সাক্ষাৎ: রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রণববাবুর সঙ্গে শুভকরানন্দরা। নিজস্ব চিত্র
রামকৃষ্ণ মিশনের পরিচালনায় উত্তরণের পথে এগোচ্ছে ঝাড়গ্রামে আদিবাসী পড়ুয়াদের আবাসিক স্কুল একলব্য। সে কথা জেনে এ বার আপ্লুত খোদ দেশের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। গত বুধবার নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে প্রণববাবুর সঙ্গে দেখা করে এসেছেন ‘একলব্য আদর্শ আবাসিক স্কুলে’র শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের একটি দল। মাত্র এক বছরে কীভাবে এই স্কুল ধাপে ধাপে পূর্ণতার পথে এগোচ্ছে, তার খুঁটিনাটি খোঁজ নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। ঝাড়গ্রামে এসে স্কুল পরিদর্শনের ইচ্ছাপ্রকাশও করেছেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন একলব্যের চার জন শিক্ষক ও একজন শিক্ষাকর্মী। নেতৃত্বে ছিলেন বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশনের গণমাধ্যম বিভাগের ভারপ্রাপ্ত স্বামী শুভকরানন্দ। একলব্য স্কুলের পড়ুয়াদের বিভিন্ন সাফল্যের ছবির অ্যালবাম রাষ্ট্রপতিকে দেন শুভকরানন্দরা। এ বারের উচ্চ মাধ্যমিকে সাঁওতালি বিভাগে একলব্যের ছাত্র উদয় মুর্মু রাজ্যের মধ্যে প্রথম হয়েছেন জেনে প্রণববাবু শিক্ষকদের বলেছেন, ‘আপনারা মানুষ গড়ার কাজ করছেন। আপনাদের স্কুল দেখতে যাব।’ এ কথা জানিয়ে শনিবার শুভকরানন্দ বলেন, “জঙ্গলমহলের একটি প্রত্যন্ত এলাকার স্কুল সম্পর্কে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রপ্রধান খোঁজখবর নিচ্ছেন, স্কুলের উন্নতির বিষয়ে চিন্তা করছেন, এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।”
গত ২৭ মে প্রণববাবুর ছেলে জঙ্গিপুরের সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ব্যক্তিগত সফরে এসে একলব্য স্কুল পরিদর্শনে এসেছিলেন। তিনিই বাবাকে এই স্কুলের কর্মকাণ্ডের কথা জানান। তারপর রাষ্ট্রপতি ঝাড়গ্রামের একলব্য স্কুল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী হন। অভিজিৎবাবুর ব্যবস্থাপনাতেই শুভকরানন্দের নেতৃত্বে একলব্যের শিক্ষক শুভদীপ বসু, অক্ষয় মাহাতো, মানবকুমার মানা, প্রশান্ত দাস ও শিক্ষাকর্মী প্রসূন বিশ্বাসরা রাষ্ট্রপতি ভবনে যান। স্কুলের বিভিন্ন সাফল্যের ছবি সংবলিত একটি অ্যালবাম রাষ্ট্রপতিকে উপহার দেন তাঁরা। স্বয়ং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে পেরে খুশি শুভদীপবাবু, মানববাবুরা। তাঁরা বলছিলেন, ‘‘এমন সুযোগ হবে কোনওদিন ভাবিনি। রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে নিজেদের স্কুলের কথা যখন জানাচ্ছিলাম, কেমন যেন স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছিল।’’
অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর ও আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের অর্থানুকুল্যে চলা একলব্য স্কুল বছর দেড়েক আগেও রীতিমতো বেহাল ছিল। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে এই স্কুলের দায়িত্ব নেয় বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন। স্কুলের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে আসেন স্বামী শুভকরানন্দ। তারপর সার্বিক ভাবে স্কুলের ছবিটা আমূল বদলে গিয়েছে। প্রতি ক্লাসে মেন্টর টিচার, স্কুলের নির্দিষ্ট সময়ের আগে-পরে বাড়তি ক্লাস, প্রতিটি বিভাগে আধুনিক পরীক্ষাগার, স্পোকেন ইংলিশ ও স্মার্ট ক্লাসের ব্যবস্থা হয়েছে, সাজানো হয়েছে স্কুল চত্বর। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ুয়ারা উল্লেখযোগ্য ফল করছে। ‘জগদীশ বসু ন্যাশন্যাল সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ’-এর নোডাল স্কুলও হয়েছে একলব্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy