্থানীয়দের বক্তব্য, বাম আমল থেকে তৃণমূল জমানা— শাসক দলের সমর্থনেই এই বেআইনি দোকানের রমরমা। রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক কুলদীপ তিওয়ারিরও বক্তব্য, ‘‘ওখানে আমরা দু’বার অভিযান চালিয়েছিলাম। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা না মেলায় তা বিফলে গিয়েছে।’’

গোটা এলাকা ফাঁকা করে স্টেশনে যাতায়াতের রাস্তা সম্প্রসারণ করা লক্ষ্য ছিল রেলের। অদূরেই রয়েছে পাইকারি সব্জি বাজার। রাতভর সেখানে ব্যবসা চলে। জবরদখল না থাকলে ওই সব্জি বাজারে মাল ওঠানো-নামানোতেও সমস্যা হত না। ফলে, ব্যবসার বহর বাড়ত, যা পুষ্ট করত এলাকার অর্থনীতিকে।

সমস্যা অজানা নয় পুরসভার। তবে তৃণমূল পরিচালিত পাঁশকুড়া পুরসভার পুরপ্রধান জাকিউর রহমান খানের বক্তব্য, “রেলের কাছে একটা জায়গা চাওয়া হয়েছিল। জায়গাটা পেলে পুরসভাই পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করত। কিন্তু ওই জায়গা লিজে দিতে রেল যে মোটা টাকা চেয়েছে তা পুরসভার পক্ষে দেওয়া অসম্ভব।”

জবরদখলকারীরাও সমস্যা মানছেন। পাঁশকুড়া বাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক ভীম সেতুয়ার কথায়, “সঙ্কীর্ণ রাস্তার দু’পাশে দোকান থাকলে সমস্যা তো হবেই। তবে পুনর্বাসন জরুরি।” স্টেশনের পাশে ফলের দোকান চালানো শ্রীকান্ত সাউও বলেন, “পুনর্বাসন না পেলে খাব কী?”

Panskura Station
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy