Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Police Arrested Snatchers

ছিনতাইয়ের টোপেই জালে দুই ছিনতাইবাজ

পশ্চিম মেদিনীপুরে ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটেছিল ন’মাস আগে, চন্দ্রকোনা রোডে। রাস্তায় এক ব্যক্তির দেড় লক্ষ টাকা ছিনতাই হয়েছিল।

ঘটনার দিনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ।‌ বাইকে দুই দুষ্কৃতী।

ঘটনার দিনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ।‌ বাইকে দুই দুষ্কৃতী। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৫:২৯
Share: Save:

ছিনতাইয়ের তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছিল, এর পিছনে রয়েছে কোড়া গ্যাংয়ের দু’জন। মূল ডেরা বিহারের কাটিয়ার জেলার জোরারগঞ্জের কোড়ায়। তদন্তে ‘সিট’ গঠন করেছিল জেলা পুলিশ। দলটি বিহারেও গিয়েছিল। তবে কিছুতেই অভিযুক্তদের ধরা যাচ্ছিল না। শেষে ফাঁদ পাতে পুলিশ। ছিনতাইয়েরই ‘টোপ’ দিয়েই অবশেষে ধরা পড়েছে দুই ছিনতাইবাজ।

এ যেন সিনেমার দৃশ্য। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার মানছেন, ‘‘একটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওরা কোড়া গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত। ওই ছিনতাইয়ের তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছিল। দলটি বিহারের ওই এলাকায় গিয়েছিল। পরে তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনীয় কিছু পদক্ষেপকরা হয়েছে।’’

পশ্চিম মেদিনীপুরে ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটেছিল ন’মাস আগে, চন্দ্রকোনা রোডে। রাস্তায় এক ব্যক্তির দেড় লক্ষ টাকা ছিনতাই হয়েছিল। তিনি ব্যাগ নিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। দুরন্ত গতিতে বাইকে এসে দুষ্কৃতীরা ব্যাগটি ছিনতাই করে পালায়। তদন্তে নেমে ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। ফুটেজ দেখে দুই দুষ্কৃতীকে চিহ্ণিত করা হয়। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, এই দুষ্কৃতীদের ডেরা বিহারের কোড়ায়। এরপর ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে জেলা পুলিশ। দলে ছিলেন আরেক আইপিএস অফিসার। তাঁর বাড়ি বিহারে। তদন্তে তাঁর নেতৃত্বেই একটি দল বিহারে গিয়েছিল। তবে চেষ্টা করেও দুষ্কৃতীদের ধরা যাচ্ছিল না।

তবে পুলিশের দলটি খালি হাতে ফেরেনি। একটি ‘সোর্স’ তৈরি করে এসেছিল। পুলিশের এক সূত্রের ব্যাখ্যা, অন্ধকার জগতের খবর জোগাড়ে করতে কখনও কখনও দুষ্কৃতীর উপরেই ভরসা করতে হয়। তারাই হল ‘সোর্স’। এরপরই ছিনতাইয়ে জড়িতদের ধরতে ওই ‘সোর্স’ মারফৎ তাদের কাছে ছিনতাইয়েরই ‘টোপ’ দেওয়া হয়। বার্তা পাঠানো হয়, তাদের কায়দায় খড়্গপুরে ছিনতাইয়ের সুযোগ রয়েছে। ‘সোর্সে’র কথা মেনে খড়্গপুরে আসতে রাজি হয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। সম্প্রতি ওই দুই দুষ্কৃতী খড়্গপুরে এসে একটি হোটেলে উঠেছিল। ওত পেতে ছিল পুলিশ। হাতেনাতে দু’জনকেধরা হয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, শেষ পর্যন্ত আর উপায় না দেখেই এমন ফাঁদ পাতা হয়েছিল। ধৃতদের আদালতে হাজির করিয়ে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এই দু’জন নিশ্চয়ই আরও নানা জায়গায় দুষ্কর্ম করেছে? জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকারের জবাব, ‘‘ওদের ধরা হয়েছে খড়্গপুর থেকে। এরা আর কোথায় কোথায় গিয়ে ছিনতাই করেছে, তা জানার সব রকম চেষ্টা চলছে।’’ খবর, কোড়া বিহারের একটি গ্রামের নাম। সেখানে প্রায় তিনশো ঘর বাসিন্দা আছেন যাদের অনেকেই ‘লুটে’রা। এক সময়ে এরা ছোটখাটো চুরি করত। পরে ছিনতাইয়ে হাত পাকায়। ছিনতাই কী ভাবে করতে হয়, রীতিমতো তার প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় ওই গ্রামে। এক সময়ে এই গ্যাংয়ের কাজকর্ম শুধুমাত্র বিহারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। পরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE