Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ঐতিহ্যের ক্যাম্পাসে প্লাস্টিক বন্ধের পরিকল্পনা

যত্রতত্র পড়ে চিপস্‌-এর খালি প্যাকেট, প্লাস্টিকের গ্লাস, লজেন্স-চকোলেটের র‌্যাপার, বাতিল কাগজ, ভাঙা কলম। ঐতিহ্যের মেদিনীপুর কলেজ চত্বর সাফ রাখতে গিয়ে কার্যত হিমসিম খাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।

অপরিচ্ছন্ন: দেড়শো ছুঁইছুঁই মেদিনীপুর কলেজ চত্বরে বেশিরভাগ সময়ই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে প্লাস্টিক-সহ নানা আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র

অপরিচ্ছন্ন: দেড়শো ছুঁইছুঁই মেদিনীপুর কলেজ চত্বরে বেশিরভাগ সময়ই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে প্লাস্টিক-সহ নানা আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৬
Share: Save:

যত্রতত্র পড়ে চিপস্‌-এর খালি প্যাকেট, প্লাস্টিকের গ্লাস, লজেন্স-চকোলেটের র‌্যাপার, বাতিল কাগজ, ভাঙা কলম। ঐতিহ্যের মেদিনীপুর কলেজ চত্বর সাফ রাখতে গিয়ে কার্যত হিমসিম খাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। সেই কারণে এ বার কলেজ চত্বরে প্লাস্টিক-পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার ভাবনা শুরু হয়েছে। চত্বর নোংরা করলে জরিমানা দিতে হবে পড়ুয়াদেরই।

কলেজের এক সূত্রে খবর, স্বশাসিত এই কলেজের পরিচ্ছন্ন সংক্রান্ত উপ সমিতি এবং শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপ সমিতির বৈঠকে আলোচনার পরে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কলেজ অধ্যক্ষ গোপালচন্দ্র বেরা বলেন, “কলেজ চত্বর পরিবেশ বান্ধব করার জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”

১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত মেদিনীপুর কলেজ ছিল বাংলার বিপ্লবী আন্দোলনের আঁতুর ঘর। কলেজের প্রাক্তনীদের মধ্যে রয়েছেন দীনেশ গুপ্ত, প্রদ্যোত ভট্টাচার্য, বিমল দাশগুপ্ত, মৃগেন্দ্রনাথ দত্ত প্রমুখ। কলেজের বহু প্রাক্তনী দেশে-বিদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত। বছর পাঁচেক পরেই দেড়শো বছরে পদার্পণ করবে কলেজ।

কলেজ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এক লক্ষ বর্গফুট এলাকার কলেজ চত্বর পরিষ্কার করাটা মোটেই সহজ কাজ নয়। কলেজের স্থায়ী সাফাই কর্মীর পাঁচটি পদের মধ্যে তিনটি ফাঁকা রয়েছে। দু’জন স্থায়ী সাফাই কর্মী আবার অবসর নেওয়ার মুখে। সে জন্য স্থানীয় ঠিকাদার সংস্থাকে চত্বর সাফ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই সংস্থার সাফাই কর্মীরা পর্যায়ক্রমে চত্বর সাফ করেন।

কলেজ সূত্রে দাবি, কলেজের এনএসএস-এর চারটি ইউনিটের সদস্যরাও প্রতি শনিবার চত্বর পরিষ্কার করেন। বিভিন্ন গাছের পাতা ঝরেও অপরিষ্কার হয়ে যায় গোটা এলাকা। চত্বর ঝাঁট দেওয়ার সময় এক সাফাই কর্মী একরাশ বিরক্তি নিয়ে বলছিলেন, “এই পরিষ্কার করছি, একটু পরেই কিছু পড়ুয়া আবর্জনা ছড়িয়ে চত্বর নোংরা করে দিয়ে যাবে। সবাই সচেতন না হলে বার বার ঝাঁট দিয়েও চত্বর পরিষ্কার রাখা সম্ভব নয়।” ২০০৪ সালে ‘নাক’-এর (ন্যাশন্যাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল) বিচারে মেদিনীপুর কলেজ পূর্বাঞ্চলের মধ্যে ‘এ প্লাস’ গ্রেড কলেজের স্বীকৃতি পায়। ২০১২ সালে ‘নাক’-এর বিচারে ফের এই কলেজ সেরা হয়। ২০১৪ সালে ‘নাক’-এর সুপারিশে কলেজ স্বশাসিত হয়। স্নাতকোত্তর পাঠক্রমও চালু হয়েছে। কলেজের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের জন্য জমি দেখা হচ্ছে। আগামী সেপ্টেম্বরে ফের ‘নাক’-এর প্রতিনিধিরা কলেজ পরিদর্শনে আসবেন। তার আগে কলেজ চত্বর সাফসুতরো রাখার ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে।

ইতিমধ্যেই ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’-এর জন্য সাড়ে তিন লক্ষ টাকার ‘ওয়েস্ট টু কমপোস্ট’ যন্ত্র কেনা হয়েছে। কিন্তু ওই যন্ত্রে কেবলমাত্র জৈব আবর্জনাকে সারে পরিণত করা যাবে। সে জন্য কলেজ চত্বরে প্লাস্টিক-পলিথিন নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটতে চলেছেন কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Plastic Dirty Campus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE