ডেঙ্গি জ্বরে ক’দিন ধরেই কাবু ছিল শহর। খড়্গপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৭৫-এ পৌঁছেছিল। এ বার শহরের বাসিন্দা ডেঙ্গি আক্রান্ত এক মহিলার মৃত্যু হল।
শনিবার দুপুরে কলকাতার একটি মাল্টি স্পেশ্যালিটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান প্রিয়াঙ্কা সাউ (২৬)। তাঁর বাড়ি খড়্গপুরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের নিমপুরা এলাকায়। সপ্তাহখানেক ধরে জ্বর, মাথাব্যথা, পেটে যন্ত্রণার উপসর্গ ছিল তাঁর। গত রবিবার প্রিয়াঙ্কা ঝাড়গ্রামের চন্দ্রিতে বাপেরবাড়িতে যান। সেখানে চিকিৎসার পরেও শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার ওই হাসপাতালে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি।
খড়্গপুরের অন্য ওয়ার্ডের মতো ১২ নম্বর ওয়ার্ডেও ডেঙ্গি রোধে পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। এলাকার বাসিন্দা ভারতী কাঞ্জিলাল বলেন, “আমাদের এলাকা জঙ্গল-আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। নর্দমা, রাস্তায় জল জমে রয়েছে। অথচ পুরসভার থেকে ব্লিচিং, মশা মারার তেল ছড়ানো কিছুই করা হচ্ছে না। শুধু শুনছি অভিযান চলছে।” একই অভিযোগ শোনা গিয়েছে মৃত প্রিয়ঙ্কার শ্বশুর মনোরঞ্জন সাউয়ের কাছেও। তিনি বলেন, “আমার বাড়ির চারদিকেই জল জমে। জঙ্গল-আবর্জনাও রয়েছে। বৌমা মারা গেল। নাতির জ্বর এসেছে। কোথায় পুরসভার অভিযান!” স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সরিতা ঝা মানছেন, “ডেঙ্গিতেই ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। তবে আমরা নিয়মিত এলাকা পরিচ্ছন্ন করছি। মশা মারার তেল দেওয়া হচ্ছে।’’ একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, সমীক্ষকেরা প্রিয়াঙ্কাকে রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। ফলে, ওঁর মৃত্যুর পিছনে কিছুটা গাফিলতি রয়েছে।
জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন খড়্গপুর শহরের কয়েক হাজার রোগী। সকলেই জ্বরে আক্রান্ত। এখনও পর্যন্ত জেলার ১০০জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মধ্যে ৭৫জনই খড়্গপুর শহরের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। প্রিয়াঙ্কারও প্রাথমিক উপসর্গ ছিল জ্বর। এ দিন দুপুরে খড়্গপুরের বাড়িতে তাঁর মৃত্যুসংবাদ পৌঁছয়। মহিলার স্বামী সঞ্জিত সাউ-সহ পরিবারের অনেকেই কলকাতায় রয়েছেন। মৃতার শ্বশুর মনোরঞ্জন সাউ বলেন, “জ্বর থাকায় রবিবার বৌমা বাপেরবাড়িতে গিয়েছিল। সুস্থ না হওয়ায় কলকাতা নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও বৌমাকে বাঁচাতে পারলাম না।” প্রিয়াঙ্কার এক বছরের ছেলেও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “ডেঙ্গিতে ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে কি না সেটা রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত বলতে পারব না। তবে জ্বর হয়েছিল বলে শুনেছি। পুরসভার নজরদারি আরও বাড়াতে হবে।” পুরসভার দাবি, ডেঙ্গি অভিযান ঠিকমতোই চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy