Advertisement
E-Paper

বেআইনি পার্কিং বন্ধে পথে পুলিশ

কোথাও ডাঁই করা রয়েছে ইমারতি দ্রব্য, আবার কোথাও রাস্তার ধারেই পার্কিং করা রয়েছে লরি। ঘাটাল-চন্দ্রকোনা ও ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়কের ধারে এই চিত্র নিত্যদিনের। এর জেরে দুর্ঘটনাও ঘটে আকছার। দুর্ঘটনার পরে কিছুদিনের ধরপাক়ড়, ফের যে কে সেই। এই বিষয়ে আনন্দবাজারে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। তারপরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৬ ০১:১৫
রাস্তার উপর গাড়ি দাঁড় করাতে নিষেধ করছে পুলিশ। ঘাটালে কৌশিক সাঁতরার তোলা ছবি।

রাস্তার উপর গাড়ি দাঁড় করাতে নিষেধ করছে পুলিশ। ঘাটালে কৌশিক সাঁতরার তোলা ছবি।

কোথাও ডাঁই করা রয়েছে ইমারতি দ্রব্য, আবার কোথাও রাস্তার ধারেই পার্কিং করা রয়েছে লরি।

ঘাটাল-চন্দ্রকোনা ও ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়কের ধারে এই চিত্র নিত্যদিনের। এর জেরে দুর্ঘটনাও ঘটে আকছার। দুর্ঘটনার পরে কিছুদিনের ধরপাক়ড়, ফের যে কে সেই। এই বিষয়ে আনন্দবাজারে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। তারপরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। পরিস্থিতি বদলাতে সম্প্রতি ঘাটাল মহকুমাশাসকের দফতরে এক বৈঠক হয়। বৈঠকে পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিক ও বাস মালিকরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন ঘাটাল পুরসভার পুরপ্রধান ও বিধায়ক শঙ্কর দোলইও।

শহরকে যানজট মুক্ত করতে বেশ কয়েকটি বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। রাস্তার যেখানে সেখানে বেআইনি গাড়ি পার্কিং বন্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। রাস্তা দখল করে ইট, বালির মতো ইমারতি দ্রব্য ফেলে রাখা নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে। শুক্রবার থেকে মাইকের মাধ্যমে প্রচার শুরু হয়েছে। অভিযানে নেমেছে পুলিশও।

ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধান বলেন, “সাত দিনের মধ্যে রাস্তার ধার থেকে সমস্ত ইমারতি দ্রব্য সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রচার শুরু হয়েছে। শুক্রবার থেকেই যত্রতত্র পার্কিং বন্ধের জন্য পুলিশকে নজরদারি চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সাত দিনের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও একই পরিস্থতি থাকলে সংশ্লিষ্ট বাস-লরি মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর ইট-বালি সহ অনান্য সরঞ্জাম রাস্তায় পড়ে থাকলেই সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হবে।”

পুলিশ সূত্রে খবর, এখন শুধু মাইকের মাধ্যমে প্রচার চলছে। রাস্তার ধারে লরি-বাস দাঁড়িয়ে থাকলেই সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর রাস্তা দখল করে ইমারতি দ্রব্য পড়ে থাকতে দেখলে সংশ্লিষ্ট মালিককে ডেকে সেগুলি সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। সাত দিন পরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে মামলা শুরু করা হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ঘাটালের তৃণমূল বিধায়ক শঙ্কর দোলইয়েরও বক্তব্য, ‘‘শহরকে যানজট মুক্ত করতে এ বার সব রকম ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, দ্রুত ফল মিলবে।”

প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন বাস মালিকেরাও। ঘাটাল মহকুমা বাস মালিক সংগঠনের পক্ষে প্রভাত পান ও মোহন বাগ বলেন, “শুক্রবার সমস্ত বাস মালিকদের নিয়ে বৈঠক করে প্রশাসনের ওই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বার থেকে বেশিরভাগ বাসই শহরের দু’টি স্ট্যান্ডে রাখা হবে। বাকি বাস শহরের বাইরে কোনও ফাঁকা জায়গায় রাখার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা লরি মালিক সংগঠনের পক্ষে বাসুদেব সাউও বলেন, “যত্রতত্র লরি পার্কিং না করার বিষয়ে সব মালিকদের জানানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও আইন অমান্য করার জন্য প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে সংগঠন নাক গলাবে না।’’

এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে নিত্যদিনের যানজট থেকে মুক্তি মিলবে, আশায় শহরের বাসিন্দারা। ঘাটাল শহরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী গোপীনাথ হড় বলেন, “ঘাটাল শহরের রাস্তা এমনিতেই সঙ্কীর্ণ। তার উপরে রাস্তার ধারে বাস-লরি দাঁড়িয়ে থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটত। যানজটও ছিল নিত্যসঙ্গী। আশা করি, এ বার কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলবে। অন্তত সুস্থ ভাবে রাস্তায় যাতায়াত করা যাবে।”

ঘাটাল-পাঁশকুড়া রাস্তার নিমতলা থেকে ময়রাপুকুর মোড় পর্যন্ত অংশে নিয়মের তোয়াক্কা না করেই পথের দু’ধারে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে বাস-লরি। রাস্তার ধারে রয়েছে একাধিক গাড়ি মেরামতির গ্যারাজ। রাস্তার উপরেই গাড়ির ইঞ্জিন-সহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশের কাজ হয় বলে অভিযোগ। একইসঙ্গে, রাস্তা দখল করে ইট-বাসি-স্টোনচিপস্ রেখে দেওয়াও হত। ফলে সঙ্কীর্ণ রাস্তায় গাড়ি চলত ধীর গতিতে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনের মদতেই এতদিন গাড়ির চালক ও গ্যারাজ মালিকরা রাস্তা দখল করে রেখে পার্কিং সহ গাড়ির কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। ফলে কোনটা রাস্তা আর কোনটাই বা গ্যরাজ তা বোঝাই দায় হয়ে উঠেছিল। পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল দুর্ঘটনার সংখ্যাও।

এ বার ছবিটা বদলাবে, আশায় ঘাটালের বাসিন্দারা।

Strict Action illegal parking Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy