বদল: এখনকার চেহারা। নিজস্ব চিত্র
কার্যত ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছিল যাত্রীদের জন্য তৈরি বিশ্রামাগারটি। ভিতরে শুধু যে নোংরা-আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা যেত তাই-ই নয়, সুযোগ বুঝে অনেকে শৌচকর্মও করতেন। দুর্গন্ধময় পরিবেশের কারণে বিশ্রামাগারটি এড়িয়েই চলতেন যাত্রীরা।
কিন্তু মঙ্গলবার, স্বাধীনতা দিবসের সকালে অনেকেই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন বিশ্রামাগারটি দেখে। একেবারে ভোল বদলে গিয়েছে। কোথায় নোংরা-আবর্জনা, দুর্গন্ধের পরিবেশ। বদলে ঝকঝক করছে সেটি। ভিতরের দেওয়ালে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রাণপুরুষদের ছবি ও বাণী দিয়ে। কে নেই সেই তালিকায়! মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু থেকে ভগৎ সিং, শহিদ ক্ষুদিরাম –সহ আরও অনেকে। রয়েছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও মহাকাশ বিজ্ঞানী এপিজে আব্দুল কালামের ছবি এবং বাণীও। এ ভাবেই স্বাধীনতা দিবস পাল করলেন হলদিয়ার নন্দরামপুরের ‘স্বদেশি’রা।
অভিনব উপায়ে এমন স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করায় তাপস সাহু , সুব্রত বেরার মতো শিল্পীদের প্রশংসায় এলাকার মানুষ। নন্দরামপুরের হলদিয়া– মেচেদা রাজ্য সড়কের উপরেই দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল যাত্রী বিশ্রামাগারটি। ১৪ অগস্ট রাত থেকেই সেটি সাজিয়ে তোলার কাজে নেমে পড়েছিলেন তাপস, সুব্রতরা। ক্লাবের তরফে শুভাশিস সাউ ও সভাপতি বাপ্পাদিত্য বেরা জানান, বিশ্রামাগারটি যাত্রীদের সুবিধার্থে তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তার পরিবর্তে নোংরা-আবর্জনা, শৌচকর্মের জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছিল এটা। দুর্গন্ধময় পরিবেশের জন্য বৃষ্টির মধ্যেও কেউ এখানে ঢুকতেন না। তাই তাঁরা এমন পরিকল্পনা করেন। যাত্রীদের ফের ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতে এই দিনটিকেই বেছে নেন তাঁরা। কারণ, তাঁরা মনে করেন এই দিনটি মানুষের জন্য কিছু করে দেখানোর দিন। তবে এ সবই তাঁরা করেছেন চাঁদা তুলে। ভাল উদ্যোগ শুনে এগিয়ে এসেছেন অনেকে। শুধু পরিষ্কার করাই নয়, বিশ্রামাগার সংলগ্ন শৌচাগারটিও ঝকঝকে করে তোলা হয়েছে। ব্যবস্থা করা হয়েছে বিশুদ্ধ পানীয়জলের।
বিশ্রামাগারটি ব্যবহারের উপযোগী হওয়ায় খুশি যাত্রীরাও। স্কুলপড়ুয়া গার্গী সামন্ত, গৌরাঙ্গ মাজির কথায়, ‘‘যা অবস্থা ছিল তাতে এমনটা ভাবাই যায় না। বিপ্লবীদের ছবি ও বাণী দেখে ভাল লাগছে।’’ স্থানীয় শিক্ষিকা সুপর্ণা পাল বলেন, ‘‘দারুণ উদ্যোগ। এভাবেও যে স্বাধীনতা দিবস পালন করা যায় তা দেখে ভাল লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy