ফাইল চিত্র।
পুলিশের উপর হামলা ও খুনের চেষ্টার একটি পুরনো মামলায় গ্রেফতার হলেন প্রাক্তন যুব তৃণমূল নেতা জলধর পণ্ডা। একই মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন সদ্য ‘বহিষ্কৃত’ প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি সিন্টু সাহা। সিন্টু বর্তমানে জেল হেফাজতে। জলধরের শাস্তির দাবিতে বিনপুরে পোস্টারও পড়েছে।
বিনপুর থানার কুই গ্রামের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের জলধর আগে ছিলেন বিনপুর-১ (লালগড়) ব্লক যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি। ২০২০ সালে শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ তন্ময় রায় যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতির হারান। একই কারণে জলধরকেও ব্লক যুব সহ-সভাপতির পদ খোয়াতে হয়। তৎকালীন তৃণমূলের মন্ত্রী শুভেন্দুর দলহীন জনসংযোগে জলধরকে দেখা যেত। পরে শুভেন্দুর সঙ্গে তন্ময় বিজেপিতে গেলেও জলধর তৃণমূলেই থেকে যান। তবে বিধানসভা ভোটে জলধরের নিজের বুথেই বিজেপি এগিয়ে ছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিজেপির দখলে থাকা বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী সদস্যদের ভাঙিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে তৃণমূল। তবে বিজেপি পরিচালিত বিনপুর পঞ্চায়েতে এখনও ভাঙন ধরাতে পারেনি শাসকদল।
গত বছর জুনে দলীয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়ে বনপ্রতি মন্ত্রী বিরবাহার উপস্থিতিতে জলধরের সদস্যপদ খারিজ করা হয়। জলধরের সঙ্গে বিরবাহার পরিবারের ভাল সম্পর্ক ছিল। বিরবাহার মা চুনিবালা হাঁসদাকে ‘দিদি’ ডাকেন জলধর। জলধরকে রাখি পরিয়েছিলেন ও ভাইফোঁটাও দিয়েছিলেন চুনিবালা। তবে লালগড় ব্লক তৃণমূল সভাপতি শ্যামল মাহাতো বলছেন, ‘‘জলধর তলে তলে বিজেপির হয়ে কাজ করছিল। সে জন্যই সদস্যপদ খারিজ করে বহিষ্কার করা হয়েছিল।’’ তবে বিজেপির বিনপুর মণ্ডল সভাপতি চন্দ্রশেখর প্রতিহারের দাবি, ‘‘জলধর বিধানসভা ভোটের সময়ে তৃণমূলের হয়ে কাজ করেছে। এখন তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার হয়েছে জলধর। জলধর স্পষ্টবাদী নেতা। জলধরকে মিথ্যা মামলায় জেলে রাখলে বাকিদের দুর্নীতি করতে সুবিধা হবে।’’
গত বছর বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পরে হাড়দায় তৃণমূল-বিজেপির ব্যাপক গোলমাল হয়। তার জেরে গত বছর ৪ মে সিন্টু হাড়দা পুলিশ ক্যাম্পের কাছে বাস আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। অবরোধ তুলতে গিয়ে সিন্টু বাহিনীর হাতে আক্রান্ত হয় পুলিশ। ওই ঘটনায় সিন্টু ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল পুলিশ। তাতে সিন্টুর সঙ্গে জলধরেরও নাম ছিল। তবে গত বছর কেউ গ্রেফতার হয়নি।
ক’দিন আগে দলীয় নেতা-কর্মীদের উপরে প্রাণঘাতী হামলার পরিকল্পনা করার অভিযোগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতর থেকে সিন্টুকে পদ ও দল থেকে বহিষ্কার করতে বলা হয়। তারপর সিন্টুকে ওই পুরনো মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই মামলাতেই শুক্রবার ধরা হয়েছে জলধরকে। শনিবার তাঁকে আদালতে তোলা হয়। বিচারক ৬ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy