বিপদ: মাথা চাড়া দিয়েছে পার্থেনিয়াম। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
কাছেই বনমালী কলেজ। পাশে কৃষকবাজার। আশপাশে বসতিও রয়েছে। অথচ, এমন এলাকাতেই গিজগিজ করছে পার্থেনিয়াম!
ছবিটা পাঁশকুড়া শহরের। কোনও কোনও জায়গা তো পার্থেনিয়ামের জঙ্গল হয়ে গিয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ধীরে ধীরে থাবা বসাতে শুরু করেছে বিষাক্ত এই গাছ। অথচ, হেলদোল নেই পুরসভার। নিয়মিত আবর্জনা সাফাই হয় না বলেও অভিযোগ।
পার্থেনিয়াম গাছ স্বাস্থ্যের পক্ষে বেশ ক্ষতিকর। হাঁপানি, শ্বাসকষ্টের মতো রাগ ছড়ায়। তাও কেন পুরসভা উদাসীন? পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান জাকিউর রহমান খানের আশ্বাস, “শহরে পার্থেনিয়াম মুক্ত অভিযান চালানো হবে।” এক পুরকর্তার বক্তব্য, “শহরের বসতি এলাকায় আবর্জনা সাফাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনা হয়েছে। নিয়মিতই আবর্জনা সাফাই হয়। এ বার নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।”
আবর্জনা সমস্যা রয়েছে শহরের প্রায় সর্বত্রই। ভবানীপুর, পশ্চিমকল্লা, তিলন্দপুর প্রভৃতি এলাকার ভ্যাটগুলো থেকে আবর্জনা রাস্তায় নেমে আসে। সমস্যায় পড়েন পথচলতি মানুষ। তবে এ সবকে ছাপিয়ে চোখ রাঙাচ্ছে পার্থেনিয়াম সমস্যাই। শহরবাসীর বক্তব্য, পুর-প্রশাসন এই গাছ ছেঁটে ফেলার বিষয়ে উদ্যোগী না হলে পরিস্থিতি অচিরেই ভয়াবহ হয়ে উঠবে। পাঁশকুড়া শহরের ইতিউতি পার্থেনিয়াম গজিয়ে উঠছে।
জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, পার্থেনিয়ামের রেণু অতি সূক্ষ্ম। হাল্কাও। ফলে এটা সহজেই বায়ুমণ্ডলে ভেসে থাকতে পারে। হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগ ছড়ায়। পার্থেনিয়ামে নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়ামের সংযোজন ক্ষমতা বেশি হওয়ায় এরা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। পার্থেনিয়াম গাছ যে ক্ষতিকারক তা মানছেন জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তাও। তাঁর কথায়, “পার্থেনিয়াম গাছের ফুলের পাপড়ি বা কুঁড়ি উড়ে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে ঢুকলে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি বা বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই গাছের সংস্পর্শে এলে অনেকের মধ্যে মারাত্মক অ্যালার্জির উপসর্গও দেখা দেয়।”
পাঁশকুড়া থেকে ঘাটালগামী রাস্তার পাশেও মাথা চাড়া দিয়েছে পার্থেনিয়াম। এটি শহরের ব্যস্ততম এলাকা। রোজ প্রচুর মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। এক পুরকর্তা মানছেন, “আবর্জনা সাফাইয়ের সময়ে কখনও কখনও পার্থেনিয়াম মুক্ত অভিযান চালানো হয়েছে। তবে সব গাছ উপড়ে ফেলা যায়নি।” শহরের বাসিন্দা শুভঙ্কর জানার কথায়, “এখন শহরের যেখানে সেখানে পার্থেনিয়াম ছড়াচ্ছে। স্বাস্থ্যের পক্ষে খারাপ এই গাছের উচ্ছেদে উদ্যোগী হওয়ার কথা পুর-প্রশাসনের। কিন্তু তেমন হেলদোল চোখে পড়ে না।” জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, “পার্থেনিয়াম মানব শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। এই গাছের সংস্পর্শে বেশিদিন থাকলে শ্বাসকষ্টজনিত রোগ হয়। পুর- প্রশাসনের উচিত শহরে অভিযান চালিয়ে এই গাছ নির্মূল করা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy