Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Speedboat

Speed Boat-patient: স্পিড বোটেই হাসপাতালে

পরিবারের লোকজন, স্থানীয় ওষুধের দোকান থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার এনে তাঁকে অক্সিজেন দেন।

স্পিড বোটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সরস্বতীকে। নিজস্ব চিত্র

স্পিড বোটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সরস্বতীকে। নিজস্ব চিত্র

গোপাল পাত্র
পটাশপুর শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৫৪
Share: Save:

নদী তীরের গ্রাম। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে হঠাৎ হয়ে গিয়েছে দ্বীপের মতো! গ্রামের সব ঘরে জল না ঢুকলেও কেলেঘাইয়ের জলে ভেসেছে আশেপাশের রাস্তাঘাট। সেই জল ডিঙিয়ে বৃহস্পতিবার অসুস্থ মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে কালঘাম ছুটেছিল গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা নবকুমার বিশাইয়ের। খবর পেয়ে ত্রাতা হয়ে এগিয়ে আসে ব্লক প্রশাসন। স্পিড বোটে করে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয় শ্বাসকষ্টে ভোগা ওই কিশোরীকে।

পরিবার সূত্রের খবর, বছর পনেরোর সরস্বতী বিশাইয়ের এ দিন সকালে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। পরিবারের লোকজন, স্থানীয় ওষুধের দোকান থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার এনে তাঁকে অক্সিজেন দেন। কিন্তু বিকালে সরস্বতীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এদিকে, টানা বৃষ্টিতে পটাশপুরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গোপালপুর কেলেঘাই নদীর তীরবর্তী হওয়ায় গ্রামে আশেপাশের নীচু এলাকায় জল ঢুকেছে। যাতায়াতের প্রধান রাস্তায় প্রায় এক মানুষ জল বইছে। ওই গ্রামেরই পার্শ্ববর্তী খাড়ানের কয়েকটি জলবন্দি পরিবারকে এ দিন উদ্ধার করতে স্পিড বোটে এসেছিল ব্লক প্রশাসনের এক উদ্ধারকারীদল।

সরস্বতীর অবস্থার কথা শুনে তাঁরা বোট নিয়ে গ্রামে হাজির হন। ততক্ষণে কিশোরীর অসুস্থতা বেড়েছে। কোনও মতে তার নাকে অক্সিজেনের নল লাগিয়ে বোটে করে পটাশপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে রওনা দেন উদ্ধারকারীরা। তরুণীর বাবা নবকুমার বলেন, ‘‘মেয়ের মাঝে মধ্যে শ্বাসকষ্ট হয়। কোনও দিন এরকম বড় সমস্যা হয়নি। রাস্তাঘাট জলমগ্ন থাকায় হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স বা গাড়ি পাচ্ছিলাম না। পুলিশ এবং প্রশাসনকে জানালে ওরা স্পিড বোটে করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়।’’

অবশ্য, সরস্বতীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথ সুগম ছিল না প্রশাসনের উদ্ধারকারীদের। রাস্তায় নদীর জলের স্রোত তীব্র থাকায় তাঁরা ঘুরপথে সাতবাহিনী এবং ছাড়াদিঘি হয়ে হাসপাতালে যাওয়া চেষ্টা করেন। ওই তাড়াহুড়োর সময়ে হাসপাতালে থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে পরশুরামপুরের কাছে যান্ত্রিক গলযোগের কারণে আবার স্পিড বোটের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। শেষে হাল টেনে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীকে নিয়ে পৌঁছন উদ্ধারকারীরা।

পরে পটাশপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সরস্বতীকে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেও পৌঁছতেও সমস্যা দেখা যায়। রাস্তায় জলের স্তর বেশি থাকায় ছোট উচ্চতার অ্যাম্বুল্যাস যেতে পারেনি। শেষে বাসে করে ওই কিশোরীকে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। পটাশপুর-১ এর বিডিও পারিজাত রায় বলেন, ‘‘ওই কিশোরীর অসুস্থতার খবর পেয়ে স্থানীয় উদ্ধারকারী দলকে পাঠানো হয়। স্পিড বোটে করে তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Speedboat Corona patient
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE