E-Paper

আবাসের সমীক্ষায় গরমিল, বাড়ি পেয়েছেন অযোগ্যরাও, কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টে অস্বস্তি

জানুয়ারিতে আবাস প্রকল্প নিয়ে ওঠা অভিযোগ যাচাইয়ে রাজ্যের দশটি জেলায় এসেছিল কেন্দ্রীয় দল। এর মধ্যে সাতটি জেলাতেই নানা ‘গরমিল’ ধরা পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৩ ০৬:৪২
অযোগ্যরা কি করে পেলেন বাড়ি, প্রশ্ন।

অযোগ্যরা কি করে পেলেন বাড়ি, প্রশ্ন। প্রতীকী চিত্র।

খোঁজ মিলেছে ‘অনিয়মে’র। আবাস যোজনার কাজকর্ম নিয়ে অভিযোগ গিয়েছিল কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে। অভিযোগ যাচাইয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরেও এসেছিল কেন্দ্রীয় দল। গিয়েছিল একাধিক ব্লকে। কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্ট এসেছে। রাজ্য হয়ে জেলায়। আবাস প্রকল্পে ‘গরমিলে’র উল্লেখ রয়েছে সেখানে। দলটির পর্যবেক্ষণ, ‘আবাস প্লাসে’র সমীক্ষা যথাযথভাবে হয়নি জেলায়। তালিকায় অযোগ্যদের নামও থেকে গিয়েছিল। রিপোর্টের প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক বলে প্রশাসনের এক সূত্রে খবর। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের অবশ্য দাবি, ‘‘রিপোর্টে তেমন কোনও বেনিয়মের উল্লেখ নেই।’’ ‘গরমিলে’র সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার সুপারিশ করা হয়েছে রিপোর্টে।

গত জানুয়ারিতে আবাস প্রকল্প নিয়ে ওঠা অভিযোগ যাচাইয়ে রাজ্যের দশটি জেলায় এসেছিল কেন্দ্রীয় দল। এর মধ্যে সাতটি জেলাতেই নানা ‘গরমিল’ ধরা পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ওই সাতটি জেলার মধ্যে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরও। রিপোর্টে পর্যালোচনার একটি অংশে উল্লেখ, এ জেলার এক এলাকার তিনজনের নাম তালিকায় থাকা নিয়ে অভিযোগ গিয়েছিল। পর্যবেক্ষণে দেখা গিয়েছে, দু’জনের ক্ষেত্রেই অভিযোগ সঠিক। ওই দু’জনের নাম আবাসের তালিকায় থাকা উচিত ছিল না। অর্থাৎ, ওই দু’জন সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাওয়ার যোগ্য নন। জেলার প্রশাসনিক সূত্রের অবশ্য দাবি, গোড়ায় তালিকায় থাকলেও যাচাইপর্বে ওই দু’জনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল। ওই দু’জনের নাম যে সংশোধিত তালিকায় নেই, তা কেন্দ্রীয় দল দেখেও গিয়েছিল। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সংশোধনমূলক পদক্ষেপ করা হয়েছিল। তখনই ওই দু’জনের নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছিল।’’ তিনটি অভিযোগের দু’টোই যথাযথ। অর্থাৎ, শতাংশের নিরিখে প্রায় ৬৬ শতাংশ অভিযোগই যথাযথ। ‘আবাস প্লাসে’র সমীক্ষা যথাযথভাবে হয়নি- এই পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় দলের আরও পর্যবেক্ষণ, যোজনার অর্থে নির্মিত বাড়িতে প্রকল্পের লোগো ছিল না। কোথাও বাড়ি ‘বাংলা আবাস যোজনা’য় নির্মিত বলে উল্লেখ ছিল।

কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্ট সংক্রান্ত চিঠি রাজ্যে এসেছে। রাজ্য থেকেই জেলাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। রিপোর্টের প্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, জানাতে হবে জেলাকে। পদক্ষেপে দেরি হলে, সংশ্লিষ্ট জেলা আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘এই রিপোর্ট তেমন কোনও অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণ করে না। কিছু অভিযোগের সত্যতা মিললেও, আগেই সেগুলি সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে।’’ রিপোর্টে উল্লেখিত ‘খামতি’র ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে, আশ্বাস তাঁর। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো- অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, ‘‘রিপোর্টে কী আছে, জানি না। তবে শুনেছি, কেন্দ্রীয় দলের সংশ্লিষ্ট রিপোর্ট কার্যত নির্বিষ! পর্যালোচনার সারাংশে সে রকম কিছু বেনিয়মের উল্লেখ নেই। কেন্দ্র অযথা গরিব লোকেদের বঞ্চিত করছে।’’ জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, ‘‘তৃণমূলের একটা পঞ্চায়েতও অভিযোগমুক্ত নয়। আবাসের তালিকা যে ত্রুটিমুক্ত নয়, তা কেন্দ্রীয় দলের পর্যবেক্ষণেই স্পষ্ট। প্রশাসনের উচিত, গরমিল, অনিয়মে সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত এফআইআর করা।’’

কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টের প্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হল, সে সংক্রান্ত রিপোর্ট শীঘ্রই জেলা পাঠিয়ে দেবে বলে প্রশাসনের এক সূত্রে খবর।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pradhan Mantri Awas Yojana midnapore PMAY

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy