Advertisement
E-Paper

জেলায় দুর্ভোগে নিত্যযাত্রীরা

অভিযোগ যে অমূলক নয়, তার প্রমাণ সমাবেশের একদিন আগে বুধবার থকেই রাস্তার বাস কমতে শুরু করছে। হলদিয়া, তমলুক শহরের অনেক জায়গাতেই বাসের জন্য দীর্ঘসময় ধরে অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে সাদারণ নিত্যযাত্রী থেকে স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৭ ০০:১৮
রাস্তায়-নেই: ঘাটাল বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছে বাস। —নিজস্ব চিত্র।

রাস্তায়-নেই: ঘাটাল বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছে বাস। —নিজস্ব চিত্র।

২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যাওয়ার জন্য তৃণমূলের প্রচার পর্ব শেষ। জেলার প্রতিটি শহর ও গ্রাম থেকে কর্মী-সমর্থকদের কলকাতার ওই সমাবেশে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতিও সারা। আর তাতেই প্রমাদ গুনতে শুরু করেছেন নিত্যযাত্রীরা। কারণ সমাবেশে দলের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে যেতে জেলা থেকে প্রায় অর্ধেক বাস তৃণমূলের নেতারা তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ।

অভিযোগ যে অমূলক নয়, তার প্রমাণ সমাবেশের একদিন আগে বুধবার থকেই রাস্তার বাস কমতে শুরু করছে। হলদিয়া, তমলুক শহরের অনেক জায়গাতেই বাসের জন্য দীর্ঘসময় ধরে অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে সাদারণ নিত্যযাত্রী থেকে স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের। বাড়িতে ফেরার জন্য নন্দকুমারে এ দিন বাস ধরবেন বলে দাঁড়িয়েছিলেন হলদিয়ার দুর্গাচকের বাসিন্দা বংশগোপাল পাণ্ডা। ঘড়িতে তখন বেলা ১২টা। জানালেন, ‘‘এক ঘণ্টার উপর দাঁড়িয়ে আছেন। এখনও বাস পাননি।’’ তাঁর মতোই আরও অনেকেই অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আছেন বলে জানালেন।

জেলার অধিকাংশ বাস মালিকরাও মানছেন, এতে যাত্রীদের অসুবিধা হবে। কিন্তু তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আমরা নিরুপায়।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘বাসের জন্য যদি যাতায়াতের কোনও সমস্যা হয়, জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

প্রশাসন ও বাস মালিক সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন সড়কে প্রতিদিন প্রায় ১৫০০টি বেসরকারি বাস চলে। ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের জন্য ৮০০র বেশি বাস বিভিন্ন রুট থেকে তুলে নেওয়া হবে। পূর্ব মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তথা নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার বেরা বলেন, ‘‘সমাবেশের জন্য ৮০০ বাস নেওয়া হবে। ফলে বাসের সংখ্যা কম থাকায় যাত্রীদের কিছুটা অসুবিধা হবে। তবে রাজ্যের মানুষ এ দিনের গুরুত্ব বোঝেন। আমরা যতটা সম্ভব বাস পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’’

হলদিয়া শহর তৃণমূলের শ্রমিক নেতা শিবনাথ সরকার বলেন, ‘‘হলদিয়ার শিল্পসংস্থাগুলি থেকেও শ্রমিক কর্মচারীরা এ বার কলকাতার সমাবেশে যাবেন। তবে সাধারণ মানুষের যাতে হয়রানি না হয় সেদিকে আমাদের নজর রয়েছে।’’

এমন পরিস্থিতি আগে কবে হয়েছে, মনে নেই ঘাটালের বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, ২১ জুলাইয়ের সভার দু’দিন আগেই বাস নিজেদের জিম্মায় রাখতে চলন্ত বাস থামিয়ে যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার থেকে ঘাটালের একাধিক রুটে বাস উধাও হয়ে গিয়েছে। ক্ষীরপাই, রামজীবনপুর, রাধানগর, চন্দ্রকোনা-সহ বিভিন্ন এলাকায় মাঝপথে যাত্রীদের নামিয়ে বাসে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে শাসক দলের পতাকা। ঘাটাল-চন্দ্রকোনা, ঘাটাল-আরামবাগ, বধর্মান, হলদিয়া-সহ বিভিন্ন রুটে বুধবার সকাল থেকে কোনও বাসই চলেনি। চড়া ভাড়া দিয়ে গাড়ি ভাড়া করে যাতায়াত করতে হয়েছে স্কুল-কলেজের পড়ুয়া, শিক্ষক, সরকারি কর্মী-সহ সাধারণ যাত্রীদের।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি মানছেন, “বেশিরভাগ বাসই তুলে নেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় বাস ভাড়া করা হয়েছে নিকটবর্তী স্টেশন পর্যন্ত আসতে। সার্বিক যা পরিস্থিতি তাতে পরিবহণ ব্যবস্থায় একটা প্রভাব পড়বেই। এই ক’দিন জেলায় খুব কম বাসই চলাচল করবে।’’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “গোটা জেলা জুড়েই একই অভিযোগ। এ বারের মতো সমস্যা অন্যবার হয়নি। কিন্তু আমরাও নিরুপায়।” যদিও দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “কেন এমন ঘটনা ঘটছে, আমরা দলীয় ভাবে তদন্ত করে দেখছি।”

transport Passengers Bus TMC Meeting
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy